Sunday, February 19, 2023

উপশমকারী চিকিৎসা



আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘায়ু বেঁচে থাকা ৩৯ তম প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। ২০১৫ সালে লিভারের ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তারপর থেকে ৯৮ বছর বয়সী নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মানুষটি বৃদ্ধ বয়সে নানা শারীরিক জটিলতায় নিয়ে হাসপাতালে আসা যাওয়ার মধ্যেই ছিলেন। গতকাল তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাড়িতে থেকেই উপশমকারী চিকিৎসা গ্রহণ করবেন।

হসপিস প্যালিয়েটিভ কেয়ারের (Hospice palliative care) সঠিক বাংলা করা কষ্টকর। তবে এই পদ্ধতিতে কোন রোগীর চিকিৎসার মাধ্যমে আর রোগ নিরাময়ের উপায় না থাকলে তখন সেই রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে রোগের যন্ত্রনা উপশমকারী চিকিৎসা দেয়া থাকে। বাড়ি বা চিকিৎসা কেন্দ্রে এই ধরনের চিকিৎসা সেবা দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে উন্নত দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়। পারিবারিক পরিবেশে উপশমকারী চিকিৎসায় দক্ষ চিকিৎসক ও নার্সের তত্ত্বাবধানে এই পদ্ধতিতে রোগীর মানসিক প্রশান্তির পাশাপাশি পরিবারের উপর চিকিৎসা ব্যয়ের বোঝাও লাঘব হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে এধরনের চিকিৎসায় হাসপাতালে নিবিড় চিকিৎসা নেয়া রোগীর চেয়েও বেশিদিন বেঁচে থাকেন। এধরনের চিকিৎসায় রোগ থেকে মুক্তি লাভের জন্য নয় বরং ব্যাথা কমানো, ঘুম বা রোগীর প্রশান্তির জন্য দরকারি ঔষধ ও সেবা দেয়া হয়ে থাকে। বয়সের ভারে ন্যুজ একজন মানুষের শেষ পর্যায়ের ক্যান্সার চিকিৎসা দিয়ে নিরাময় হয় না কখনো। কাজেই চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুসারে যে সব রোগীর ক্ষেত্রে মৃত্যু মোটামুটি নিশ্চিত তাদের ক্ষেত্রে ভেন্টিলেশনে আইসিইউতে অচেতন জীবনের চেয়ে বাড়িতে পরিবার পরিজন বেষ্টিত অবস্থায় মৃত্যু অনেক বেশি প্রশান্তিকর।

আমাদের দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এখনো প্যালিয়েটিভ কেয়ার বা উপশমকারী চিকিৎসা দেয়ার পদ্ধতি গড়ে উঠেনি। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও আর্থিক সঙ্গতি না থাকা সত্ত্বেও অনেক পরিবার চিকিৎসার নামে আইসিইউতে এধরনের রোগীর চিকিৎসা করাতে নিঃস হয়ে পড়ার অগুনিত ঘটনা ঘটছে। বিত্তবানদের ক্ষেত্রে আর্থিক অসুবিধা না হলেও পরিবারের সদস্যরা শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে ছোটাছুটি করতে গিয়ে চরম মানসিক চাপ ও কষ্টে ভুগে থাকেন। আক্রান্ত রোগীও জীবনের শেষ মুহূর্তে পরিবার পরিজন বেষ্টিত হয়ে প্রশান্তি সহকারে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার সুযোগটি থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন।

বাংলাদেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ার বা উপশমকারী চিকিৎসা সেবা দেয়ার ব্যবস্থা গড়ে তোলা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।

Friday, February 10, 2023

অকালে চুল পাকা


অল্পবয়সে অকালে চুল পেকে গেলে মনঃকষ্টে ভোগেন অনেকে। চুল পেকে যাওয়া মানুষের জীবনচক্রের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। জাতি-গোষ্ঠির ভিন্নতায় বিভিন্ন বয়সে চুল পাকা শুরু হয়। যেমন ককেশীয়দের ক্ষেত্রে ২০-২৫ বছর বয়সেই চুল পাকতে শুরু করে। আবার ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সাধারণত ৩০ বছর বয়সের পর এটি শুরু হয়। এই বয়সের আগে চুল পাকলে তাকে অকালপক্ব চুল (premature grey hair) বলা হয়। 

ত্বকের মেলানোসাইট নামক কোষ থেকে মেলানিন নামে রঞ্জকের ঘনত্বের উপর ত্বকের রং নির্ধারিত হয়ে থাকে। মেলানিনের ঘনত্ব বেশি হলে কালো এবং কম হলে সেই অনুযায়ী গায়ের রঙ অপেক্ষাকৃত ফর্সা হয়ে থাকে। চুল যেখান থেকে গজিয়ে থাকে ত্বকের সেই গোড়ার জায়গার মেলানিন উৎপাদন ক্ষমতার উপর চুলের রঙ নির্ধারিত হয়ে থাকে। কোন কারণে মেলানিন উৎপাদন ক্ষমতা কমে বা নষ্ট হয়ে গেলে চুল পাকতে শুরু করে। সাধারণত যেসব কারণে চুল পাকে, সেগুলো হলো,


◆বংশগত

চুল পাকার সঙ্গে জেনেটিক বা বংশগত সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্যই কারো কারো ক্ষেত্রে চুল অন্যদের তুলনায় আগে পাকা শুরু করে।

◆রোগ জনিত

থাইরয়েডের সমস্যা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জনিত রোগ, শ্বেতি, আ্যলার্জি, পরিপাকতন্ত্রের রোগ, রক্ত শুন্যতা, প্রোজেরিয়া ও প্যানজেরিয়া ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হলে কম বয়সে চুল পাকতে শুরু করে।

◆খাবার উপাদানের ঘাটতি জনিত

শরীরে ভিটামিন বি১২, বি ৬, বায়োটিন, ভিটামিন ডি৩, ভিটামিন ই, আয়রন ও কপারের ঘাটতির কারণে অকালে চুল পাকতে পারে।

◆ ঔষধ

কিছু ঔষধ যেমন ক্যান্সার চিকিৎসায় কেমোথেরাপিতে ব্যবহার করা ঔষধ, ম্যালেরিয়ার ঔষধ ইত্যাদির কারণে সাময়িকভাবে চুল পেকে যায়।

◆ দুশ্চিন্তা

অতিরিক্ত চিন্তা চুলের বৃদ্ধি ও গঠন প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলে বলে গবেষণায় বলা হয়েছে। এ ছাড়া যাঁরা অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধুমপান অকালে চুল পাকার কারণ হতে পারে।


●সমাধান

কোন রোগের কারণে চুল পাকতে শুরু করলে সেই রোগের চিকিৎসার মাধ্যমে চুল পাকা প্রতিরোধ করা যেতে পারে। বংশজনিত কারণে চুল পাকার প্রক্রিয়া প্রতিরোধ করা যায় না। খাবার উপাদানের ঘাটতি পুরণের জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। ফল ও শাক-সবজি খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম এবং মদ্যপান ও ধুমপান নিয়ন্ত্রণ বা পরিত্যাগ করতে হবে।

●চিকিৎসা

চুল পড়ে যাওয়ার কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা দেয়া হয়। সরাসরি চুলের গোড়ায় ষ্টেম সেল, গ্রোথ ফ্যাক্টর বা পিআরপি চিকিৎসা চুল পাকা রোধ করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে অনেকসময়‌।

মনে রাখবেন চুল পাকা মারাত্মক জীবনহানিকর কোন রোগ নয়। মূলত সৌন্দর্য বিচারে বেশিরভাগ মানুষ মন খারাপ করে থাকেন। চিকিৎসার মাধ্যমে অকালে চুল পেকে যাওয়া থেকে পরিত্রাণ না পেলে আত্মবিশ্বাসী হয়ে দৈনন্দিন জীবনযাপন করার চেষ্টা করুন। দরকার হলে পছন্দ মতো চুলে রঙ ব্যবহার করতে পারেন।

দ্য গ্রেট লন্ডন ফায়ার

১৬৬৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ সেপ্টেম্বর এক বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে সিটি অফ লন্ডন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল, যা ইতিহাসে 'দ্য গ্রেট লন্ডন ...