Thursday, May 1, 2025

খোসপাঁচড়া (Scabies)

 এবছর অনেকটা মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে স্ক্যাবিস (scabies) বা খোসপাঁচড়া। এটি একটি প্যারাসাইটিক বা পরজীবীজনিত অত্যন্ত ছোঁয়াচে চর্মরোগ। সারকোপটিস স্ক্যাবিয়াই (Sarcoptes scabiei) নামক পরজীবীর সংক্রমণে স্ক্যাবিস হয়ে থাকে। আবালবৃদ্ধবনিতা যে কেউ স্ক্যাবিস আক্রান্ত হতে পারেন।

কিভাবে ছড়ায় 

স্ক্যাবিস আক্রান্ত কারো সরাসরি সংস্পর্শ, সংক্রমিত ব্যক্তির জামা-কাপড়, বিছানা, তোয়ালেসহ ব্যবহৃত জিনিসপত্রের মাধ্যমে স্ক্যাবিসের পরজীবী ছড়ায়। 

পরিবার, হোস্টেল, মেসে কেউ একজন আক্রান্ত হলে বাকি সদস্যরাও আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকেন। অপরিচ্ছন্ন, ঘিঞ্জি, ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশ, বস্তি এলাকা, হোস্টেল, ডরমিটরি, মেস যেখানে অনেকে একসঙ্গে থাকেন সেখানে স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া খুব দ্রুত এবং সহজে ছড়ায়।


লক্ষণ কি?

পরজীবী মাইট ত্বকের বহিরাবরণ (এপিডার্মিস) ভেদ করে চামড়ার নিচে প্রবেশ করে, ফলে তীব্র চুলকানি ও চামড়ার প্রদাহ সৃষ্টি হয়।

•সারা শরীর বিশেষ করে আঙুলের ফাঁকে, কবজি, কনুই, বুকের নিচে, বগলের নিচে, পেটে, নাভির চারপাশে, পায়ের দুই পাশে চুলকানি বেশি অনুভূত হয়। চুলকানি রাতে বেশি হয়।

•আক্রান্ত স্থানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র র‌্যাশ বা ফুসকুঁড়ি হয়। সঠিক চিকিৎসা না হলে চুলকানির কারণে একসময় জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়ে যায়।

•রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, অনেক বেশি বয়স, কোনো রোগের কারণে দীর্ঘদিন বিছানায়, এইচআইভি আক্রান্তের মধ্যে নরওয়েজিয়ান স্ক্যাবিস বা ক্রাস্টেড স্ক্যাবিস নামে এক ধরনের স্ক্যাবিস দেখা যায়। এই ধরনের স্ক্যাবিস আক্রান্ত হলে স্কেলিং বা চামড়া উঠতে থাকে, এবং চামড়ার স্তর জমে জমে পুরু হয়ে যায়।

জটিলতা

√সঠিক সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা না হলে স্ক্যাবিসের কারণে কিডনিতে জটিলতা দেখা দিতে পারে।

√অনুজীব সংক্রমণের ফলে শরীরে ব্যাথা, জ্বর অনূভুত হতে পারে। আক্রান্ত স্থানে ঘা হয়ে যায়।

প্রতিরোধ 

√পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে হবে। নিয়মিত গোসল করতে হবে। 

√স্ক্যাবিস আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে। সংক্রমিত ব্যক্তির বিছানা, তোয়ালে, পোশাক ও ব্যবহৃত যে কোন জিনিস ব্যবহার করা যাবে না। স্ক্যাবিস আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র আলাদা করে দিতে হবে। 

√ ঘিঞ্জি ঘনবসতিপূর্ণ, সংক্রমণপ্রবণ এলাকায় বাড়তি সতর্কতা মেনে চলতে এবং প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

√পরিবারের কেউ সংক্রমিত হলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নিতে হবে। লক্ষণ না থাকলেও পরিবারের বাকি সবার চিকিৎসা নিতে হবে।

চিকিৎসা 

লক্ষণ ও আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থাভেদে স্ক্যাবিসের নানা ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। সাধারণত গায়ে মাখা ক্রিম, লোশন এবং খাবার ঔষধ দেয়া হয়ে থাকে। এটির চিকিৎসা খুব সহজ হলেও নিরাময় পেতে চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুসরণ করে সঠিকভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করার বিকল্প নেই। সঠিক নিয়মে ও নির্ধারিত সময় পর্যন্ত চিকিৎসা না নিলে রোগ পুনরায় ফিরে আসতে পারে।

আক্রান্ত হলে যতো দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

#health #disease #infection #treatment #doctor #trend #healthylifestyle #healthyliving #MRKR #scabies

No comments:

বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ: জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক এক হুমকি!

 🧬অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের পর থেকে মানবসভ্যতা যেন এক নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। আগে যেসব সংক্রমণে মানুষ মৃত্যুবরণ করত, সেগুলো অ্যান্টিবায়ো...