পার্সিদের কাছে তিনি পিতা এবং ব্যাবিলনীয়দের কাছে মুক্তিদাতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। মানব সভ্যতার ইতিহাসে শাসনব্যবস্থা, সমাজ সংস্কার, মানবাধিকার, রাজনীতি ও বিশ্বাসের ক্ষেত্রে তিনি যে প্রভাব রেখে গিয়েছেন তা পৃথিবীর অন্য কেউ পারেনি। বর্তমান ইরানের জাতিসত্তার ভিত্তি তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তিনি একমাত্র অ-ইহুদি ব্যক্তিত্ব, যাকে বাইবেলে মেসিয়াহ বা স্রষ্টার প্রতিশ্রুত প্রতিনিধি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মুসলিম ধর্মালম্বীদের কেউ কেউ তাঁকে কোরআন শরীফে বর্ণিত যুল কারনাইন বলে দাবি করে থাকে। তার গুণে মুগ্ধ ছিলেন স্বয়ং #আলেকজান্ডার দি গ্রেট, যিনি নিজের উপরে তাঁকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে স্থান দিয়েছেন। তিনি পারস্যের আকিমেনিড সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন (যেটি ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া হয়ে ভারত উপমহাদেশের সিন্ধু উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল এবং পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য ছিল)। তিনি শুধু একজন যুদ্ধজয়ী বীর ছিলেন না, বরং একজন দক্ষ মহান শাসক হিসেবে স্বীকৃত। কোন রাজ্য বিজয়ের পর সেখানকার প্রজাদের তিনি তাদের নিজেদের ধর্ম ও সংস্কৃতি অনুসরণে পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। প্রজাদের তিনি সন্তানের মতো স্নেহপূর্ণ আচরণ করতেন, যার কারণে তাদের কাছে তিনি পিতা হিসেবে সম্মানিত ছিলেন। ব্যবিলন জয় করে সেখানে আটক ইহুদিদের মুক্ত করে দিয়েছিলেন তিনি। তিনি প্রজাদের প্রতি যে আচরণ করতেন সেটিই ইতিহাসে মানবাধিকারের প্রথম পাঠ হিসেবে United Nations কর্তৃক স্বীকৃত।
বিশাল সাম্রাজ্য কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ না করে তিনি রাজ্য বিভক্তির মাধ্যমে স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণা পত্র প্রণয়ন সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। তিনিই সর্বপ্রথম পোষ্টাল সার্ভিস প্রবর্তন করেছিলেন। বিজ্ঞান ও স্থাপত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তিনি। #পাসারগেদে নামে পরিকল্পিত রাজধানী গড়ে তুলেছেন, যেটি এখন ইরানে মানবসভ্যতার ঐতিহ্য হিসেবে UNESCO কর্তৃক সংরক্ষিত।
#সাইরাস দি গ্রেট এর জন্মতারিখ ও ধর্ম পরিচয় জানা যায় নি। তিনি পার্সীয়ান সাম্রাজ্যের আনসানে খৃষ্টপূর্ব ৬০০ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন বলে ধারণা করা হয়। খৃষ্টপূর্ব ৫৫৯ থেকে ৫৩০ সাল পর্যন্ত তিনি আকিমেনিড সম্রাট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
No comments:
Post a Comment