Wednesday, April 13, 2022

চৈত্র সংক্রান্তি/বৈসাবি


আজ চৈত্র মাসের শেষ দিন 'চৈত্র সংক্রান্তি'। বাংলা সন ১৪২৮ বিদায় নেবে, আসবে নতুন বছর ১৪২৯।

চৈত্র সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসে লোকউৎসব। বাংলা সনের শেষ দিনটিকে ঘিরে শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে এই দিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্ম করে থাকে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে প্রধানত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ চড়ক পুজা, বেসম পুজা, শাকান্ন উৎসব, নীল উৎসব, ইত্যাদি নানা আয়োজনে পালন করে থাকে।
চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব ছিল #চড়ক পুজা এবং মেলা। বৈশাখের উদ্দীপনায় চাপা পড়ে গেলেও গ্রামবাংলায় একসময় চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে আচার অনুষ্ঠানের অন্ত ছিল না। সারারাত ধরে চলতো কীর্তন, গৃহিণীরা সংক্রান্তি উপলক্ষে ঘরদোর লেপা-পোছা করতেন। সংক্রান্তি উপলক্ষে গৃহস্থ নারীরা মাসজুড়ে ব্রত পালন করতেন স্বামী, সংসার এবং ফসলের শুভ কামনা করে। চৈত্র সংক্রান্তির মেলা উপলক্ষে গ্রামাঞ্চলের গৃহস্থরা মেয়ে-জামাইকে সমাদর করে বাড়ি নিয়ে আসতেন। অবস্থা সম্পন্ন গৃহস্থরা সকলকে নতুন জামাকাপড় উপহার দিতেন এবং হরেক রকম খাবার-দাবারের আয়োজন করা হতো।
পুরনো বছরের বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণ করা উপলক্ষে উপজাতীয়রা তিন দিনব্যাপী বর্ষবরণ উৎসব সেই প্রাচীনকাল থেকে পালন করে আসছে। চাকমারা #বিজু', মারমারা #সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরারা #বৈসু বলে অভিহিত করলেও পুরো পার্বত্য জেলায় তা #বৈসাবি নামেই পরিচিত। বৈসাবি অহিংসার প্রতীক, বন্ধুত্বের প্রতীক এবং মৈত্রীর সুদৃঢ় বন্ধন।
'

বৈসাবির প্রথম অক্ষর 'বৈ' দিয়ে, বৈশাখী বলা যেতে পারে। বৈ+সা+বি=বৈসাবি অর্থাৎ 'বৈ' মানে 'বৈসু'_ এটি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ভাষা। 'সা' মানে 'সাংগ্রাই', এটি মারমা সম্প্রদায়ের ভাষা। 'বি' মানে বিজু, এটি চাকমা সম্প্রদায়ের ভাষা। সুতরাং বছরের প্রথম দিনকে ত্রিপুরা সম্প্রদায় 'বৈসু', মারমা সম্প্রদায় 'সাংগ্রাই' এবং চাকমা সম্প্রদায় 'বিজু' নামে অভিহিত করে থাকে। তিন সম্প্রদায়ের উৎসবের আদ্যাক্ষর দিয়ে গঠিত হয়েছে 'বৈসাবি'।

No comments:

পৃথিবীর দীর্ঘতম রেলভ্রমণ

 ইউরোপের পর্তুগাল থেকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সিঙ্গাপুর পর্যন্ত রেলভ্রমণ বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলযাত্রা হিসেবে পরিচিত। নানা ধরনের স...