Wednesday, February 26, 2025

স্বাস্থ্যসেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence - AI) বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিপ্লব ঘটাচ্ছে। এই প্রযুক্তি রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা পরিকল্পনা, ওষুধ আবিষ্কার, রোগীর সেবা এবং গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যদিও এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তবে ভবিষ্যতে গবেষণা ও প্রযুক্তির অগ্রগতির মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে। AI প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নত ও সাশ্রয়ী হয়ে উঠবে।

রোগ নির্ণয়ে AI এর ভূমিকা

AI রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে দ্রুত ও নির্ভুল ফলাফল দিতে পারে। বিশেষ করে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে AI গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি চিত্র থেকে ক্যান্সার, টিউমার বা অন্য রোগ শনাক্ত করা যায় AI এর সহায়তায়। মাইক্রোস্কোপিক ছবি বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন রোগ নির্ণয় করতে পারে AI রোগীর পূর্বের চিকিৎসা তথ্য ব্যবহার করে হৃদরোগ বা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি মূল্যায়ন করা সম্ভব এ আইয়ের মাধ্যমে।

চিকিৎসা পরিকল্পনা

এআই রোগীর স্বাস্থ্য তথ্য বিশ্লেষণ করে রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যক্তিগত চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করতে পারে। রোগীর জিনগত তথ্যের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট চিকিৎসা সেবা পরিকল্পনা করা যায় এই আইয়ের সাহায্য নিয়ে। রোগীর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী সঠিক ওষুধের ডোজ নির্ধারণ করতেও সহায়তা করে এআই।



রোগীর যত্ন ও সেবা

রোগীর সাধারণ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম এআই। AI-ভিত্তিক ডিভাইস রোগীর রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন এবং অন্যান্য শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পারে।

রোগীর পূর্বের তথ্য বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতে কী ধরনের রোগ হতে পারে সেটির পূর্বাভাস দেয়া যায় এআই ব্যবহার করে।

ওষুধ উদ্ভাবন

ওষুধ আবিষ্কারের প্রক্রিয়া সাধারণত সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। AI এই প্রক্রিয়াকে দ্রুত ও কার্যকর করতে সাহায্য করে। যেমন নতুন রাসায়নিক যৌগের নকশা তৈরি করা। ওষুধের কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পূর্বাভাস দেওয়া। ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য উপযুক্ত রোগী নির্বাচন ইত্যাদি।

গবেষণা

জিনগত গবেষণা, মহামারীর পূর্বাভাস এবং মেডিকেল ডেটা বিশ্লেষণে ভুমিকা রাখতে পারে এআই।

দ্রুত এবং নির্ভুল রোগ নির্ণয়, খরচ কমানো, চিকিৎসার গুণগত মান উন্নয়ন ও রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণে বর্তমানে ভূমিকা রাখছে এআই। যদিও তথ্যের গোপনীয়তা, ভুল রোগ নির্ণয়, নৈতিকতার প্রশ্ন ও হ্যাকিং ঝুঁকি রয়েছে এআই ব্যবহার করার ক্ষেত্রে।

#trend #AI #health #ArtificialIntelligence #BMW

Monday, February 24, 2025

চা এর ইতিবৃত্ত এবং ব্রিটিশ চৌর্যবৃত্তি

বর্তমানে চা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়। প্রতিদিন প্রায় ৫ বিলিয়ন কাপ চা পান করে বিশ্বের মানুষ। সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদন হয় চিনে, পাশাপাশি ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া এবং জাপানসহ অনেক দেশেই চা চাষ হয়। সবুজ চা, কালো চা, উলং চা, হোয়াইট চা ইত্যাদি নানা ধরনের চা রয়েছে। মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হিসেবে বিবেচিত হয় চা।

প্রায় ৫ হাজার বছর আগে (২৭৩৭ খ্রিস্টপূর্ব) চীনের সম্রাট শেন নুং এর সময় চায়ের আবিষ্কার হয় বলে মনে করা হয়। কাহিনী অনুযায়ী, একদিন সম্রাট গরম পানি ফুটানোর সময় বাতাসে উড়ে আসা কিছু গাছের পাতা পানিতে পড়ে যায়, যার ফলে পানি সুগন্ধি ও সতেজ স্বাদযুক্ত হয়ে ওঠে। এই পাতা ছিল Camellia sinensis গাছের, যা এখন "চা" নামে পরিচিত।প্রথমদিকে চা ঔষধি পানীয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। চীনে তাং রাজবংশ (৬১৮-৯০৭ খ্রি.) এবং সাং রাজবংশ (৯৬০-১২৭৯ খ্রি.) এর সময় চা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

চীনের বাইরে চা প্রথম ছড়ায় জাপানে। ৯ম শতাব্দীতে জাপানি বৌদ্ধ ভিক্ষুরা জাপানে এটি নিয়ে আসে। জাপানে "চা সংস্কৃতি" গড়ে ওঠে এবং চা অনুষ্ঠান (Tea Ceremony) বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৬শ শতাব্দীতে পর্তুগিজ নাবিকরা চীনের সাথে বাণিজ্য শুরু করলে চা সম্পর্কে ইউরোপীয়রা জানতে পারে। ১৭শ শতাব্দীতে ডাচ ব্যবসায়ীরা ইউরোপে চা নিয়ে আসে এবং ধীরে ধীরে ইংল্যান্ডেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ইংল্যান্ডে ১৮শ শতাব্দীতে "অফিসিয়াল চায়ের সময়" প্রচলিত হয় এবং চা একটি সামাজিক ঐতিহ্যে পরিণত হয়।

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৮শ শতাব্দীতে ভারতে চা চাষ শুরু করে। আসাম ও দার্জিলিং অঞ্চলে চায়ের উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ১৮৫৭ সালে সিলেটে মালনিছড়া চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়, যা বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো চা বাগান।


ব্রিটিশরা মূলত চীন থেকে চা সম্পর্কিত জ্ঞান এবং চারা চুরি করে ভারতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করে। এটি ছিল একধরনের শিল্প গুপ্তচরবৃত্তি (Industrial Espionage), যা ইতিহাসে খুবই বিখ্যাত। ১৮শ এবং ১৯শ শতকে, চীন ছিল পৃথিবীর একমাত্র চা উৎপাদনকারী দেশ। ব্রিটিশরা চা আমদানি করত। তবে চীনের সাথে তাদের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল, কারণ ব্রিটিশদের কাছে এমন কিছু ছিল না যা চীন নিতে আগ্রহী ছিল। পরে ব্রিটিশরা চীনে আফিম বিক্রি করা শুরু করে, যা চীনে আসক্তির মহামারী সৃষ্টি করে। ইতিহাস খ্যাত আফিম যুদ্ধের (Opium Wars) কারণ হয়।

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি চা উৎপাদনে চীনের একচ্ছত্র আধিপত্য ভাঙার জন্য ১৮৪৮ সালে স্কটিশ উদ্ভিদবিদ ও গুপ্তচর রবার্ট ফরচুন (Robert Fortune) কে নিয়োগ দেয়। চীনের চা উৎপাদন পদ্ধতি শেখা এবং গোপনে চা গাছের চারা ও বীজ সংগ্রহ করার দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। তিনি চা প্রক্রিয়াজাতকরণের গোপন কৌশল এবং চীনের উন্নত চা তৈরির পদ্ধতি ব্রিটিশদের কাছে নিয়ে আসেন। ব্রিটিশ ভারতে চা চাষের শুরু এই সফল চৌর্যবৃত্তির ফলে। তারা চা রপ্তানি শুরু করে একসময়, বলা যায় ব্রিটিশরাই বিশ্বব্যাপী চা জনপ্রিয় করে তুলেছিল।

Monday, February 17, 2025

হাত ও পায়ের তালুর অতিরিক্ত ঘাম

কেউ কেউ অন্যদের তুলনায় বেশি ঘর্মাক্ত হয়ে থাকেন। মানুষের ত্বকে ঘর্মগ্রন্থী (sweat gland) থাকে, যা আবহাওয়ার তাপমাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কম বা বেশি ঘাম তৈরি সমন্বয় করে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।  

কিছু কারণে যেমন পারকিনসন্স ডিজিজ, থাইরয়েড সমস্যা, ডায়াবেটিস, জ্বর, শরীরে গ্লুকোজের স্বল্পতা, নারীর মেনোপোজের কারণে ঘাম বেড়ে যায়। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় (চা,কফি) ও অ্যালকোহল পান করলে ঘাম বেশি হতে পারে।

বে সমস্ত শরীরে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি ছাড়াও নির্দিষ্ট কিছু স্থানে ঘাম বেশি হতে পারে। হাত ও পায়ের তালু অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া তেমনি একটি সমস্যা।


কি কারণে হয়

মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, স্নায়বিক উত্তেজনা, বংশগত বা ভিটামিনের অভাবে অতিরিক্ত হাত ও পায়ের তালু ঘামতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন কারণ নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। 

চিকিৎসা কি

হাত ও পায়ের তালু ঘামার চিকিৎসা আশাব্যঞ্জক নয়। তবে কয়েক ধরনের চিকিৎসা দিয়ে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যায়,

•হাত ও পায়ের তালুতে ব্যবহারের জন্য লোশন বা ক্রিম, 

•বিশেষ ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্র দিয়ে হাত ও পায়ের তালুতে সেঁক দেয়া,

•বটিউলিনিয়াম টক্সিন ইনজেকশন দিয়ে, এবং 

•স্নায়ুর বিশেষ ধরনের সার্জারি 


মনে রাখবেন অস্বস্তিকর হলেও হাত ও পায়ের তালু ঘামা জীবনহানিকর মারাত্মক কোন শারীরিক সমস্যা নয়। কারণ বের করে উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলেও মানসিকভাবে মানিয়ে নিয়ে দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাপন করার চেষ্টা করার বিকল্প নেই।


PayPal মাফিয়া

PayPal মাফিয়া (PayPal Mafia) হচ্ছে একদল উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তিবিদ, যারা ২০০০ সালের শুরুতে PayPal-এ একসাথে কাজ করেছিলেন এবং পরে সিলিকন ভ্যাল...