Tuesday, September 24, 2024

সিনসিনাটি বেঙ্গল

আমেরিকায় সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে আমেরিকান 🏈। রাগবি 🏉 আর ফুটবলের ⚽ সমন্বয়ে এই খেলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছিল ১৮৬৯ সালে। আমেরিকান ফুটবল লীগের একটি জনপ্রিয় দল হচ্ছে Cincinnati Bengals, বাংলাদেশের নাম জড়িয়ে রয়েছে এই দলটির সঙ্গে।

ফ্লয়েড-ওয়েলস নামে একটি কোম্পানি ১৮৭০ সাল থেকে গ্যাস ষ্টোভ তৈরি করতো। এটির শক্তিমত্তা প্রচারে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের 🐅 ছবি হিসেবে ব্যবহার করা হতো এবং বেঙ্গল নাম দেয়া হয়েছিল।

আমেরিকান ফুটবলে সিনসিনাটি দলটি ১৯৩৭ সালে যাত্রা শুরু করে। এটির প্রতিষ্ঠাতা #হল_পেনিংটন দলটির জন্য যুৎসই একটি নাম খুঁজছিলেন। একদিন রান্নাঘরে কফি খাওয়ার সময় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের লোগো সম্বলিত তার মায়ের গ্যাস ষ্টোভটির দিকে নজর পড়ে যায়। মুহুর্তেই তিনি ক্ষিপ্রতার প্রতীক এই বাঘের নামটি সিনসিনাটির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে দলের নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।

#BMW #AmericanFootball #RoyalBengalTiger #Photography #Trends

 

Wednesday, August 28, 2024

বন্যায় ত্বকের রোগ

 বন্যা চলাকালীন ও বন্যা পরবর্তী সয়য় অন্যান্য রোগের পাশাপাশি ত্বকের নানা সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন বন্যা কবলিত এলাকায় বসবাস করা মানুষ। বন্যা পরবর্তী সময়ে সাধারণত সংক্রামক নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়। তবে ত্বকেও নানা রোগ দেখা দিতে পারে। শিশুর ত্বক বেশি সংবেদনশীল হওয়ার কারনে তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে যে কোন বয়সীরাই আক্রান্ত হতে পারেন। বন্যায় ত্বকের যে সব সমস্যা বেশি দেখা দেয় সেগুলো হলো,

√ ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণ হয়ে ছত্রাক জনিত ত্বকের রোগ যেমন দাদ হতে পারে।

বন্যার নোংরা দুষিত পানিতে নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ও ব্যাকটেরিয়া ভেসে বেড়ায়, সেজন্য 

√ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে খোসপাঁচড়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে বন্যার সময়।  

✓ রাসায়নিক পদার্থে অ্যালার্জির কারণে চুলকানি বা লালচে ভাব হতে পারে।

প্রতিরোধ 

বন্যার পানির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে পারলে এসব সমস্যা হবে না। তবে বাস্তবতা হলো বন্যায় পানির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা অসম্ভব। বন্যার পানির সংস্পর্শ থেকে সরে যাওয়ার পর সাবান বা পরিস্কার পানিতে ত্বক পরিষ্কার করা উচিত। ত্বক যাতে স্যাঁতস্যাঁতে না থাকে সেজন্য শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। ত্বকের ভাঁজ যেমন কুঁচকি, বগল, হাটূ এসব স্থানে নজর বেশি দিতে হবে। ছত্রাক, খোসপচরা বা চুলকানি দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।



Tuesday, July 30, 2024

জেনারেশন জি (Generation Z)


বাংলাদেশে স্বৈরাচারী ফ্যাসিষ্ট মাফিয়া সরকার বিরোধী জনযুদ্ধের সূচনা করেছে জেনারেশন জি (#GenZ) প্রজন্ম, যারা ১৯৯৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে। এই প্রজন্মের চারিত্রিক গুণাবলী সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:


√প্রযুক্তিগত অভ্যাস 

 **ডিজিটাল নেটিভস**: তারা ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে বেড়ে উঠেছে। ফলে তারা প্রযুক্তি-নির্ভর।

 **সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার**: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, এবং টিকটকের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। 


√মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি

 **বৈচিত্র্য গ্রহণ**: জাতিগত এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করে। তাদের চিন্তাভাবনা ভৌগলিক সীমারেখা দিয়ে সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্ব নাগরিক এই প্রজন্ম সাধারণত সত্য ও সাম্যের পক্ষে।

 **পরিবেশ সচেতন**: জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসইতার দিকে মনোযোগ দেয় এবং পরিবেশ রক্ষায় আগ্রহী।


√শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে প্রভাব

**টেক-সাভি**: অনলাইন শিক্ষা ও কোর্সের প্রতি আগ্রহী এবং নতুন টেকনোলজি দ্রুত শেখে।

 **উদ্ভাবনী**: নতুন আইডিয়া ও প্রযুক্তিকে সহজেই গ্রহণ করে এবং সৃজনশীল সমাধানে দক্ষ।


√মানসিক স্বাস্থ্য

 **সংবেদনশীল**: মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়গুলির প্রতি সংবেদনশীল এবং এই বিষয়ে আলোচনা করতে স্বস্তি বোধ করে।

 **চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে বেড়ে উঠা**: মহামারী, অর্থনৈতিক মন্দা প্রভৃতি চ্যালেঞ্জের মধ্যে তাদের বেড়ে উঠা, যা মানসিক স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিত্বে প্রভাব ফেলেছে।


√যোগাযোগের ধরন

 **সরাসরি এবং দ্রুত যোগাযোগ**: সোশ্যাল মিডিয়া ও মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে দ্রুত এবং সরাসরি যোগাযোগ পছন্দ করে।

-**ব্যক্তিগত গোপনীয়তা**: প্রাইভেসি সম্পর্কে সচেতন এবং তাদের তথ্য সুরক্ষা বিষয়ে যত্নবান।


জেনারেশন জি'র বৈশিষ্ট্যগুলো বোঝার সক্ষমতা না থাকলে তাদের মনযোগ আকর্ষণ করা সম্ভব নয়।

(সংগৃহিত ও সম্পাদিত)

Wednesday, June 26, 2024

গরমে ঘামাচি


গ্রীষ্মকালে ঘামাচি আক্রান্ত হয়ে থাকেন অনেকেই। বিশেষ করে শিশুদের ঘামাচি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। অপেক্ষাকৃত শীতল আবহাওয়ার স্থান থেকে গরম আবহাওয়ার কোন স্থানে ভ্রমণ বা স্থানান্তরিত হলেও ঘামাচি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ঘামাচি কি?

ত্বকে ক্ষুদ্র দানা আকৃতির লালচে ফুস্কুড়ির মতো ঘামাচির আবির্ভাব হয়। সাধারণত শরীরে ঘামাচির ক্ষতিকর কোন প্রভাব নেই। তবে অস্বস্তিকর চুলকানি অনুভূত হয়।

কি কারণে হয়?

গরমে ত্বকে থাকা ধর্মগ্রন্থী অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করে। গরমের কারণে সৃষ্ট প্রদাহে ধর্মগ্রন্থীর নালী বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে ঘামাচির সৃষ্টি হয়।

কোন স্থান আক্রান্ত হয়?

বগল, কুঁচকি, পিঠ, কোমড়, স্তনের নিচে, কনুই ও হাঁটুর ভাঁজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শিশুদের ক্ষেত্রে মুখ আক্রান্ত হতে পারে।

চিকিৎসা 

ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘাম উৎপাদন বন্ধ হলে সাধারণত ঘামাচি আপনাআপনিই চলে যায়। তবে সাময়িক স্বস্তির জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। ঠান্ডা পানিতে গোসল করলেও স্বস্তিদায়ক হয়। প্রদাহ বেশি হলে জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে, সেক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

প্রতিরোধ 

√ঠান্ডা, বাতাসের প্রবাহ যুক্ত পরিবেশে ঘাম তৈরি হয় না, ঘামাচি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

√ঢিলেঢালা, হালকা, প্রাকৃতিক তন্তু দিয়ে তৈরি পোশাক পরিধান করতে হবে।‌

মনে রাখবেন ঘন ঘন ঘামাচি আক্রান্ত হলে গরমে হিটস্ট্রোক আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। হিটস্ট্রোক জীবনহানির কারণ হতে পারে।

Sunday, June 23, 2024

একজন শামসুল হক: বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের ট্র্যাজিক হিরো

১৯৩৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করটিয়া সা’দত কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। তাঁর সময়কালে অন্যান্য বাঙালি মুসলিম যুবকের মতো তিনিও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৪৫ সালে আবুল হাশিম এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ঢাকায় মুসলিম লীগের আঞ্চলিক অফিস তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেন তাঁকে। তাঁর নেতৃত্বে পুর্ব বাংলায় মুসলিম লীগ সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠনে পরিণত হয় এবং ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলার নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর মুসলিম লীগের রাজনীতি পশ্চাদমুখী যাত্রা শুরু করলে সমমনা প্রগতিশীল তরুণদের নিয়ে তিনি ১৯৪৭ সালের শেষ দিকে গণতান্ত্রিক যুবলীগ নামক সংগঠন গড়ে তোলেন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।

রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে গড়ে আন্দোলনে তিনি সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দেন।১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ধর্মঘটে পিকেটিং করার সময় গ্রেফতার হন। পূর্ববঙ্গের রাজনীতির ইতিহাসে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি ১৯৪৯ সালের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলের উপনির্বাচনে বিজয়ের কারণে। এই নির্বাচনে তিনি মুসলিম লীগ নেতা করটিয়ার জমিদার খুররম খান পন্নীর বিরুদ্ধে বিপুল ভোটে জয়ী হন। বলা হয় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দুই বছরের মাথায় মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসনের জবাব দিয়েছিল টাঙ্গাইলের জনগণ।


ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কারণে তিনি ১৯৫২ সালের ১৯ মার্চ গ্রেফতার হন। কারাজীবন দুর্বিষহ  নির্যাতনে তার শরীর ও মন উভয়ই খারাপ হতে থাকে এবং তিনি মানসিক রোগীতে পরিণত হন। ১৯৫৩ সালের ১৩ মার্চ তিনি মুক্ত হন। কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করে তিনি বাসায় ফিরে স্ত্রী ও সন্তানদের দেখতে না পেয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে জানতে পারেন উচ্চ শিক্ষার জন্য সন্তানদের শ্বশুরবাড়িতে রেখে তাঁর স্ত্রী নিউজিল্যান্ড চলে গিয়েছেন। শ্বশুরবাড়িতে তিনি নিগৃহীত হয়ে মানসিকভাবে আরো ভেঙে পড়েন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণে অসম্মতি জানিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে আওয়ামী মুসলিম লীগের সম্পাদক হিসেবে প্রস্তাব করেন এবং তাঁকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেয়া হয়।

১৯৫৪ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যোগদানের এক সপ্তাহ পর তার উন্নত চিকিৎসার জন্যে করাচি মানসিক হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। একসময় তাঁর মানসিক অসুস্থতা নিরাময় যোগ্য নয় বলে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়। মূলত ভাষা আন্দোলন ও সরকার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে নিষ্ঠুর নির্যাতন ও সঠিক সময়ে চিকিৎসার অভাবে তিনি কারামুক্তির পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন নাই। আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে ছিটকে গিয়ে তিনি আধ্যাত্মিকতায় ঝুঁকে পড়েন এবং খেলাফত পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন বলে জানা যায়।

১৯৫৭ সালে তাঁর স্ত্রী দেশে ফিরে অসুস্থ স্বামীকে দেখতে যান এবং তাঁর রোগ অনিরাময়যোগ্য যোগ্য জানতে পেরে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৫৯ সালে আফিয়া খাতুন পিএইচডি করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পাঞ্জাবের বাসিন্দা আনোয়ার দিলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সেখানে, যাকে ১৯৬০ সালে বিয়ে করে অধ্যাপনা ও গবেষণা করে জীবন কাটান।

রাজনৈতিক ও ব্যক্তিজীবন বিপর্যয়ের শেষ সীমায় পৌঁছে তিনি ছন্নছাড়া, দুর্বিষহ, নিঃসঙ্গ জীবনে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পথে পথে ঘুরতে থাকেন।  একসময় লোকচক্ষুর  অন্তরালে চলে যান তিনি। রোগাক্রান্ত শরীরে বিনা চিকিৎসা ও সেবাযত্নহীন অবস্থায় তিনি ১৯৬৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।

এভাবেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের নির্মাতা শামসুল হকের জীবনের সমাপ্তি ঘটে।

Sunday, May 19, 2024

টিপুর বাঘ


শৌর্যবীর্যের প্রতীক বাঘ খুব পছন্দ করতেন মহীশুরের শের টিপু সুলতান। তার ব্রাঘ্যপ্রীতির সবচেয়ে বড় নিদর্শন কাঠের তৈরি করা একটি বাঘের মূর্তি, তাতে দেখা যায় ডোরাকাটা একটি বাঘট এক ইংরেজের টুঁটি চেপে ধরে রেখেছে। টিপু সুলতানকে হত্যার পর বাঘটিকে বিলেত পাঠিয়ে দিয়েছিল ইংরেজরা। এটি এখন লন্ডনের ভিক্টোরিয়া ও আ্যালবার্ট জাদুঘরে সংরক্ষিত ও প্রদর্শিত হচ্ছে।

আঠারো শতকের শেষ দিকে ব্রিটিশদের কাছে মূর্তিমান বিভীষিকা হয়ে উঠেছিলেন সুলতান ফতেহ আলি সাহেব টিপু। বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন টিপু সুলতান। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় উপমহাদেশের প্রথম দিকের শাসক হিসেবে যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। কথিত আছে, টিপুর মৃত্যুসংবাদ শুনে ভারতের গভর্নর জেনারেল রিচার্ড ওয়েলেসলি বলেছিলেন, 'ভদ্রমহোদয় ও ভদ্রমহিলাগণ, ভারতবর্ষের মৃত আত্মার স্মরণে আমি পান করছি।' টিপুর মৃত্যুর খবর বিলেতে পৌঁছালে সেখানেও উৎসবের ঢেউ লাগে। এই ঘটনা থেকেই বোঝা যায় ইংরেজ শাসকদের কাছে কত বড় আতঙ্কের নাম ছিলেন টিপু সুলতান। 

কন্নড় ভাষায় টিপু অর্থ বাঘ। তিনি বিখ্যাতও হয়ে আছেন মহীশুরের বাঘ নামেই। টিপুর এই 'মহীশুরের বাঘ' নামটির উৎপত্তি কীভাবে, তা নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, যৌবনে একবার বন্ধুর সঙ্গে শিকারে গিয়েছিলেন টিপু সুলতান। সে সময় এক বাঘের সামনে পড়ে যান তারা। জনশ্রুতি অনুসারে, বাঘটি টিপুর বন্ধুকে হত্যা করে। জন্তুটিকে হত্যা করতে উদ্যত হন টিপু, কিন্তু তার বন্দুক থেকে গুলি বের হলো না। হাতের ছোরাও পড়ে গেল মাটিতে। বাঘটি টিপুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তেই তিনি ছোরাটি মাটি থেকে উঠিয়ে ওটাকে হত্যা করেন। এর পর থেকেই সবাই তাকে মহীশুরের বাঘ নামে ডাকতে থাকে।

অন্য আরেকটি মতে, টিপু সুলতানের সিলমোহরে ছিল বাঘের ছবি। তাঁর ব্যক্তিগত প্রতীক, রাজপ্রাসাদ, অস্ত্র, বর্ম, সিংহাসন, সেনাবাহিনী—সর্বত্র ছিল বাঘের আধিপত্য। তাঁর  সকল পোশাক, এমনকি রুমালেও ছিল ডোরাকাটা বাঘের উপস্থিতি। এই ব্যাঘ্রপ্রীতির জন্যই তাকে মহীশুরের বাঘ নামে ডাকতে থাকে লোকে।

তার শাসনামলে মহীশুরে বাঘ শিকার ছিল নিষিদ্ধ। যৌবন থেকেই বাঘ পুষতে শুরু করেছিলেন টিপু। তার ঘরের সামনে শেকল দিয়ে বাঁধা থাকত কয়েকটি বাঘ। তবে তার বাঘপ্রীতির সবচেয়ে বড় নিদর্শন হয়ে টিকে আছে কাঠের তৈরি রং করা একটি খেলনা। খেলনাটি আর কিছু নয়, চার ফুট লম্বা একটি বাঘের মূর্তি।

এই মূর্তিতে দেখা যায়, ডোরাকাটা বাঘটি এক ইংরেজের টুঁটি চেপে ধরে রেখেছে। ইংরেজ লোকটির পরনে সাদা মোজা, ফৌজি টুপি, নীল ব্রিচেস, লাল কুর্তা ও কালো জুতা। ভয়ালদর্শন বাঘটি হাঁটু গেঁড়ে বসে রয়েছে শিকারের ওপর। জানোয়ারটির দাঁত বিঁধে আছে শিকারের গলায়। বাঘের শরীরের বাঁ পাশের ভেতরে লুকানো একটা ছোট পাইপ অরগান। জন্তুটির পেছন দিকের একটি হাতল ঘোরালেই সেই অরগান বেজে ওঠে। সে আওয়াজ শুনলে মনে হয়, মুমূর্ষু মানুষের আর্তনাদ আর বাঘের গর্জন ভেসে আসছে যেন। শিকার যে তখনও বেঁচে আছে, তা বোঝানোর জন্য ইংরেজ লোকটার বাঁ হাত কনুই থেকে একটু ওপরে ওঠানামা করে।

জনশ্রুতি আছে, ইংরেজ সেনাপতি হেক্টর মানরোর সঙ্গে যুদ্ধে হেরে ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন টিপু সুলতান। এরকম মানসিক অবস্থায় একদিন শুনলেন, সুন্দরবনের বাঘ শিকার করতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে মানরোর একমাত্র ছেলে। খবরটি শুনেই ওই চার ফুট লম্বা বাঘের মূর্তি তৈরি করান টিপু। প্রকৃতপক্ষে খেলনাটি একের পর এক যুদ্ধে হেরে কোণঠাসা হয়ে পড়া মহীশুরের বাঘ টিপু সুলতানের শত্রুর প্রতি ঘৃণা এবং প্রতিশোধের ব্যগ্র স্পৃহার প্রতীক।

১৭৯৯ সালে ইংরেজবিরোধী যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন টিপু সুলতান। টিপুর দুর্গ শ্রীরঙ্গপত্তমের পতনের পর সেখানে তাণ্ডব চালায় ইংরেজ কমান্ডার ও তাদের সৈনিকরা। লুটপাট চালায় টিপুর গ্রন্থাগার, সমৃদ্ধ অস্ত্রাগার, তোষাখানা, ধনভান্ডারে। মূল্যবান সমস্ত জিনিসপত্র লুট করে চালান করে দেওয়া হয় লন্ডনে। লুটপাটের সময় টিপু সুলতানের বিখ্যাত খেলনা বাঘটির কথা বিশেষভাবে মনে রেখেছিল ইংরেজরা। গভর্নর জেনারেল লর্ড মর্নিংটন টাওয়ার অভ লন্ডনে প্রদর্শনের জন্য ব্রিটেনে পাঠিয়ে দেন বাঘটিকে। তবে লন্ডনে পৌঁছে বেশ কয়েক বছর গুদামেই পড়ে থাকে খেলনা বাঘটি। পরে ১৮০৮ সালে লন্ডনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জাদুঘরে প্রথম প্রদর্শিত হয় এটি। অল্প সময়ের মধ্যেই দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে মহীশুরের শের টিপু সুলতানের বাঘ। মনোযোগ কেড়ে নেয় তৎকালীন বহু পর্যটক, কবি, নাট্যকার ও চিত্রশিল্পীর। নানা স্থান ঘুরে সেই বাঘটি এখন লন্ডনের ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট জাদুঘরে স্থায়ী আবাস গেড়েছে। এই দীর্ঘ যাত্রায় বাঘটির শরীরে লুকানো অরগানটিকে বেশ কয়েকবার সংস্কার করতে হয়েছে। শিল্পকলা প্রেমীদের কাছে এটি #TipusTiger নামে পরিচিত।

 টিপু সুলতানের বাঘ হয়ে উঠেছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে উপমহাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের প্রতীক। টিপু সুলতানের বাঘ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ও ক্রিকেট বোর্ডে স্থান করে নিয়েছে ডোরাকাটা বাঘ। 

#TipuSultan #LondonLife, #Museum,

Friday, May 17, 2024

জিন্নাহর বংশোধর

ওয়াদিয়া গ্রুপ ভারতের সবচেয়ে পুরনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ইরান থেকে আসা পার্সি লোভজি নুসারওয়াঞ্জি ওয়াদিয়া ১৭৩৬ সালে বোম্বে ড্রাইডক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি এশিয়ার প্রথম জাহাজ নির্মাণ কোম্পানি। 

পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর একমাত্র কণ্যা দিনা জিন্নাহ। ওয়াদিয়া পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের নেভিল ওয়াদিয়াকে বিয়ে করেন দিনা। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তিনি বোম্বেতেই স্বামী-সন্তানের সঙ্গে থেকে যান। তিনি নিউইয়র্কে বসবাসরত অবস্থায় ২০১৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার পুত্র জিন্নাহর একমাত্র পৌত্র নেসলি ওয়াদিয়া বর্তমানে ওয়াদিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান। জিন্নাহর একমাত্র নাতনি অবিবাহিত ছিলেন। 


মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর  জীবিত সরাসরি বংশধর এখন পৌত্র নুসলি ওয়াদিয়া ও তার দুই পুত্র নেস ওয়াদিয়া ও জেহাঙ্গির ওয়াদিয়া। তারা ভারতের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ওয়াদিয়া গ্রুপ পরিচালনা করছেন। উড়োজাহাজ, বস্ত্র, কেমিক্যাল, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি নানা ব্যবসা রয়েছে এই গ্রুপে। আইপিএল দল পাঞ্জাব কিংসের মালিকানাও রয়েছে এই গ্রুপের।

#MRKR #Jinnah #PunjabKings

কলকাতার সংস্কৃতিতে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন যে অবাঙালি নবাব

সময়টা উনিশ শতক। ব্রিটিশ শাসন পুরোপুরি কায়েম হয়ে গেলেও কিছু কিছু দেশীয় রাজ্য তখনও স্বমহিমায় বিরাজ করছে। তেমনই এক রাজ্য অযোধ্যা। বসন্ত এসেছে, ...