ছত্রাক বা ফাংগাস প্রাকৃতিক পরিবেশে বিদ্যমান। এগুলোর মধ্যে কিছু মানবদেহে সংক্রামিত হয়ে রোগের সৃষ্টি করে। মানবদেহে সংক্রামিত ছত্রাকের বেশিরভাগ ত্বকে নানা ধরনের রোগ তৈরি করে। সাধারণত ছত্রাক সংক্রমণ চিকিৎসায় ভালো হয়ে যায়, তবে কিছু ছত্রাক জীবনহানির কারণ হতে পারে। সাম্প্রতিক কালে কিছু ছত্রাক ঔষধ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চারটি ছত্রাক সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে।
◆ক্রিপটোকক্কাস নিয়োফরম্যানস
এটি মস্তিষ্কে সংক্রমণ করে জীবনহানির কারণ হতে পারে। সাধারণত পাখির মল দিয়ে ফলের মাধ্যমে এই ছত্রাক শরীরে প্রবেশ করে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শেও এটি ছড়াতে পারে।
◆আ্যসপারগিলাস ফিউমিগ্যটাস
এই ছত্রাক ঘরেবাইরে পরিবেশে বিদ্যমান। সাধারণত মরা পাতা, পচণধরা শব্জি ও ফলমূল, সংরক্ষিত শস্য ও খাবার, ঘরের কার্পেটে এটি জন্ম নিয়ে থাকে। সাধারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষের ক্ষেত্রে এটি রোগ সৃষ্টি করতে পারে না। তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েছে, বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে এটি ফুসফুস ও সাইনাসে সংক্রমণ করে থাকে।
◆ক্যানডিডা অরিস
সাধারণত এই ফাঙাস স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে সৃষ্টি হয়। স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা এটি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে আক্রান্ত স্বাস্থ্য কর্মী চিকিৎসক ও নার্সের সংস্পর্শে অন্যরা আক্রান্ত হতে পারেন। এটির সংক্রমনে তীব্র জ্বর ও শীত অনুভূত হয়ে থাকে।
◆ক্যানডিডা আ্যলবিকানস্
ফাঙাস বা ছত্রাক দ্বারা সৃষ্ট রোগের অন্যতম প্রধান কারণ এটি। ত্বকের নানা স্থানে এই ফাঙাস সংক্রমণ করে থাকে। সাধারণত চিকিৎসার মাধ্যমে খুব সহজেই পরিত্রাণ পাওয়া যায়। তবে ইদানিং এই ফাঙাস ঔষধ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে। প্রচলিত ঔষধ কাজ করে না বিধায় আক্রান্তরা দীর্ঘদিন এই রোগে ভুগে থাকেন।
◆প্রতিরোধের উপায়
●ফলমূল ও শাকসবজি ভালো করে পরিষ্কার করুন।
● পচণধরা ফলমুল ও শাকসবজি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
● ঘরের কার্পেটে নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
●হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রয়োজনের বেশি সময় অবস্থান করবেন না।
●চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ফাঙাস বিরোধী ঔষধ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
ডাঃ এম আর করিম রেজা
ত্বক ও সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ
No comments:
Post a Comment