বাংলাদেশের সর্বত্র হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (HFMD) ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুরা বেশি আক্রান্ত হওয়ার কারণে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ভাইরাসজনিত এই রোগটি ইতোপূর্বে আমাদের দেশে বেশি পরিলক্ষিত হতো না। মূলত শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে যে কোন বয়সীরা এই রোগ আক্রান্ত হতে পারেন। এটি খুবই ছোঁয়াচে সংক্রামক রোগ। তবে এটি মারাত্মক জটিল ধরনের কোন রোগ নয়, জীবনহানির ঝুঁকিও নেই।
কক্সাকি নামক একধরনের ভাইরাস এই রোগের জন্য দায়ী।
✓কিভাবে ছড়ায়
আক্রান্ত ব্যক্তির ফোস্কা থেকে নির্গত রস, হাঁচি কাশি, ব্যবহত পোশাক এবং স্পর্শ করা যে কোন জিনিস, এমনকি মলের মাধ্যমেও এটি ছড়ায়।
জনসমাগম যে সব জায়গায় বেশি সেখান থেকেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি।
✓লক্ষণ
হালকা জ্বরের সঙ্গে গলা ব্যথা, শরীরে নানা জায়গায় পানিভর্তি ফুস্কুড়ি, মুখের ভেতরে ক্ষত, মুখ দিয়ে ক্রমাগত লালা নিঃসরণ, খাবারে অরুচি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। হাত, পা এবং জিহ্বাতে সাধারণত ফুসকুড়ি দেখা দেয় তবে উরু অথবা নিতম্বেও হতে পারে।
ত্বকের ফোস্কা বা ফুস্কুড়ি অনেকটা জলবসন্তের মতো। 'ফুট অ্যান্ড মাউথ' নামে গবাদি পশুর একটি অসুখ রয়েছে যার সঙ্গে এটির কোন সম্পর্ক নেই।
✓চিকিৎসা
ভাইরাসজনিত এই রোগের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোন ঔষধের ভূমিকা নেই। ৭-১০ দিনের মধ্যে সাধারণত আপনাআপনি ভালো হয়ে যায়।
অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিভাইরাল বা অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের কোনো ভূমিকা নেই এই রোগের চিকিৎসায়।
লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। পরিচর্যা, পর্যাপ্ত পানীয় দিতে হবে তবে ফলের জুস মুখ ও গলার ব্যাথা বৃদ্ধি করে বিধায়, বিরত থাকাই ভালো। নরম ও কম মশলাযুক্ত খাবার দেয়া উচিত।
✓প্রতিরোধ
শিশুকে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে।
আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এবং হাঁচিকাশি থেকে দূরে থাকতে হবে।
জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা রাখতে হবে। আক্রান্ত শিশুকে স্কুলে পাঠানো যাবে না। আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অবশ্যই।