বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ (Non-Communicable Diseases - NCDs) জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যেসব রোগ তীব্র সংক্রমণের ফলে ছড়ায় না বরং দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক অসুস্থতা সৃষ্টি করে এবং দীর্ঘমেয়াদে চিকিৎসা ও যত্নের প্রয়োজন হয় তাকে অসংক্রামক রোগ বলে। বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৭১% অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটে। এই রোগগুলোর মধ্যে প্রধান হলো হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগ, কিডনি রোগ এবং ক্যান্সার।
দেশে ২০% পুরুষ এবং ৩২% নারী উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন।প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন।
বাংলাদেশে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালের হিসেবে দেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, যার প্রায় অর্ধেকই নারী। তবে ডায়াবেটিস আক্রান্তদের মধ্যে ৪৩% এখনও শনাক্তের বাইরে রয়েছেন।
বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষ কোনো না কোনো কিডনি রোগে আক্রান্ত। ২০২৩ সালের হিসেব অনুযায়ী প্রায় ২৪% মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২১% সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ) নামের ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত। প্রতি বছর দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন, যার মধ্যে ৯১ হাজারের অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেন।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির ফলে ডায়রিয়া, বসন্ত, যক্ষ্ণা, হাম ইত্যাদি বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি সহজেই চিকিৎসায় নিরাময় হচ্ছে এবং প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু অসংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র। অসংক্রামক রোগের সঙ্গে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কায়িক পরিশ্রমের অভাব, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ ইত্যাদি কারণে অসংক্রামক রোগাক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধের জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন। স্বাস্থ্য, অর্থ, শিক্ষা, কৃষি, পরিকল্পনা ও অন্যান্য খাতকে সম্পৃক্ত করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। স্বাস্থ্য সেবার প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও সময়োপযোগী চিকিৎসা অসংক্রামক রোগ কমানোর অন্যতম উপায় হতে পারে।
জনসচেতনতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
#trend #health #disease #treatment #doctor
No comments:
Post a Comment