Monday, January 30, 2012

সোরিয়াসিস: নিয়ন্ত্রণ করুন,স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে থাকুন


সোরিয়াসিস/psoriasis ত্বকের একটি প্রদাহ জনিত রোগ। জনসংখ্যার ২-৪% এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে এবং আক্রান্তদের এক তৃতীয়াংশ বংশগতভাবে অর্জন করেন । নারী পুরুষ নির্বিশেষে যে কোন বয়সীরা এ রোগে আক্তান্ত হতে পারেন তবে তিরিশর্ধোরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।এটি কোন সংক্রামক রোগ নয়, কাজেই সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় না।

সাধারণত আমাদের ত্বকের কোষ সমূহ একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধধমে নির্দিষ্ট সময় পর পর ঝরে যায় এবং নতুন কোষ তৈরি হয়। প্রক্রিয়াটি খুবই সমন্বিত ভাবে হয়ে থাকে বিধায় স্বাভাবিকভাবে বোঝা যায় না।সোরিয়াসিস রোগে ত্বকের ইপিডারমিস এ অবসশিত কোষ সমূহ খুব দ্রুত ব্রিধি পায় এবং ত্বকের উপরে এক ধরণের প্লাক/plaque তৈরি করে। লক্ষ্মণ ও মাত্রা অনুযায়ী এ রোগ কয়েক ধরনের হতে পারে।

দেখতে কেমন এবং লক্ষ্মণ কি?

আক্রান্ত অংশে রুপালী সাদা আঁশ দ্বারা আবৃত,উজ্জ্বল লালচে বর্ণের প্লাক/খত দেখা যায়।সাধারণত মৃদু চুলকানি অনুভুত হতে পারে।

কোন অংশ আক্রান্ত হয়?

সাধারণত কনুই, হাঁটু,মাথা, হাত ও পা এর নখ হয়।তবে ধরন ভেদে বিভিন্ন অংশ এমনকি পুরো শরীর আক্রান্ত হতে পারে।

কি কারণে হয়?


বংশগত কারণ ছাড়া,এ রোগ এর নির্দিষ্ট কোন কারণ নির্ণয় করা দুরহ তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে দ্রুত ব্রিধি হতে পারে যেমন কোন ধরনের সংক্রামন, ত্বকে আঘাত জনিত কারনে,আবহাওয়াজনিত শীতে বেশি এবং কিছু ওশধ সেবনের কারনে।

চিকিৎসা 

রোগ এর ধরন অনুযায়ি চিকিথশা দেয়া হয়ে থাকে,

অল্প অংশ আক্রান্ত হলে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ক্রিম,লশান,জেল ইত্তাদি রুপে ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়ে থাকা;

অনেক বেশি অংশে ছড়িয়ে পড়লে মুখে খাবার ওষুধ,ultraviolet ray,PUVA থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হয়।

মনে রাখবেন ত্বকের অন্য রোগেও সরিয়াসিস এর মত প্লাক দেখা দিতে পারে।এ রোগ কখনই পুরোপুরি ভাল হয় না এবং কখনই জীবন হানীর কারন হয় না।নিয়মিত চিকিথশা গ্রহনের মাধ্যমে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা জায়। কাজেই নিয়মিত চিকিথশা নিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন।

চিকুনগুনিয়া-অন্যান্য জ্বরের মতই খুব সাধারণ অসুখ

চিকুনগুনিয়া‌ (Chikungunya) একটি মশা বাহিত আলফা ভাইরাসজনিত রোগ। এটি আফ্রিকা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার রোগ হলেও ইদানীং ভারতে এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, এমনকি আমাদের দেশের কিছু এলাকাতে আক্ত্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে। ঢাকা শহর এবং সাভার এ অনেকে আক্রান্ত হওয়ার কারনে এবং কিছু টেলিভিশান চ্যানেলে প্রচার এর কারনে অনেকেই অহেতুক ভীতিতে ভুগছেন। এ রোগে মৃত্যু ঝুকি না থাকলেও জটিলতার কারনে ৫দিন থেকে ১২ মাস পর্যন্ত ভোগান্তি হতে পারে এবং সাধারন কাজ কর্মে অসুবিধা হতে পারে, এমনকি চলা ফেরা করতেও সমস্যা হতে পারে। মহামারি আকারে দেখা দিতে পারে, এজন্য মোকাবেলা করতে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহনের প্রয়োজন হয়।


কিভাবে ছড়ায়

আক্রান্ত রোগীকে কামড়ানো এডইস মশা সুস্থ কাউকে কামড়ালে এ রোগের বিস্তার লাভ করে। ২ থেকে ৫ দিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে। মশা- মানুষ-মশা এভাবে ছড়ায়।

লক্ষণ কি?


প্রথমে জ্বর দেখা দেয়। ডেঙ্গু জ্বর এর মত ত্বকে লালচে র‍্যাশ দেখা দেয়। জ্বর ২ থেকে ৫ দিন পরে চলে যায়। গিরায় গিরায় ব্যাথা (arthritis) অনুভুত হয়। চোখ লালচে হতে পারে। ঘুম কমে জেতে পারে।
গিরায় গিরায় ব্যাথা (arthritis) অনেক সময় ২ বছর পর্যন্ত থাকতে পারে।
সাধারনত কম বয়সীরা ৫-১৫ দিন, মধ্য বয়সীরা ১-৩ মাসে সুস্থ হয়ে উঠেন। বেশি বয়সীদের সম্পুর্ন সুস্থ হতে প্রায় ২ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

রোগ নির্ণয়

লক্ষণ দেখে রোগ নির্ণয় করা যায়।

ল্যাবরেটরিতে সেরোলজিকাল পরীক্ষা এবং ভাইরাস আইসোলেসন এর দ্বারা সনাক্ত করা যায়।

চিকিৎসা 

সাধারনভাবে অন্যান্য ভাইরাস জনিত রোগের মতো এই রোগের চিকিৎসায় কোন এন্টি বায়োটিক (antibiotic) লাগে না। লক্ষন অনুযায়ী জ্বর ও ব্যাথা নাশক ঔষধ দেয়া হয়।
বয়স্কদের ক্ষেত্রে কোন কোন ক্ষেত্রে  প্রায় ২ বছর পর্যন্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হতে পারে।

প্রতিরোধ

ভাইরাসজনিত রোগ হলেও, এ রোগের কোন প্রতিষেধক টিকা নেই।
মশক নিয়ন্ত্রন এর মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
মশা যাতে কামড়াতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
আক্রান্ত রোগীকে আলাদা ভাবে মশারির ভিতর রাখা উচিত।

রোগটি আমদের দেশে একেবারে নতুন বিধায়, জর আক্রান্ত হলে ,ভীত না হয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহন করুন।

ত্বকের প্রদাহজনিত রোগ ‘ডারমাটাইটিস’

প্রদাহজনিত/Inflammatory রোগের মধ্যে ‘ডারমাটাইটিস’ই ত্বকে সর্বাধিক দেখা যায়।অনেকে ত্বকে কোন ধরণের র‍্যাশ’/ফুসকুড়ি হলেই ডারমাটাইটিস বা একজিমা মনে করেন,এ ধারনা ঠিক না।আবার ডারমাটাইতিস এবং একজিমা সম্পূর্ণ আলাদা রোগ। কিন্তু

ডারমাটাইটিস/Dermatitis ছাড়াও ত্বকের অনেক রোগে রাশ/ফুসকুড়ি দেখা যায়।

কেমন দেখতে?

ডারমাটাইটিস এর ফুসকুড়ি লাল,ধারযুক্ত বা ধারহিন হতে পারে।রোগ আক্রান্তের সময় এর ভিত্তিতে ফুসকুড়িতে পানি বা স্তর এর আবরণ থাকতে পারে।তবে চুলকানি অবশ্যই থাকবে।স্বল্প সময় এর হলে পানি বা ভিজা থাকে কিন্তু অনেক দিনের হলে স্তরযুক্ত আবরণ থাকে।



ধরন কি কি?

■কি উপায়ে বা কি কারণে ডারমাটাইটিস হয়েছে,এর উপর ভিত্তি করে একে ভাগ করা হয়ে থাকে,যেমন
■আল্ল্যেরজিক/allergic কনটাক,
■ইররইতেন্ত/irritant কনটাক,
■এঁটোপিক বা বংশগত,
■ডিসহাইড্রটিক,
■সেবরিক,
■লিচেন সিমপ্লেক্সক্রনিকাস
■নুম্মুলার,
■ডাইয়াপার,
■স্তাসিস,
■কসমেটিক বা প্রসাধনজনিত ইত্যাদি।
চিকিৎসা

কি ধরণের ডারমাটাইটিস হয়েছে নির্ণয়এর পর উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়া হয়।

ত্বকে লাগানোর ক্রিম,লশান দেয়া হয় ।

প্রয়োজনে মুখে খাবার অশুদও লাগতে পারে।



প্রতিরোধ

■ত্বক মসৃণ রাখার চেষ্টা করুণ, ত্বকের ধরন অনুযায়ী মইশচারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
■ত্বক ক্ষতি করতে পারে এমন কোন বস্তু থেকে দূরে থাকুন।
■নতুন কোন প্রসাধন ব্যাবহার এর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


মনে রাখবেন ডারমাটাইটিস ছাড়াও ত্বকের এবং শরীরের ভিতরের অনেক রোগেও ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। ডারমাটাইটিস এর চিকিৎসা গ্রহন করতে দেরি করলে জটিল ইনফেকশন হতে পারে এবং শিশুদের ক্ষেত্রে খুব দ্রুত ছড়িয়ে জীবনহানির কারন হতে পারে ,কাজেই সময়মত চিকিৎসা নিন,শুস্থ থাকুন।

Friday, September 30, 2011

ত্বকের ক্যান্সার ম্যালিগন্যান্ট মেলানমাঃ মৃত্যুর কারণ হতে পারে

শরীরের কোন স্থানের কোষ অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকলে ,সাধারনভাবে এ প্রক্রিয়াকে ক্যান্সার বলা হয়।অন্যস্থানে দ্রুত ছড়ীয়ে মৃতর কারণ হয়ে থাকে।ত্বকেও এ ধরনের পরিবর্তন হতে পারে। ত্বকে নানা প্রকারের টিওমার হয়ে থাকে,যেমন নেভাস,চেরি আঙ্গিওমা,সেবরিক কেরাতসিস,লাইপমা, ফিব্রমা,ছিস্ত, কেরাতএকান্থমা, গ্রানুলমা,লেন্তিগা ও কান্সারজনিত টিওমার।ত্বকের ক্যানসার তিন প্রকার বেসাল ছেল,এসকুয়ামাস ছেল ও ম্যালিগন্যান্ট মেলানমা।অন্য দুটি খুব বেশি মারাত্নক না হলেও, ম্যালিগন্যান্ট মেলানমা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ২০০০০০ নতুন লোক আক্রান্ত হয়ে থাকে এবং এর কারনে ৫০০০০ মৃত্যু হয়। আস্ত্রলিয়া,আমেরিকা এবং ইউরোপ এ বেশি হয়ে থাকে।মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রে ১% লোক জীবনে একবার এ রোগে আক্তান্ত হয়ে থাকে। আউস্ত্রেলিয়া এর কুইন্সল্যান্ডে এ কেন্সার এর প্রাদুর্ভাব সব চেয়ে বেশি।
ম্যালিগন্যান্ট মেলানমা কি
ত্বকে মেলানোসাইট নামের এক ধরনের কোষ এর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে এটি হয়ে থাকে। তকের ভিতর ও বাহিরের স্তরের মাঝে এ কোষ পাওয়া যাই। খুব দ্রুত এ ক্যান সার ছড়ীয়ে পরে বিধায়,এটি একটি মারাত্নক স্বাস্থ্য সমশা।
কি কারনে হয়ে থাকে
সঠিক কারন জানা জাইনি,তবে সূর্য রন্সমি,বংশগত কারনে হতে পারে, আবার যাদের তিল বেশী তাদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবনতা বেশি।
কিভাবে বুঝবেন
তকের কোন স্থানে অস্বাভাবিক নতুন পরিবরতন যেমন রঙ,টিওমারজাতিও,তিল আকারে বাড়তে থাকা/রক্পাত হওয়া /চুলকানো ইত্তাদি।আকৃতি অসামঞ্জুরনপূর্ণ,৬ মি,মি এর উপরে হয়ে থাকে,একের অধিক রাঙ্গান,কিনারা অমশ্রিন।
চিকিৎসা
একেবারে প্রথম দিকে ধরা পরলে কোন অসুবিধা হয় না বা জীবন হানীর ঝুঁকি থাকে না,তবে রোগ এর বিস্তার ভেদে চিকিৎসা ও ঝুকি ভিন্ন হতে পারে।সার্জারির মাধ্যমে টিওমার অপসারণ করার পর কেমোথেরাপি ও রেডিও থেরাপির মাধদমে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে।
প্রতিরোধ
সূর্যালোক থেকে দূরে থাকুন,ছাতা/সান ইস্ক্রীন ব্যাবহার করুন;
■আপনার শরীরের তিল গুলো নিয়মিত খেয়াল রাখুন, পরিবর্তন লক্ষ করলে ডাক্তার এর পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না ;
■তকে যে কোন পরিবর্তন লক্ষ করার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন দেরি করা মানেই মৃত্যু ডেকে আনা!!!!

Thursday, July 28, 2011

কুষ্ঠ নিরাময়যোগ্য সংক্রামক রোগ

কুষ্ঠ মানবসভ্যতার একটি প্রাচীনতম রোগ। মিসর, চীন ও ভারতীয় প্রাচীন ইতিহাসেও এ রোগের উল্লেখ রয়েছে। ভয়, কুসংস্কার এবং লজ্জার কারণে আক্রান্তরা এটিকে প্রকাশ করতে চান না বা চিকিৎসা গ্রহণে কুণ্ঠাবোধ করে থাকেন। বলা হয়ে থাকে 'সমাজ কুষ্ঠরোগীকে ভয় পায় আবার কুষ্ঠ আক্রান্তরা সমাজকে ভয় পায়।

' কুসংস্কারই 'কুষ্ঠ' চিকিৎসা ও প্রতিরোধে মূল প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে অথচ সময়মতো ও সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে এটি একটি পূর্ণ নিরাময়যোগ্য রোগ। প্রচলিত কুসংস্কারগুলোর একটি হচ্ছে 'পাপিষ্ঠ ব্যক্তি বা তাদের বংশধরগণ' এ রোগে আক্রান্ত হয়। বাস্তবে 'মাইকো ব্যাকটেরিয়াম লেপ্রি' নামে একটি জীবাণু এ রোগের জন্য দায়ী।

অত্যধিক জনসংখ্যা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রোগটি ছড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। পৃথিবীব্যাপী প্রায় ৮০টি দেশে এ রোগের বিস্তার রয়েছে। আমাদের দেশে বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর, সিলেট, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, বগুড়া ও ঢাকা জেলায় এর প্রাদুর্ভাব রয়েছে। উপজেলা ভিত্তিতে প্রায় ১২০টিতে এর বিস্তার রয়েছে। মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা এ রোগে আক্রান্ত হয় বেশি।

লক্ষণ : এ রোগের জীবাণু সাধারণত ত্বক এবং ত্বকের নিকটবর্তী স্নায়ুকলাকে আক্রান্ত করে। আক্রান্ত স্থান অপেক্ষাকৃত বিবর্ণ হয়ে থাকে। ম্যাকুউল, প্যাপিউল, নোডিউল বা প্লেক আকারে দেখা দিতে পারে। স্নায়ু আক্রান্ত হলে স্থানটি অবশ হয়ে থাকে।

কিভাবে ছড়ায় : আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে ত্বক এবং শ্বাসনালীর মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধের মাধ্যমে শিশুর দেহে সংক্রমিত হতে পারে।

জটিলতা : আক্রান্ত স্থানভেদে জটিলতার পার্থক্য আছে। হাত, পা বিকলাঙ্গ হতে পারে। চোখ নাড়ানোর ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। অনুভূতি কমে যাওয়ার কারণে আগুনে পোড়া বা অন্যান্য দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

চিকিৎসা : আমাদের দেশে বিনামূল্যে এ রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। সময়মতো ওষুধ গ্রহণ করলে কোনো জটিলতা হয় না। তবে জটিলতার কারণে শল্য চিকিৎসা ও ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন হতে পারে।

প্রতিরোধ : রোগী ও সমাজকে সচেতন করার মাধ্যমে অনেকাংশেই এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
অন্যদের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করবেন না।
বিছানা, পরিধেয় এবং প্রসাধনী পৃথক রাখুন।
হাঁচি, কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই রুমাল ব্যবহার করবেন।
চিকিৎসকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। পূর্ণ চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
সতর্কভাবে চলাফেলা করুন। বিশেষ করে আগুন থেকে দূরে থাকুন।


ডা. এম আর করিম রেজা



কনসালটেন্ট : চর্ম ও এলার্জি



এশিয়ান জেনারেল হাসপাতাল, ফোন : ০১৮১৯-২৩৭৩৫0

published in the daily 'bangladesh protidin' on 27th june.2011

http://www.bd-pratidin.com/?view=details&type=gold&data=Tax&pub_no=420&cat_id=3&m

Friday, June 3, 2011

গরমে শিশুর ত্বকের সমস্যা

সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী শতকরা ২০-৩০ ভাগ শিশু শুধুমাত্র ত্বকের রোগের কারণেই অসুস্থতায় ভোগে। বড়দের চেয়ে শিশুর ত্বকের গঠন আলাদা ও অসম্পূর্ণ। যেমন ত্বকের স্তরগুলো পাতলা এবং পূর্ণমাত্রায় বিকশিত হয় না, কোষের মাঝের গাঁথুনি দুর্বল, তেল বা সেবাম এবং ঘাম নিঃসরণ ক্ষমতা কম ইত্যাদি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ইন্দ্রিয় শক্তি পূর্ণমাত্রায় সক্রিয় না হওয়ার কারণে শিশুদের সংক্রামক ও প্রদাহজনিত রোগ এবং অ্যালার্জিসহ বিভিন্ন ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। 

গরম ও আর্দ্র্য আবহাওয়ায় শিশুদের ত্বকে সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। আমাদের দেশে মিজেলস বা হাম, চিকেনপক্স বা জলবসন্ত ও ইমপেটিগো বা সামার বয়েল-এর সংক্রমণ বেশি দেখা দেয়। এসব ত্বকের রোগ ছোঁয়াছে বা আক্রান্তদের মাধ্যমে ছড়ায়।
শিশুর সংক্রমণজনিত ত্বকের রোগ কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়।
ভাইরাস জনিত : চিকেন পক্স বা জলবসন্ত, হাম, রুবেলা বা জার্মান মিজেলস, হারপিজ সিম্পেঞ্জ ও গোস্টার, ওয়ার্ট, মাম্পস, কনডাইলোমেটা রোগ ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে।
ব্যাকটেরিয়া জনিত : ইমপেটিগো বা সামার বয়েল, ফলিকুলাইটিস, ইরাইসিপেলস, ফারাঙ্ককেল, কারবাংকেল, কুষ্ঠ ও অ্যানথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে।
ছত্রাক বা ফাঙ্গাসজনিত : ক্যানডিডিয়াসিস, ইরাইথ্রাসমা, টিনিয়া ভারসিকলার, টিনিয়া ক্যাপিটিস, টিনিয়া সেডিস ইত্যাদি ফাঙ্গাসজনিত কারণে হয়ে থাকে।
প্যারাসাইট বা পরজীবীজনিত : স্ক্যাবিস বা খোঁসপাচড়া, পেডিকুলোসিস বা উকুন, মিয়াসিস, ট্রমবিকুলোসিস, লেকটুলারিয়াস ইত্যাদি।
সংক্রমণজনিত ছোঁয়াচে রোগ ছাড়াও তীব্র গরমে শিশুরা হিটষ্ট্রোক ও ঘামাচিতে আক্রান্ত হতে পারে।

চিকিৎসা : শিশুর ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় অতি দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। রোগ নির্ণয়ের পর, সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করলে সহজেই আরোগ্য লাভ সম্ভব।

প্রতিরোধ :
■ আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে শিশুকে দূরে রাখুন।
■ শিশুর পরিধেয় পোশাক পরিছন্ন রাখুন।
■ অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা স্থানে শিশুকে রাখুন এবং ঘাম তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুছে ফেলুন।
■ বেশির ভাগ ভাইরাসজনিত রোগের জন্য প্রতিরোধক টিকা পাওয়া যায়। শিশুকে টিকা দিন।

মনে রাখবেন সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ না করলে ত্বকের রোগ থেকে সৃষ্জট টিলতার কারণে শিশুর জীবনহানির আশঙ্কা থাকে। অবহেলার কারণে দীর্ঘদিন পর্যন্ত এ সমস্যা পোহাতে হতে পারে। তাই শিশু ত্বকের রোগে আক্রান্ত হলে
দেরি না করে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।




published in the daily 'bangladesh protidin'on 28/05/2011,http://www.bd-pratidin.com/?view=details&feature=yes&type=gold&data=Tax&pub_no=390&cat_id=3&menu_id=15&news_type_id=1&index=3

বয়স্কদের ত্বক সমস্যা

ত্বক মানবদেহকে পারিপার্শ্বিক প্রতিকূলতা থেকে রক্ষা করে থাকে, যেমন শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা, ত্বকে অবস্থিত সংবেদনশীল স্নায়ুর মাধ্যমে ব্যথা স্পর্শ, চাপ, গরম ও ঠাণ্ডা অনুভূত করা ইত্যাদি। বয়ঃবৃদ্ধির লক্ষণ সর্বপ্রথম ত্বকে পরিলক্ষিত হয়। সাধারণত পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সে পরিবর্তন লক্ষণীয়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এ পরিবর্তন হয় তবে ঋতু বন্ধ হওয়ায় নারীদের বেশি অনুভূত হতে পারে। বয়ঃবৃদ্ধির কারণে ত্বকের বিভিন্ন স্তর অপেক্ষাকৃত হালকা হতে থাকে এবং উক্ত স্তরসমূহে বিভিন্ন কোষ সংখ্যা কমে যায়। কানেক্টিভ টিস্যু বা যোজন কলা কমে যাওয়ার কারণে ত্বক স্বাভাবিক স্থিতিস্থাপকতা হারিয়ে ফেলে এবং বিভিন্ন স্থানে ভাগ পরিলক্ষিত হয় যেমন চোখ ও গলার নিচে, মুখমণ্ডল ইত্যাদি স্থানে। পানি ধারণ এবং তেল নিঃসরণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। রক্তশালী সূ্থল ও ভঙ্গুর হয় একই সঙ্গে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। ত্বকের সঙ্গে সঙ্গে নখের বৃদ্ধি ও আকার পরিবর্তন হয়। চুল কমে যেতে থাকে এবং রক্তও ধূসর হতে থাকে। বয়ঃবৃদ্ধির কারণে ত্বকের সমস্যাসমূহ নিম্নরূপে ভাগ করা যেতে পারে,

ত্বক পাতলা হয়ে যাওয়ার কারণ : ত্বকের পানি ধারণ ও তৈল নিঃসরণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় শুষ্ক ও রুক্ষ হয় এবং চুলকানি অনুভূত হয়। একে সেনাইল ডার্মাটাইটিস বা জেরোসিস বলা হয়ে থাকে। যোজন কলা কমার জন্য ত্বকের শক্তি ও স্থিতিস্থাপকতা কমে যায় যা ইলাসটোসিস নামে পরিচিত। স্বাভাবিক তৈল নিঃসরণ কমে যাওয়ার কারণে উজ্জ্বলতা কমে যায়। ঘর্মগ্রন্থি বা সোয়েট গ্রান্ডের ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। মেলানিনের পরিবর্তনের কারণে লেনটিগো বা লিভার স্পট, কেরাটোসিস ইত্যাদি দেখা দেয়। অনুভূতি কমার ফলে তাপ, ঠাণ্ডা বা স্পর্শজনিত আঘাতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

রক্তনালী স্থূল ও ভঙ্গুর এবং রক্তপ্রবাহ হ্রাসের কারণ : ত্বকে রক্ত জমাট হতে পারে, আলসার বা ক্ষত দেখা দেয়। চেরী অ্যানজিওমা, পার্পুরা, ব্রুইজ ও গ্যাংরিন হতে পারে। ডায়াবেটিক আক্রান্তদের ক্ষেত্রে গ্যাংরিনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

ত্বকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমার কারণ : বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাংগাস ও পরজীবি সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় যেমন_ পায়োডার্মা, হারপিজ, দাদ, খোসপাচড়া ইত্যাদি।

টিউমারের সম্ভাবনা বৃদ্ধির কারণ : বিভিন্ন ধরনের টিউমার যেমন লিটকোপ্লাকিয়া, ইপিথেলিওমা, মেলানোমা বা সারকোমা দেখা দিতে পারে। এদের মধ্যে কোনো কোনোটি ক্যান্সারে রূপান্তরিত হয়, যেমন ম্যালিগন্যান্ট মেলানোমা,যা জীবনহানির কারণ হতে পারে। এছাড়া ডার্মাটাইটিস, একজিমা, অ্যালার্জিজনিত সমস্যা যেমন আর্টিকেরিয়া বা ওষুধের প্রতিক্রিয়া বেড়ে যায়। শরীরের অন্যান্য রোগের লক্ষণ হিসেবেও ত্বকের পরিবর্তন হতে পারে।

চিকিৎসা : বয়সজনিত ত্বকের স্বাভাবিক পরিবর্তন কখনই রোধ করা সম্ভব নয় তবে জীবন পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে গতি কমানো যায়। বয়ঃবৃদ্ধিজনিত ত্বকের রোগ নির্ণয়ের পর সঠিক চিকিৎসা করলে আরোগ্য লাভ করা যায়।

এছাড়াও
অতিরিক্ত গরম ও ঠাণ্ডা এড়িয়ে চলুন, দীর্ঘক্ষণ রোদ পরিহার করুন।
গোসলের সময় অপেক্ষাকৃত কম ক্ষারীয় সাবান ব্যবহার করুন এবং গোসলের পর ময়েশ্চারাইজার যেমন পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন।
আঁচড় কাটা থেকে নিবৃত থাকুন।
সুষম খাদ্য বিশেষ করে ফলমুল, শাক-সবজি, তৈলাক্ত মাছ ও পানীয় গ্রহণ করার অভ্যাস করুন।

ত্বকে কোনো ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা মাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যথাসময়ে চিকিৎসা গ্রহণ না করলে গ্যাংরিন, ত্বকের ক্যান্সার হতে পারে। এজন্য সময়মত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।



ডা. এম আর করিম রেজা

Published in the 'daily banagladesh protidin' on 09/05/2011

http://www.bd-pratidin.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=09-05-2011&type=gold&data=Tourist&pub_no=371&cat_id=3&menu_id=15&news_type_id=1&index=2

দ্য গ্রেট লন্ডন ফায়ার

১৬৬৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ সেপ্টেম্বর এক বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে সিটি অফ লন্ডন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল, যা ইতিহাসে 'দ্য গ্রেট লন্ডন ...