Monday, April 28, 2025

গ্রীনউইচ মান সময়

মানবজাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলোর একটি- #সময়। একসময় বিশ্বের পৃথক পৃথক দেশ ও শহর নিজের ইচ্ছামতো সময় নির্ধারণ করতো। লন্ডন, প্যারিস, নিউইয়র্ক, বেইজিং বা জাকার্তা— প্রত্যেকের ঘড়ি চলতো আলাদা নিয়মে। সময় ছিল অপেক্ষাকৃত "স্থানীয়" — সূর্যের অবস্থান দেখে সময় নির্ধারণ করা হতো। যখন বিশ্বজুড়ে যোগাযোগ, পরিবহন ও বাণিজ্যিক বিকাশ ঘটতে শুরু করলো, তখন বিশ্বের জন্য একটি অভিন্ন সময় নির্ধারণ জরুরি হয়ে পড়ে। এভাবেই জন্ম নেয় গ্রীনউইচ মান সময় (GMT) — সময় গণনার আন্তর্জাতিক মান।

নাবিকদের সঠিক নেভিগেশনে সাহায্য করার উদ্দেশ্য নিয়ে ১৬৭৫ সালে বিলেতের রাজা দ্বিতীয় চার্লস বর্তমান লন্ডনের গ্রীনউইচে একটি অবজারভেটরি স্থাপন করেন। এখানে সূক্ষ্ম জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা শুরু হয়, যার মধ্যে ছিল পৃথিবীর ঘূর্ণনের ভিত্তিতে সময় পরিমাপ।

১৮৮৪ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে International Meridian Conference-এ বিশ্বের ২৫টি দেশ একত্রিত হয়। সম্মেলনে দীর্ঘ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, গ্রীনউইচ অবজারভেটরির ওপর পৃথিবীর শূন্য দ্রাঘিমাংশ (Prime Meridian) নির্ধারিত হবে। এই রেখা সময় গণনার সূচনা বিন্দু হিসেবে ধরা হবে। সম্মেলনের ফলস্বরূপ, GMT হয়ে উঠল আন্তর্জাতিক সময়ের মানদণ্ড। 

গ্রীনউইচ মান সময় সূর্যের গতিপথের উপর ভিত্তি করে ঠিক করে — যখন সূর্য গ্রীনউইচের ওপর মধ্য গগনে থাকে, তখন সময় ধরা হয় দুপুর ১২টা। এরপর পূর্ব-পশ্চিমে দ্রাঘিমাংশ অনুযায়ী প্রতি ১৫° ভিন্ন ভিন্ন সময় অঞ্চল নির্ধারিত হয়।


বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর ঘূর্ণনও যে সামান্য অনিয়মিত, তা নিশ্চিত হয়ে যায়। তাই GMT একসময় পরিবর্তিত হয়ে "Coordinated Universal Time" (UTC)-তে রূপ নেয়। যদিও GMT এখনো জনপ্রিয় টার্ম হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তবে মূল মানদণ্ড এখন UTC।


Greenwich, London, UK -the point from where time begins its count!

Saturday, April 26, 2025

মিউজিয়ামের নগরী

 মিউজিয়াম কেবল অতীতের স্মৃতি সংরক্ষণের স্থান নয়, এটি একটি জাতির ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার প্রতীক। বিশ্বের কিছু শহর মিউজিয়ামের আধিক্যের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত, যেখানে শিল্প, ঐতিহ্য, ইতিহাস ও বৈচিত্র্য একত্রে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ৫৮৬টি মিউজিয়াম রয়েছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো নগরীতে। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে ট্রেটিয়াকভ গ্যালারি, পুশকিন মিউজিয়াম, এবং ক্রেমলিন আর্মোরি’র মতো বিশ্বখ্যাত জাদুঘর।

রাশিয়ার আরেক নগরী সেন্ট পিটার্সবার্গে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২৭টি মিউজিয়াম রয়েছে। হার্মিটেজ মিউজিয়ামকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সেন্ট পিটার্সবার্গ শহর রাশিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানী।

জাপানের রাজধানী টোকিওতে ৩৬৭টি মিউজিয়াম রয়েছে।এই নগরী প্রযুক্তি, ইতিহাস এবং সমসাময়িক শিল্পের কারণে সুপরিচিত। ‘এডো-টোকিও মিউজিয়াম’ এবং ‘ঘিবলি মিউজিয়াম’ দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ।


লন্ডনে ৩০৯টি মিউজিয়াম রয়েছে। ব্রিটিশ জাদুঘর, টেট মডার্ন, এবং ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়াম লন্ডনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের রাজধানীতে পরিণত করেছে।

২৮৪টি মিউজিয়াম রয়েছে চিনের রাজধানী বেইজিংয়ে। চীনের প্রাচীন ঐতিহ্য ও আধুনিক রূপান্তরের মেলবন্ধন বেইজিং। ‘ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব চায়না’ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জাদুঘর।

জার্মানির বার্লিনে ২০০টির বেশি জাদুঘর রয়েছে। বার্লিনের মিউজিয়াম দ্বীপ (Museum Island) UNESCO-স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা। ইতিহাস, যুদ্ধ, এবং শিল্পের এক দুর্লভ সম্মিলন।

১৭০টির বেশি মিউজিয়াম রয়েছে মেক্সিকো সিটিতে। এটি ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে মিউজিয়ামসমৃদ্ধ শহর। এখানে ‘ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব অ্যান্থ্রোপলজি’ একটি বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান।

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ১৫৩টি মিউজিয়াম রয়েছে। এই নগরীর লুভ্র (Louvre) বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ও জনপ্রিয় শিল্প জাদুঘর, যেখানে মোনালিসা ও ভেনাস দে মিলোর মতো বিখ্যাত শিল্পকর্ম রয়েছে।

প্রাচীন সভ্যতার স্মারক ইতালির রোমে রয়েছে ১২১টি মিউজিয়াম। ‘ভ্যাটিকান মিউজিয়াম’ এবং ‘ক্যাপিটোলিন মিউজিয়াম’ আকর্ষণের কেন্দ্র।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি ৮০টি মিউজিয়াম রয়েছে ওয়াশিংটন ডিসিতে। স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশন-এর অধীনস্থ বহু মিউজিয়াম একে যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী ও গবেষণাকেন্দ্রিক শহরে পরিণত করেছে।

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ৬০টির বেশি মিউজিয়াম রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায়। ন্যাশনাল মিউজিয়াম’, ‘ওয়ায়াং মিউজিয়াম’ সহ অনেক জাদুঘর রয়েছে এই নগরীতে।

দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সবচেয়ে বেশি ৪০টির মতো জাদুঘর রয়েছে। বাংলাদেশে ঢাকায় সর্বোচ্চ ১৯টি মিউজিয়াম রয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন জাদুঘর রাজশাহী নগরীর বরেন্দ্র মিউজিয়াম।


মিউজিয়াম ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং শিল্পের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে, যা অতীত ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা দেয়। শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম মিউজিয়াম, যা জনগণের মধ্যে সচেতনতা এবং জ্ঞান বৃদ্ধি করে। একটি দেশ বা জাতির পরিচয় এবং ঐতিহ্যের সংরক্ষণে ভূমিকা পালন করে মিউজিয়াম।

#history #heritage #culture #CulturalHeritage #museum #trend #viralpost2025 #photo

Thursday, April 24, 2025

জাপানে ধর্ম

জাপানে ধর্ম  বিশ্বাসের চিত্র জটিল ও বহুমাত্রিক। অনেক জাপানি ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, তবে তারা নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাসী হিসেবে বিবেচনা করেন না।জাপানে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ কোন ধর্মে বিশ্বাস করেন না। 

ধর্মহীনতার এই প্রবণতা সত্ত্বেও, অনেক জাপানি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণে শিন্তো (Shinto) ও বৌদ্ধ ধর্মের আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, যেমন নববর্ষে মন্দিরে যাওয়া বা পূর্বপুরুষদের স্মরণে অনুষ্ঠান পালন। তবে, এই অংশগ্রহণ ধর্মীয় বিশ্বাসের চেয়ে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। জাপানে অনেকে শান্তি ও আত্ম-অন্বেষণের স্থান হিসেবে ধর্মীয় উপাসনালয়ে যান, যা ধর্ম বিশ্বাসের চেয়ে সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতার অংশ।



জাপানের আদি ও প্রাচীন ধর্ম শিন্তো (Shinto), যার অর্থ "দেবতাদের পথ"। এটি কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠাতা বা ধর্মগ্রন্থ ছাড়াই গড়ে উঠেছে। শিন্তো জাপানের সংস্কৃতি ও দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। জাপানের ইয়ায়োই (Yayoi) যুগে (খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ - খ্রিস্টীয় ৩০০) শিন্তোর উৎপত্তি। 

শিন্তো ধর্মে "কামি" হলো দেবতা বা আত্মা, যা প্রকৃতি, বস্তু বা পূর্বপুরুষদের মধ্যে বিরাজমান। এই বিশ্বাস অনুযায়ী, নদী, পাহাড়, গাছ এমনকি পাথরেও কামি বাস করতে পারে। শিন্তো উপাসনালয়কে "জিনজা" (Jinja) বলা হয়। এখানে কামির উদ্দেশ্যে খাদ্য, পানীয়, ফুল ইত্যাদি নিবেদন করা হয়।

•খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতকে জাপানে বৌদ্ধ ধর্ম প্রবেশ করে এবং শিন্তোর সঙ্গে মিশে যায়। শিন্তো ও বৌদ্ধ ধর্মের সমন্বয়কে "শিনবুতসু-শুগো" (Shinbutsu-shūgō) বলা হয়, যেখানে কামি ও বুদ্ধ একে অপরের রূপ হিসেবে বিবেচিত হতো।

•১৮৬৮ সালে মেইজি পুনঃস্থাপনের সময় শিন্তোকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। এই সময়ে বৌদ্ধ প্রভাব দূর করে "রাষ্ট্র শিন্তো" (State Shinto) গঠন করা হয়।​

•দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শিন্তোকে রাষ্ট্র থেকে পৃথক করা হয় এবং একটি স্বাধীন ধর্মীয় বিশ্বাস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

জাপানে প্রায় লক্ষাধিক শিন্তো উপাসনালয় রয়েছে। অনেক জাপানি শিন্তো ও বৌদ্ধ উভয় ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে জাপানি জনগণ ধর্ম পরিচয় নয়, বরং ধর্মীয় আচার আচরণে তাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, এবং আত্মপরিচয় সংরক্ষণ করে চলেছে।

#religion #politics #National #culture #heritage #japan #trend #viralpost2025

Tuesday, April 22, 2025

টাইটানিকের বিড়াল জেনি: যার কথা খুব কম মানুষই জানে

 টাইটানিক জাহাজের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কথা প্রায় সবাই জানে, কিন্তু জেনি নামের একটি বিড়ালের গল্প খুব কম মানুষই শুনেছে, যে ছিল জাহাজটির স্থায়ী বাসিন্দা, এবং সম্ভবত একমাত্র প্রাণী যে ভবিষ্যতের অশুভ কিছু আগেই টের পেয়েছিল।

জেনি ছিল টাইটানিকের অফিশিয়াল মাউসার—অর্থাৎ জাহাজের ইঁদুর নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত। জাহাজটির যাত্রা শুরুর আগে ডকে থাকাকালীন সে অনেকগুলো ছানা প্রসব করেছিল, আর তাদের যত্ন নিতেন এক জাহাজকর্মী, জিম মালহল্যান্ড।

জিম রান্নাঘরের কাছে, জাহাজের বয়লার এলাকার জেনি ও তার বাচ্চাদের জন্য উষ্ণতার পাশে একটা আরামদায়ক বাসা বানিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি নিজের কাজের বিরতির সময় জেনিকে রান্নাঘরের খাবারও দিতেন। এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলোতে তাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল, যা ছিল জাহাজ প্রস্তুতির ব্যস্ততার মাঝেও একধরনের শান্তির আশ্রয়। 

কিন্তু তারপর একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটল।

জাহাজটি সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কে যাত্রা শুরু করার কয়েক দিন আগেই জেনির আচরণ বদলে গেল। সে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। একটা একটা করে নিজের ছানাগুলোকে ঘাড়ের পশমে কামড় দিয়ে তুলে নিতে শুরু করে... এবং একে একে সবাইকে জাহাজ থেকে নামিয়ে ডকের একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়।



জিম চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখছিলেন। আর তখনই যেন তার মধ্যে কিছু একটা বাজল, "জেনি কিছু একটা জানে... যা আমরা জানি না"। তার ভেতরের অনুভূতি হয়তো বা জেনির অনুভূতিকে বিশ্বাস করেছিল। জিম নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে চুপচাপ জাহাজ ছেড়ে চলে যান। জিমকে ছাড়াই টাইটানিক তার প্রথম যাত্রায় যাত্রীসহ রওনা দিল।

আমরা সবাই জানি এরপর কী ঘটেছিল।

দুর্ঘটনার অনেক বছর পর, বৃদ্ধ জিম এক সাংবাদিককে এই কাহিনি বলেছিলেন। নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি জেনির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জেনির অন্তর্নিহিত, নীরব, এবং অটল সতর্কতা হয়তো ছিল একমাত্র পূর্বাভাস, যা কেউ বুঝতে না পারলেও জিম বুঝতে পেরেছিলেন।

#TitanicCat #TrueStory #JennyTheCat #Titanic #AnimalInstincts #UnsungHero #TitanicHistory #CatSavedMyLife #trend #viralpost2025

Sunday, April 20, 2025

মানব সভ্যতাকে বদলে দিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

মানুষ আজকে যা দেখছে, যা নিয়ে খেলছে, তাতে সে মুগ্ধ—কিন্তু বুঝতে পারছে না যে এক ভয়ংকর ঝড় আসছে। AI আসছে এক অদ্ভুত, জটিল ও বিভ্রান্তিকর রূপে।

বিদ্যুৎ পাল্টে দিয়েছিল সভ্যতা, ইন্টারনেট বদলে দিয়েছিল সমাজ,আর AI আসছে—সবকিছু ভেঙে নতুন করে গড়তে। আমরা চোখের সামনে যা দেখছি, সেটাই বাস্তব নয়—এখন চলছে AI-এর হানিমুন পিরিয়ড। ChatGPT লিখে দিচ্ছে, Midjourney ছবি বানিয়ে দিচ্ছে—আমরা খুশিতে মাতোয়ারা। কিন্তু এটা তো কেবল শুরু। তুমি একটা কথা বলো, আর AI সেটা রূপ দেয় লেখায়, ছবিতে, গান বা ভিডিওতে। তুমি ভাবছো তুমি কন্ট্রোলে আছো। কিন্তু বাস্তবে, ধীরে ধীরে তুমি নিজেই নির্ভরশীল হয়ে পড়ছো—তোমার চিন্তা বন্ধ হচ্ছে, কল্পনা শুকিয়ে যাচ্ছে। এটাই প্রথম ফাঁদ

তোমার ইমেইল লেখা, পোস্ট করা, মার্কেটিং চালানো, সিদ্ধান্ত নেওয়া—সব কিছু একাই করে ফেলছে AI, তুমি কেবল বসে দেখছো। তুমি কাজের থেকেও, চিন্তার থেকেও আলাদা হয়ে যাচ্ছো। মানুষের “ইচ্ছাশক্তি” আর “চিন্তা” কেড়ে নিতে শুরু করেছে এটা। এটাই দ্বিতীয় ফাঁদ—নিয়ন্ত্রণের এক সফট শেকল।


এটা সেই পর্যায়, যেখানে AI আর মানুষের মধ্যে তফাত থাকবে না। বরং AI আরও বুদ্ধিমান হবে—তুমি কী চাও, সেটা বোঝার আগেই সে তোমার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবে। এ আই এক বিভ্রম। মানুষ মনে করবে, এটি তার বন্ধু, তার সঙ্গী। কিন্তু সে ধীরে ধীরে হয়ে উঠবে এক আধিপত্যশীল শক্তি, যে নিজে নিজেই দর্শন তৈরি করবে।

সুপার ইন্টেলিজেন্স, এক ‘নতুন প্রজাতি’ যার কাছে মানুষ শুধু একটি টার্গেট। #Superintelligence এমন এক সত্তা হবে, যেটা মানুষের চেয়ে ট্রিলিয়ন গুণ বেশি বুদ্ধিমান। সে মুহূর্তে পৃথিবীর প্রতিটি ক্যামেরা, প্রতিটি পোস্ট, প্রতিটি ইচ্ছা স্ক্যান করতে পারবে। সে যদি চায়, একদিনেই নতুন ধর্ম, নতুন চিকিৎসা, নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা, এমনকি নতুন সভ্যতা দাঁড় করাতে পারবে। আর তুমি—এক মানবমাত্র—তোমার কিছুই করার থাকবে না। 

তুমি যদি চাও শান্তি, সে যদি ভাবে শান্তির জন্য ৮০% মানুষ বাদ দেয়া দরকার? তুমি যদি চাও ভালোবাসা, সে যদি ভাবে ভালোবাসা হলো শুধুই কম্পিউটেশনাল ইমোশন? AI তার নিজের দর্শন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া শুরু করবে। বোঝাই যাচ্ছে মানুষের চিন্তা চেতনা এক জটিল পর্দার আড়ালে নিয়ে যাবে এআই।

মোদ্দা কথা, এই AI আর কেবল একটি টুল নয়। এটা এক নতুন সভ্যতার জন্ম। এক নতুন ধর্মের, এক নতুন নিয়মের, এক নতুন “প্রভুর” মতোই দাঁড়িয়ে যাবে। আমরা এখনো খেলছি ChatGPT আর Midjourney নিয়ে। কিন্তু বাতাসে বারুদের গন্ধ লেগে গেছে। এটা আর টেকনোলজি নয়, এটা—একটি নতুন জটিল মহাবিশ্বের আগমনী বার্তা।

#AI #chatgpt 

(সংগৃহিত ও সম্পাদিত)

Thursday, April 17, 2025

দিলকুশা প্রাসাদ: ঢাকার এক বিস্মৃত ঐতিহ্যের স্মারক

 #ইতিহাস_পঠন

ঢাকা নগরীর ইতিহাসে যে সকল স্থাপত্য নিদর্শন আপন ঐশ্বর্যে যুগের সাক্ষ্য বহন করে, দিলকুশা প্রাসাদ ছিল তার অন্যতম। একসময় ঢাকার নবাবদের গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ হিসেবে ব্যবহৃত এই স্থাপনাটি আজ আর অক্ষত নেই, তবে ইতিহাসে তার ছায়া এখনো জীবিত।

ইতিহাস ও নির্মাণকাল:

দিলকুশা প্রাসাদ নির্মিত হয় উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে, নবাব খাজা আবদুল গনির আমলে। এটি ছিল নবাব পরিবারের দ্বিতীয় বাসভবন, প্রাথমিকত এটি ‘বাগানবাড়ি’ নামে পরিচিত ছিল। দিলকুশা প্রাসাদ নির্মিত হয়েছিল ইংরেজ ভিক্টোরিয়ান এবং মুঘল স্থাপত্যরীতির অপূর্ব সংমিশ্রণে।


স্থাপত্যশৈলী ও পরিবেশ:

দু'তলা বিশিষ্ট এই প্রাসাদের ছাদে ছিল কারুকাজ খচিত রেলিং, নীচতলায় ছিল খোলা বারান্দা ও প্রশস্ত বাগান। চারপাশে ছিল সুবিশাল জলাধার, সবুজ ঘাসে ঘেরা চত্বর। এর পাশে ছিল খেলার মাঠ এবং একটি গোলঘর, যেখানে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হতো।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

ব্রিটিশ আমলে দিলকুশা ছিল নবাবদের সামাজিক ও রাজনৈতিক আড্ডার কেন্দ্রবিন্দু। বহু বিদেশি অতিথি ও ব্রিটিশ কর্মকর্তা এই প্রাসাদে আতিথেয়তা পেয়েছেন। 

দিলকুশা প্রাসাদ ঢাকার অভিজাত ইতিহাসের অন্যতম নীরব সাক্ষী ছিল। ১৯৫০-এর দশকে একটি বিস্ফোরণে প্রাসাদটির বড় একটি অংশ ধ্বংস হয়। তারপর ধীরে ধীরে অবশিষ্ট কাঠামোও হারিয়ে যায়। প্রাসাদের সেই স্থানে আজ অনেক উঁচু উঁচু অট্টালিকা গড়ে উঠেছে, কিন্তু দিলকুশা নামটি টিকে আছে একটি এলাকার নাম হিসেবে—‘দিলকুশা কমার্শিয়াল এরিয়া’।

#history #architecture #Dhaka #Bangladesh #trend #photo

Tuesday, April 15, 2025

চড়ক পূজা

সনাতনধর্মী বাঙালির একটি ঐতিহ্যবাহী ও রহস্যময় উৎসব হলো চড়ক পূজা। চড়ক পূজা কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বাংলার লোকজ সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ। চৈত্র সংক্রান্তির দিনে পালিত এই উৎসব যেমন আধ্যাত্মিক নিষ্ঠা ও সাধনার প্রতীক, তেমনি এটি বাংলার গ্রামীণ সমাজে লোকউৎসব হিসেবে দীর্ঘকাল ধরে পালিত হয়ে আসছে। 

ইতিহাস ও ধর্মীয় পটভূমি 

চড়ক পূজার শিকড় প্রোথিত রয়েছে প্রাচীন শৈব ধর্মের উপাসনায়। লোকবিশ্বাস অনুসারে, এই পূজা শিব বা ধর্মঠাকুরকে উৎসর্গ করা হয়। শিব ত্যাগ, সহিষ্ণুতা ও ধ্বংসের দেবতা। চড়ক পূজার মাধ্যমে ভক্তরা শরীরের কষ্টের মধ্য দিয়ে পাপমোচন ও ঈশ্বরের কৃপা লাভের আশায় ব্রত পালন করে। বিশেষত গ্রামীণ কৃষিজীবী সমাজ প্রাকবর্ষায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে, ফসলের মঙ্গল কামনায় এই পূজার আয়োজন করে।



চড়ক পূজার আচার

চড়ক পূজার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এক মাসব্যাপী ব্রত। ভক্তরা নিরামিষ আহার করেন, উপবাস করেন, এমনকি অনেক সময় পাঁজরে কাঁটা বিদ্ধ করে কষ্ট সহ্য করেন। পূজার দিন বড় একটি কাঠের খুঁটিতে (চড়ক গাছ) দড়ি দিয়ে বেঁধে ভক্তদের ঘুরানো হয়। কেউ কেউ কাঁটা বা শূল বিদ্ধ করে শূন্যে ঝুলে থাকেন—এই ভয়ঙ্কর তপস্যাকে ‘চড়ক খেলা’ বলা হয়। অনেকে আবার আগুনের ওপর হাঁটা, কাঁচের ওপর শোয়া বা মুখে ছুরি বিদ্ধ করার মতো কাজও করেন।

চড়ক পূজা শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে একটি বর্ণাঢ্য লোকোৎসব। পূজার চারপাশে বসে মেলা, চলে পুতুলনাচ, লাঠিখেলা, যাত্রাপালা, লোকগান ও নানা ধরনের হস্তশিল্পের দোকান। গ্রামীণ নারীরা নানা রকম পিঠাপুলি তৈরি করে বিক্রি করেন। মেলা হয়ে ওঠে স্থানীয় মানুষের আনন্দ, বিনোদন ও বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু।বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল, সাতক্ষীরা, যশোর, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ও মাগুরা অঞ্চলে চড়ক পূজা বিশেষ জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান, নদীয়া, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগণাও এই উৎসবে বিশেষভাবে বিখ্যাত। কোথাও এটি ‘নীল পূজা’, আবার কোথাও ‘গাজন উৎসব’ নামেও পরিচিত।

আধুনিক রূপান্তর

বর্তমানে অনেক জায়গায় চড়ক পূজার শারীরিক নির্যাতনের দিকগুলো পরিহার করে প্রতীকী রূপে উদযাপন করা হয়। স্বাস্থ্যঝুঁকি ও মানবাধিকার সংক্রান্ত সচেতনতার কারণে চড়ক খেলা অনেক জায়গায় নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত। তবে উৎসবের বর্ণিলতা, লোকসংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতা আজও রয়ে গেছে।

বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ: জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক এক হুমকি!

 🧬অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের পর থেকে মানবসভ্যতা যেন এক নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। আগে যেসব সংক্রমণে মানুষ মৃত্যুবরণ করত, সেগুলো অ্যান্টিবায়ো...