Saturday, July 13, 2019

গোসলে কি সবসময়ই সাবান ব্যাবহার করা উচিত?


ত্বক শরীরের একক বৃহত্তম অঙ্গ যা রোগ প্রতিরোধ এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রাখে। সাবান বা ক্লিনজার ত্বক পরিস্কার এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। বার, ক্লিঞ্জার, বডি ওয়াশ, শাওয়ার জেল এ সব কিছুই সাবানের নানা ধরন। চর্বি বা তেলের সাথে ক্ষার মিশিয়ে সুগন্ধি যোগ করে এগুলো তৈরি করা হয়। কিন্তু এই সাবানই আবার ত্বকের ক্ষতির কারন হতে পারে। এজন্য সাবান বা ক্লিঞ্জারের বাবহার নিয়ে গবেষকদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। আসুন জেনে নেই সাবান ত্বকে কি ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় ত্বকে একধরণের প্রোটিন এবং তেল থাকে যা রোগ প্রতিরোধে দেয়াল হিসেবে কাজ করে থাকে। বেশি ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করলে এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রদাহ সৃষ্টি করে। প্রদাহযুক্ত ত্বকে খুব সহজেই নানা ধরনের জীবাণু আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ত্বক শুষ্ক করে, একজিমা, অ্যালার্জি বাড়িয়ে দেয় ত্বকের গ্রন্থি থেকে একধরনের তেল নিঃসৃত হয় যা ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং মসৃণতা রক্ষা করে থাকে। সাবান বাবহারে এই তেলও পরিস্কার হয়ে যাওয়ার ফলে ত্বক রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়ে পরে। শুষ্ক ত্বকে চুলকানি অনুভুত হয়। যাদের একজিমা, অ্যালার্জি রয়েছে সেটি বেড়ে যেতে পারে। সাবান তৈরিতে ব্যাবহার করা সুগন্ধির কারনেও অ্যালার্জি হতে পারে। ব্রণ বেড়ে যেতে পারে সাবান ব্যাবহারে ত্বকে জলীয় এবং তৈলাক্ততা কমার সাথে সাথেই তেল নিঃসরণকারি গ্রন্থি গুলো আগের তুলনায় বেশি তেল তৈরি করতে থাকে। যা ব্রণ তৈরিতে সহায়তা করে। আক্রান্তদের ব্রণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। বলিরেখা বাড়িয়ে দেয় সাবান বাবহারে তেল এবং সেরামাইড চলে যাওয়ার ফলে ত্বকের ভাঁজ এবং বলিরেখা বেশি গোচরীভূত হয়। সমাধান কি? • বার/বডি ওয়াশ/ ক্লিঞ্জার/শাওয়ার জেল কেনার সময় ক্ষারীয় মাত্রা দেখে কিনুন। ৭ হলে সবচেয়ে ভালো না হলে কাছাকাছি মাত্রার কিনুন। • গ্লিসারিন, সেরামাইড যুক্ত বার/বডি ওয়াশ/ ক্লিঞ্জার/শাওয়ার জেল কেনার চেষ্টা করুন। • সাবানের পরিবর্তে অয়েল বেজড ক্লিঞ্জার ব্যবহার করতে পারেন, যা সাবানের মতোই ত্বক পরিস্কার করে থাকে। • গোসলের সময় মুখ এবং শরীররে সন্ধিস্থান (বগল, কুচকি) ছাড়া অন্যস্থানে প্রতিদিন সাবান ব্যাবহার না করাই ভাল। • গোসলের পর ময়েশচারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।

Friday, May 31, 2019

প্রসাধন সামগ্রী (কসমেটিক) কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?



ধারনা করা হয় মানুষ প্রায় ৬ হাজার বছর ধরে রূপচর্চার জন্য প্রসাধনী ব্যাবহার করে আসছে। দিনে দিনে প্রসাধন সামগ্রীর ব্যাবহার যেমন বেড়ে চলেছে তেমনি এগুলো ব্যাবহারে সৃষ্ট পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝুঁকিও বাড়ছে। অনেক গবেষক ইতিমধ্যেই বাছ বিচার না করে প্রসাধন সামগ্রী ব্যাবহার করার প্রবণতাকে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছেন। 
বর্তমানে সারাবিশ্বে অসংখ্য কোম্পানি নানা ধরনের প্রসাধন সামগ্রী প্রস্তুত করছে। এসব প্রসাধন সামগ্রী তৈরি করতে কমবেশি ১৩ হাজার ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। মুলত এই রাসায়নিক দ্রব্যগুলোই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতা তৈরির জন্য দায়ী। দৈনন্দিন ব্যাবহার করা প্রসাধন সামগ্রী তৈরি করতে সাধারণত যেসব রাসায়নিক ব্যাবহার করা হয় এবং সেগুলো থেকে কি ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে, আসুন একটু ধারনা নেই।
ইউরিয়াঃ বেবি কেয়ার থেকে শুরু করে সবধরনের প্রসাধন সামগ্রিতেই এটির উপস্থিতি রয়েছে। এর কারণে ত্বকের অ্যালার্জি, ক্যান্সার, এমনকি বিকলাঙ্গ শিশুও জন্ম নিতে পারে। 
 ডাই-অক্সেনঃ সাবান, শ্যাম্পু, টুথপেস্ট, মাউথওয়াসে থাকে। ত্বক, স্তন এবং লিভার ক্যান্সারের ঝুকি রয়েছে। 

ফরমালডিহাইডঃ নষ্ট হওয়া রোধ করতে সব ধরনের প্রসাধনিতেই ফরমালিন ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। এটি অ্যালার্জি এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি করে থাকে। 

ভারী ধাতুঃ লেড, আর্সেনিক, কেডমিমাম, নিকেল, মারকারি ইত্যাদি ভারি ধাতু রঙ্গিন প্রসাধন সামগ্রিতে ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। স্বল্পমেয়াদে এগুলো ত্বকের অ্যালার্জির কারন হতে পারে। তবে দীর্ঘদিন ব্যাবহার করলে এগুলো ত্বকের নিচে জমার পর শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে শ্বাসকষ্ট, বুকে বাথা, বমি, মাথ বাথা, ডাইরিয়া, ক্যান্সার, হাড় ক্ষয়, স্নায়ু, লিভার এবং কিডনি রোগের কারন হতে পারেন।
  
প্যারাবেনঃ এটি জীবানুনাশক গুনের কারনে পচন রোধে প্রসাধনীর উপাদান হিসেবে থাকে। সাধারনত ডিওডরেন্ট, লোশন, এবং চুলের প্রসাধন সামগ্রিতে থাকে। ক্যান্সার এবং ত্বকের অ্যালার্জির কারন হতে পারে। 
থেলেটঃ নেল পলিশ, লোশন, পারফিউম, চুলের প্রসাধন সামগ্রিতে থাকে। স্তনের ক্যান্সার এবং বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম দেয়ার কারন হতে পারে 
ট্রাইক্লোসানঃ সাবান এবং শ্যাম্পুতে জীবাণুনাশক হিসেবে থাকে। হরমোনজনিত সমস্যা, লিভার এবং কিডনি রোগের কারন হতে পারে। 
  রঙ্গ এবং সুগন্ধিঃ প্রসাধনী তৈরিতে নানা ধরনের কৃত্রিমম রঙ্গ এবং সুগন্ধি যোগ করা হয়, যেগুলো ত্বকের অ্যালার্জি থেকে শুরু করে ক্যান্সারের কারন হতে পারে। 

উল্লেখিত রাসায়নিক উপাদানগুলো ছাড়াও আরও অনেক রাসায়নিক দ্রব্য দৈনন্দিন ব্যাবহার করা প্রসাধনিতে থাকে। ঔষধের রাসায়নিক নিয়ে যতোটা পরিক্ষা নিরীক্ষা এবং গবেষণার পর অনুমোদন দেয়া হয় প্রসাধনীর ক্ষেত্রে ঠিক ততোটা নিয়মকানুন মানা বা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয় না। 

বাংলাদেশে ভেজাল প্রসাধন সামগ্রীর কথা বাদ দিলেও, স্বয়ং ইউরোপ আমেরিকার উন্নত দেশগুলোতেও প্রসাধনিতে ব্যাবহার করা রাসায়নিক দ্রব্যের মাত্র ১০% নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা বা গবেষণা হয়েছে। এসব গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা কোন প্রসাধনী বাজারজাত করার অনুমোদন দিয়ে থাকে। কাজেই প্রসাধনী ব্যাবহারে ব্যক্তিগত সচেতন‌‌তা বড় ভুমিকা পালন করে থাকে। 
প্রতিরোধে করণীয় 
 • ত্বকে চুলকানি, জ্বালাপোড়া, লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি অ্যালার্জির লক্ষন। এগুলো কোন প্রসাধন সামগ্রি ব্যাবহার করার সাথে সাথে বা কিছু দিনের মধ্যেই আচ করা যায়। আঁচ করার সাথে সাথে বন্ধ করে দিন। 
• তবে দীর্ঘ মেয়াদে যেসব শারিরিক সমস্যার তৈরি করে তা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন না হলে মেকআপ নেয়া থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজন শেষে যত দ্রুত সম্ভব মেকআপ পরিস্কার করুন। 
 • নতুন প্রসাধন সামগ্রী কেনার সময় গায়ে লিখিত উপাদান দেখে নিতে পারেন। ব্যাবহার করার আগে ত্বকের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 
 • সাবান এবং সুগন্ধি কম ব্যাবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। দৈনন্দিন ব্যবহারে শুষ্ক ত্বক মসৃণ করার জন্য প্রসাধনী কোম্পানির তৈরি সামগ্রী ব্যাবহার না করে, প্রাকৃতিক তেল যেমন অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল ইত্যাদি ব্যাবহার করতে পারেন। 
  লেখকঃ এম আর করিম রেজা জাকার্তা প্রবাসী ত্বক এবং সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ

Monday, January 30, 2012

সোরিয়াসিস: নিয়ন্ত্রণ করুন,স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে থাকুন


সোরিয়াসিস/psoriasis ত্বকের একটি প্রদাহ জনিত রোগ। জনসংখ্যার ২-৪% এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে এবং আক্রান্তদের এক তৃতীয়াংশ বংশগতভাবে অর্জন করেন । নারী পুরুষ নির্বিশেষে যে কোন বয়সীরা এ রোগে আক্তান্ত হতে পারেন তবে তিরিশর্ধোরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।এটি কোন সংক্রামক রোগ নয়, কাজেই সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় না।

সাধারণত আমাদের ত্বকের কোষ সমূহ একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধধমে নির্দিষ্ট সময় পর পর ঝরে যায় এবং নতুন কোষ তৈরি হয়। প্রক্রিয়াটি খুবই সমন্বিত ভাবে হয়ে থাকে বিধায় স্বাভাবিকভাবে বোঝা যায় না।সোরিয়াসিস রোগে ত্বকের ইপিডারমিস এ অবসশিত কোষ সমূহ খুব দ্রুত ব্রিধি পায় এবং ত্বকের উপরে এক ধরণের প্লাক/plaque তৈরি করে। লক্ষ্মণ ও মাত্রা অনুযায়ী এ রোগ কয়েক ধরনের হতে পারে।

দেখতে কেমন এবং লক্ষ্মণ কি?

আক্রান্ত অংশে রুপালী সাদা আঁশ দ্বারা আবৃত,উজ্জ্বল লালচে বর্ণের প্লাক/খত দেখা যায়।সাধারণত মৃদু চুলকানি অনুভুত হতে পারে।

কোন অংশ আক্রান্ত হয়?

সাধারণত কনুই, হাঁটু,মাথা, হাত ও পা এর নখ হয়।তবে ধরন ভেদে বিভিন্ন অংশ এমনকি পুরো শরীর আক্রান্ত হতে পারে।

কি কারণে হয়?


বংশগত কারণ ছাড়া,এ রোগ এর নির্দিষ্ট কোন কারণ নির্ণয় করা দুরহ তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে দ্রুত ব্রিধি হতে পারে যেমন কোন ধরনের সংক্রামন, ত্বকে আঘাত জনিত কারনে,আবহাওয়াজনিত শীতে বেশি এবং কিছু ওশধ সেবনের কারনে।

চিকিৎসা 

রোগ এর ধরন অনুযায়ি চিকিথশা দেয়া হয়ে থাকে,

অল্প অংশ আক্রান্ত হলে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ক্রিম,লশান,জেল ইত্তাদি রুপে ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়ে থাকা;

অনেক বেশি অংশে ছড়িয়ে পড়লে মুখে খাবার ওষুধ,ultraviolet ray,PUVA থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হয়।

মনে রাখবেন ত্বকের অন্য রোগেও সরিয়াসিস এর মত প্লাক দেখা দিতে পারে।এ রোগ কখনই পুরোপুরি ভাল হয় না এবং কখনই জীবন হানীর কারন হয় না।নিয়মিত চিকিথশা গ্রহনের মাধ্যমে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা জায়। কাজেই নিয়মিত চিকিথশা নিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন।

চিকুনগুনিয়া-অন্যান্য জ্বরের মতই খুব সাধারণ অসুখ

চিকুনগুনিয়া‌ (Chikungunya) একটি মশা বাহিত আলফা ভাইরাসজনিত রোগ। এটি আফ্রিকা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার রোগ হলেও ইদানীং ভারতে এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, এমনকি আমাদের দেশের কিছু এলাকাতে আক্ত্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে। ঢাকা শহর এবং সাভার এ অনেকে আক্রান্ত হওয়ার কারনে এবং কিছু টেলিভিশান চ্যানেলে প্রচার এর কারনে অনেকেই অহেতুক ভীতিতে ভুগছেন। এ রোগে মৃত্যু ঝুকি না থাকলেও জটিলতার কারনে ৫দিন থেকে ১২ মাস পর্যন্ত ভোগান্তি হতে পারে এবং সাধারন কাজ কর্মে অসুবিধা হতে পারে, এমনকি চলা ফেরা করতেও সমস্যা হতে পারে। মহামারি আকারে দেখা দিতে পারে, এজন্য মোকাবেলা করতে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহনের প্রয়োজন হয়।


কিভাবে ছড়ায়

আক্রান্ত রোগীকে কামড়ানো এডইস মশা সুস্থ কাউকে কামড়ালে এ রোগের বিস্তার লাভ করে। ২ থেকে ৫ দিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে। মশা- মানুষ-মশা এভাবে ছড়ায়।

লক্ষণ কি?


প্রথমে জ্বর দেখা দেয়। ডেঙ্গু জ্বর এর মত ত্বকে লালচে র‍্যাশ দেখা দেয়। জ্বর ২ থেকে ৫ দিন পরে চলে যায়। গিরায় গিরায় ব্যাথা (arthritis) অনুভুত হয়। চোখ লালচে হতে পারে। ঘুম কমে জেতে পারে।
গিরায় গিরায় ব্যাথা (arthritis) অনেক সময় ২ বছর পর্যন্ত থাকতে পারে।
সাধারনত কম বয়সীরা ৫-১৫ দিন, মধ্য বয়সীরা ১-৩ মাসে সুস্থ হয়ে উঠেন। বেশি বয়সীদের সম্পুর্ন সুস্থ হতে প্রায় ২ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

রোগ নির্ণয়

লক্ষণ দেখে রোগ নির্ণয় করা যায়।

ল্যাবরেটরিতে সেরোলজিকাল পরীক্ষা এবং ভাইরাস আইসোলেসন এর দ্বারা সনাক্ত করা যায়।

চিকিৎসা 

সাধারনভাবে অন্যান্য ভাইরাস জনিত রোগের মতো এই রোগের চিকিৎসায় কোন এন্টি বায়োটিক (antibiotic) লাগে না। লক্ষন অনুযায়ী জ্বর ও ব্যাথা নাশক ঔষধ দেয়া হয়।
বয়স্কদের ক্ষেত্রে কোন কোন ক্ষেত্রে  প্রায় ২ বছর পর্যন্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হতে পারে।

প্রতিরোধ

ভাইরাসজনিত রোগ হলেও, এ রোগের কোন প্রতিষেধক টিকা নেই।
মশক নিয়ন্ত্রন এর মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
মশা যাতে কামড়াতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
আক্রান্ত রোগীকে আলাদা ভাবে মশারির ভিতর রাখা উচিত।

রোগটি আমদের দেশে একেবারে নতুন বিধায়, জর আক্রান্ত হলে ,ভীত না হয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহন করুন।

ত্বকের প্রদাহজনিত রোগ ‘ডারমাটাইটিস’

প্রদাহজনিত/Inflammatory রোগের মধ্যে ‘ডারমাটাইটিস’ই ত্বকে সর্বাধিক দেখা যায়।অনেকে ত্বকে কোন ধরণের র‍্যাশ’/ফুসকুড়ি হলেই ডারমাটাইটিস বা একজিমা মনে করেন,এ ধারনা ঠিক না।আবার ডারমাটাইতিস এবং একজিমা সম্পূর্ণ আলাদা রোগ। কিন্তু

ডারমাটাইটিস/Dermatitis ছাড়াও ত্বকের অনেক রোগে রাশ/ফুসকুড়ি দেখা যায়।

কেমন দেখতে?

ডারমাটাইটিস এর ফুসকুড়ি লাল,ধারযুক্ত বা ধারহিন হতে পারে।রোগ আক্রান্তের সময় এর ভিত্তিতে ফুসকুড়িতে পানি বা স্তর এর আবরণ থাকতে পারে।তবে চুলকানি অবশ্যই থাকবে।স্বল্প সময় এর হলে পানি বা ভিজা থাকে কিন্তু অনেক দিনের হলে স্তরযুক্ত আবরণ থাকে।



ধরন কি কি?

■কি উপায়ে বা কি কারণে ডারমাটাইটিস হয়েছে,এর উপর ভিত্তি করে একে ভাগ করা হয়ে থাকে,যেমন
■আল্ল্যেরজিক/allergic কনটাক,
■ইররইতেন্ত/irritant কনটাক,
■এঁটোপিক বা বংশগত,
■ডিসহাইড্রটিক,
■সেবরিক,
■লিচেন সিমপ্লেক্সক্রনিকাস
■নুম্মুলার,
■ডাইয়াপার,
■স্তাসিস,
■কসমেটিক বা প্রসাধনজনিত ইত্যাদি।
চিকিৎসা

কি ধরণের ডারমাটাইটিস হয়েছে নির্ণয়এর পর উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়া হয়।

ত্বকে লাগানোর ক্রিম,লশান দেয়া হয় ।

প্রয়োজনে মুখে খাবার অশুদও লাগতে পারে।



প্রতিরোধ

■ত্বক মসৃণ রাখার চেষ্টা করুণ, ত্বকের ধরন অনুযায়ী মইশচারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
■ত্বক ক্ষতি করতে পারে এমন কোন বস্তু থেকে দূরে থাকুন।
■নতুন কোন প্রসাধন ব্যাবহার এর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


মনে রাখবেন ডারমাটাইটিস ছাড়াও ত্বকের এবং শরীরের ভিতরের অনেক রোগেও ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। ডারমাটাইটিস এর চিকিৎসা গ্রহন করতে দেরি করলে জটিল ইনফেকশন হতে পারে এবং শিশুদের ক্ষেত্রে খুব দ্রুত ছড়িয়ে জীবনহানির কারন হতে পারে ,কাজেই সময়মত চিকিৎসা নিন,শুস্থ থাকুন।

Friday, September 30, 2011

ত্বকের ক্যান্সার ম্যালিগন্যান্ট মেলানমাঃ মৃত্যুর কারণ হতে পারে

শরীরের কোন স্থানের কোষ অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকলে ,সাধারনভাবে এ প্রক্রিয়াকে ক্যান্সার বলা হয়।অন্যস্থানে দ্রুত ছড়ীয়ে মৃতর কারণ হয়ে থাকে।ত্বকেও এ ধরনের পরিবর্তন হতে পারে। ত্বকে নানা প্রকারের টিওমার হয়ে থাকে,যেমন নেভাস,চেরি আঙ্গিওমা,সেবরিক কেরাতসিস,লাইপমা, ফিব্রমা,ছিস্ত, কেরাতএকান্থমা, গ্রানুলমা,লেন্তিগা ও কান্সারজনিত টিওমার।ত্বকের ক্যানসার তিন প্রকার বেসাল ছেল,এসকুয়ামাস ছেল ও ম্যালিগন্যান্ট মেলানমা।অন্য দুটি খুব বেশি মারাত্নক না হলেও, ম্যালিগন্যান্ট মেলানমা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ২০০০০০ নতুন লোক আক্রান্ত হয়ে থাকে এবং এর কারনে ৫০০০০ মৃত্যু হয়। আস্ত্রলিয়া,আমেরিকা এবং ইউরোপ এ বেশি হয়ে থাকে।মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রে ১% লোক জীবনে একবার এ রোগে আক্তান্ত হয়ে থাকে। আউস্ত্রেলিয়া এর কুইন্সল্যান্ডে এ কেন্সার এর প্রাদুর্ভাব সব চেয়ে বেশি।
ম্যালিগন্যান্ট মেলানমা কি
ত্বকে মেলানোসাইট নামের এক ধরনের কোষ এর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে এটি হয়ে থাকে। তকের ভিতর ও বাহিরের স্তরের মাঝে এ কোষ পাওয়া যাই। খুব দ্রুত এ ক্যান সার ছড়ীয়ে পরে বিধায়,এটি একটি মারাত্নক স্বাস্থ্য সমশা।
কি কারনে হয়ে থাকে
সঠিক কারন জানা জাইনি,তবে সূর্য রন্সমি,বংশগত কারনে হতে পারে, আবার যাদের তিল বেশী তাদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবনতা বেশি।
কিভাবে বুঝবেন
তকের কোন স্থানে অস্বাভাবিক নতুন পরিবরতন যেমন রঙ,টিওমারজাতিও,তিল আকারে বাড়তে থাকা/রক্পাত হওয়া /চুলকানো ইত্তাদি।আকৃতি অসামঞ্জুরনপূর্ণ,৬ মি,মি এর উপরে হয়ে থাকে,একের অধিক রাঙ্গান,কিনারা অমশ্রিন।
চিকিৎসা
একেবারে প্রথম দিকে ধরা পরলে কোন অসুবিধা হয় না বা জীবন হানীর ঝুঁকি থাকে না,তবে রোগ এর বিস্তার ভেদে চিকিৎসা ও ঝুকি ভিন্ন হতে পারে।সার্জারির মাধ্যমে টিওমার অপসারণ করার পর কেমোথেরাপি ও রেডিও থেরাপির মাধদমে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে।
প্রতিরোধ
সূর্যালোক থেকে দূরে থাকুন,ছাতা/সান ইস্ক্রীন ব্যাবহার করুন;
■আপনার শরীরের তিল গুলো নিয়মিত খেয়াল রাখুন, পরিবর্তন লক্ষ করলে ডাক্তার এর পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না ;
■তকে যে কোন পরিবর্তন লক্ষ করার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন দেরি করা মানেই মৃত্যু ডেকে আনা!!!!

Thursday, July 28, 2011

কুষ্ঠ নিরাময়যোগ্য সংক্রামক রোগ

কুষ্ঠ মানবসভ্যতার একটি প্রাচীনতম রোগ। মিসর, চীন ও ভারতীয় প্রাচীন ইতিহাসেও এ রোগের উল্লেখ রয়েছে। ভয়, কুসংস্কার এবং লজ্জার কারণে আক্রান্তরা এটিকে প্রকাশ করতে চান না বা চিকিৎসা গ্রহণে কুণ্ঠাবোধ করে থাকেন। বলা হয়ে থাকে 'সমাজ কুষ্ঠরোগীকে ভয় পায় আবার কুষ্ঠ আক্রান্তরা সমাজকে ভয় পায়।

' কুসংস্কারই 'কুষ্ঠ' চিকিৎসা ও প্রতিরোধে মূল প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে অথচ সময়মতো ও সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে এটি একটি পূর্ণ নিরাময়যোগ্য রোগ। প্রচলিত কুসংস্কারগুলোর একটি হচ্ছে 'পাপিষ্ঠ ব্যক্তি বা তাদের বংশধরগণ' এ রোগে আক্রান্ত হয়। বাস্তবে 'মাইকো ব্যাকটেরিয়াম লেপ্রি' নামে একটি জীবাণু এ রোগের জন্য দায়ী।

অত্যধিক জনসংখ্যা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রোগটি ছড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। পৃথিবীব্যাপী প্রায় ৮০টি দেশে এ রোগের বিস্তার রয়েছে। আমাদের দেশে বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর, সিলেট, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, বগুড়া ও ঢাকা জেলায় এর প্রাদুর্ভাব রয়েছে। উপজেলা ভিত্তিতে প্রায় ১২০টিতে এর বিস্তার রয়েছে। মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা এ রোগে আক্রান্ত হয় বেশি।

লক্ষণ : এ রোগের জীবাণু সাধারণত ত্বক এবং ত্বকের নিকটবর্তী স্নায়ুকলাকে আক্রান্ত করে। আক্রান্ত স্থান অপেক্ষাকৃত বিবর্ণ হয়ে থাকে। ম্যাকুউল, প্যাপিউল, নোডিউল বা প্লেক আকারে দেখা দিতে পারে। স্নায়ু আক্রান্ত হলে স্থানটি অবশ হয়ে থাকে।

কিভাবে ছড়ায় : আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে ত্বক এবং শ্বাসনালীর মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধের মাধ্যমে শিশুর দেহে সংক্রমিত হতে পারে।

জটিলতা : আক্রান্ত স্থানভেদে জটিলতার পার্থক্য আছে। হাত, পা বিকলাঙ্গ হতে পারে। চোখ নাড়ানোর ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। অনুভূতি কমে যাওয়ার কারণে আগুনে পোড়া বা অন্যান্য দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

চিকিৎসা : আমাদের দেশে বিনামূল্যে এ রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। সময়মতো ওষুধ গ্রহণ করলে কোনো জটিলতা হয় না। তবে জটিলতার কারণে শল্য চিকিৎসা ও ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন হতে পারে।

প্রতিরোধ : রোগী ও সমাজকে সচেতন করার মাধ্যমে অনেকাংশেই এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
অন্যদের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করবেন না।
বিছানা, পরিধেয় এবং প্রসাধনী পৃথক রাখুন।
হাঁচি, কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই রুমাল ব্যবহার করবেন।
চিকিৎসকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। পূর্ণ চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
সতর্কভাবে চলাফেলা করুন। বিশেষ করে আগুন থেকে দূরে থাকুন।


ডা. এম আর করিম রেজা



কনসালটেন্ট : চর্ম ও এলার্জি



এশিয়ান জেনারেল হাসপাতাল, ফোন : ০১৮১৯-২৩৭৩৫0

published in the daily 'bangladesh protidin' on 27th june.2011

http://www.bd-pratidin.com/?view=details&type=gold&data=Tax&pub_no=420&cat_id=3&m

দ্য গ্রেট লন্ডন ফায়ার

১৬৬৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ সেপ্টেম্বর এক বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে সিটি অফ লন্ডন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল, যা ইতিহাসে 'দ্য গ্রেট লন্ডন ...