Saturday, October 14, 2023

ডেঙ্গির টিকা


#ডেঙ্গি প্রতিরোধে জাপানের তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি টিকা 'কিউডেঙ্গা'র অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য গত ২ অক্টোবর এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়া আগেই এই টিকা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, থাইল্যান্ড ও আর্জেন্টিনা।

দুই ডোজের এই টিকা শুধুমাত্র ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সীদের জন্য অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর আগে সানোফি-এ্যাভেন্টিজের তৈরি ডেঙ্গি টিকা 'ডেঙ্গাভেস্কিয়া'র অনুমোদন দিয়েছে কয়েকটি দেশ। বাংলাদেশে আইসিডিডিআরবির সহায়তায় 'টিভি০০৫' নামে একটি #ডেঙ্গি টিকার ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ। এই পরীক্ষার প্রথম দুই ধাপে তারা সফলতা পেয়েছে। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা সফল হলে এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে।

বাংলাদেশে এ বছর মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য সর্বশেষ অনুযায়ী, এ বছর এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৩৭ হাজার ২৫১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে মারা গেছেন ১ হাজার ১৫৮ জন।

ডেঙ্গি আক্রান্ত ও মৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু ও কিশোর রয়েছে। এ বছর ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা চরিত্র পরিবর্তন করায় মশক নিয়ন্ত্রণ ও মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়ে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

ভাইরাসজনিত অনেক রোগ প্রতিরোধে টিকার ব্যবহার ইতোমধ্যেই প্রমাণিত। ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরনের বিরুদ্ধেই 'কিউডেঙ্গা' টিকা কার্যকরী বলে জানানো হয়েছে।


যেহেতু ডেঙ্গি আক্রান্তদের একটি বড় অংশ শিশু ও কিশোর, তাই এই টিকা ব্যবহার করে জনসংখ্যার একটি বড় অংশকে ডেঙ্গি থেকে নিরাপদ রাখা সম্ভব। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে যত দ্রুত সম্ভব এই টিকা আমদানি ও বিতরণের ব্যবস্থা করা জরুরি। পাশাপাশি বাংলাদেশ পরীক্ষা চলা 'টিভি০০৫' টিকা দেশেই তৈরির বিষয়ে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গেও আলোচনা শুরু করা দরকার।

https://bangla.thedailystar.net/health/news-523421

#dengue #denguefever #DenguePrevention

Thursday, October 5, 2023

সুখ


গবেষকরা ‘সুখ’-এর তত্ত্বতালাশ করে আসছেন মানব সভ্যতার শুরু থেকেই। প্রায় আড়াইহাজার বছর আগে হিমালয়ের এক রাজ্যের রাজপুত্র রাজ্যত্যাগ করেছিল সুখের সন্ধানে। ১৭৮৫ সালের গ্রাউন্ডওয়ার্ক অব দ্য মেটাফিজ়িক্স অব মরালস-এ দার্শনিক ইমানুয়েল কান্ট লিখেছেন, “হ্যাপিনেস ইজ় নট অ্যান আইডিয়াল অব রিজ়ন, বাট অব ইমাজিনেশন।” ২৫০ বছর আগে টমাস জেফারসনের সময় আমেরিকান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয় ‘পারসুট অব হ্যাপিনেস’। আধুনিক জমানায় 'সুখ’ মাপার ধারণাটাও অবশ্য এসেছে হিমালয়ের ছোট্ট দেশ ভুটান থেকেই। 

সুখ আর আনন্দ এক বিষয় নয় এই উপলব্ধিটি বোঝার সক্ষমতা নেই বেশিরভাগ মানুষের। অর্থবিত্তে সাময়িক আনন্দ কেনা যায় বটে তবে সুখ অধরাই থেকে যায়। অর্থের সঙ্গে সুখের উত্তরণ ঘটে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ক্ষেত্রে। আয়ের সঙ্গে ‘সুখ’ বাড়ে বটে, কিন্তু আয় যখন মানুষের দৈনন্দিন জীবনে স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করে, তখন আয় বাড়লেও #সুখ আর বাড়ে না। গল্পের কপর্দকশূন্য চালচুলোহীন ভিখারির সুখের শেষ নেই। কিন্তু অর্থবিত্ত আর ক্ষমতা থাকলেও রাজামশাইয়ের অসুখ সারে না। তাই অভাবকে নয়, অভাবের বোধকে অতিক্রম করতে পারাই সুখী হওয়ার মন্ত্র।

মহাভারতের যুধিষ্ঠিরকে যক্ষ জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ”সুখী কে? উত্তরে যুধিষ্ঠির বলেছিলেন, “যাহার ঋণ নাই, আর নিজের ঘরে থাকিয়া দিনের শেষে যে চারিটি শাক-ভাত খাইতে পায়, সেই সুখী।"

তুরস্কের বিখ্যাত কবি নাজিম হিকমত রান বন্ধু চিত্রকর আবেদিন দিনোকে অনুরোধ করেছিলেন সুখের একটি ছবি আঁকার জন্য। আবেদিন দিনো বন্ধুর অনুরোধে এই ছবিটি এঁকে দেন।

সুখের সন্ধানে মানুষের নিরন্তর সাধনা চলতেই থাকবে সেটি নিশ্চিত।

#MRKR

Sunday, October 1, 2023

কফির ইতিবৃত্ত


প্রতিবছর ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক কফি দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কফি (Coffee) পৃথিবীতে সর্বাধিক বিক্রিত প্রাকৃতিক পানীয়। প্রতিদিন প্রায় ২০০ কোটি কাপ কফি পান হয় পৃথিবীতে। কফি চেরি নামক এক ধরনের ফলের বীজ, যা পোড়ানোর পর গুঁড়ো করে কফি তৈরি করা হয়। কফির বীজ বিশ্বের সত্তরটিরও বেশি দেশে উৎপাদিত হয়। ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, ইথিওপিয়া, কলাম্বিয়া, ভারত কফির প্রধান উৎপাদনকারী দেশ এখন।

কফির উৎপত্তি নিয়ে একাধিক কল্পকাহিনী প্রচলিত রয়েছে যার কোনো প্রমাণ নেই। তেমনি একটি কল্পকাহিনী হলো, নবম শতকে ইথিওপিয়ায় বাস করতো খালদি নামের এক নিঃসঙ্গ মেষপালক। অন্যান্য দিনের চেয়ে তার ছাগলের পালের দুরন্তপনা একটু বেড়ে গেছে বলে মনে হলো তার। অনুসন্ধান করতে গিয়ে সে খেয়াল করে, লাল জামের মতো একটি ফল খাচ্ছে তার ছাগলেরা। ধর্মপ্রাণ খালদি সাথে সাথে সেই ফলটি নিয়ে হাজির হয় স্থানীয় মসজিদের ইমামের কাছে। কাঁচা খাওয়া অসম্ভব দেখে ইমাম আগুনে ছুঁড়ে দিলেন ফলগুলোকে। তার কাছে প্রথমে এগুলোকে শয়তানের প্রলোভন বলে মনে হয়েছিল। কিছুক্ষণ পরেই আসতে লাগলো দারুণ সুঘ্রাণ, যা আজ জগদ্বিখ্যাত। ইমামের ছাত্ররা চিন্তা করে দেখলেন, সিদ্ধ করে খেলে কেমন হয়। যে-ই ভাবা সেই কাজ, রোস্ট করা বীজগুলোকে নিয়ে এক কড়াই গরম পানিতে সিদ্ধ করা হলো। এভাবেই তৈরি হয় পৃথিবীর প্রথম কাপ কফি। ইমাম এবং তার শিষ্যরা চমৎকৃত হয়ে আবিষ্কার করলেন যে এই পানীয়টি খেয়ে তারা রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা জেগে থাকতে পারছেন। প্রার্থনার জন্য ব্যাপারটি বেশ কার্যকরী মনে হলো তাদের। দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়লো গরম পানীয়টির সুনাম।

কফি আবিষ্কারের সময়কাল নবম শতাব্দী বলে মেনে নেয়া হয়েছে। ১৫ শতকে ইথিওপিয়া থেকে, লোহিত সাগরের ওপারে বাণিজ্যের মাধ্যমে ইয়েমেনে কফি আনা হতো। সুফিরা তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে জাগ্রত থাকতে কফি পান করতেন। 

তুরস্কের কনস্টান্টিনোপল, বর্তমান ইস্তানবুলে ১৪৭৫ সালে পৃথিবীর প্রথম কফি হাউজ চালু হয়। ষোড়শ শতকের মধ্যেই সিরিয়া, তুরস্ক, পারস্য, মিশরে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠে কফি হাউজ। ১৬২৩ খ্রিস্টাব্দে ইস্তাম্বুলে ছয় শতেরও বেশি কফি হাউজ ছিল। আরবরা কয়েক শতাব্দী কফির ঘ্রাণে মুগ্ধ হওয়ার পর ইউরোপে কফি যেতে শুরু করে। মুসলমানদের আবিষ্কার হলেও অনেক মুসলমান রাষ্ট্রে কফিকে বাঁকাচোখে দেখা হতো।

১৫১১ সালে মক্কার পণ্ডিতেরা কফি খাওয়া নিষিদ্ধ করেন। তৎকালীন মক্কার গভর্নর খায়ের বেগ মনে করতেন, কফির আড্ডায় জনগণের চাপা রোষ জেগে উঠবে। ফলে তার সরকারের পতন ঘটবে। জোর করে কফিকে হারাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কফি আসলেই বিষাক্ত কি না, তা নিয়ে মতভেদ ছিলো। প্রায় তেরো বছর এ নিয়ে ঝামেলা লেগে থাকে। অবশেষে, ১৫২৪ সালে ওসমানীয় সুলতান প্রথম সেলিম ফতোয়া জারি করে কফি খাওয়া আবার চালু করেন। খায়ের বেগকে অবৈধ কার্যকলাপের জন্য ফাঁসি দেওয়া হয়। এরপরে ১৫৩২ সালে কায়রোতে কফি খাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়। তখন সেখানকার সব কফিহাউজ ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়েছিল।


মধ্যপ্রাচ্য, তুরস্ক ও বলকান অঞ্চল হয়ে কফি ইতালিতে যাত্রা করে। বণিকদের মাধ্যমে ইতালির ভেনিসে কফি পৌঁছে যায় ১৬১৫ সালে। মধ্যপ্রাচ্য এবং তুরস্কের মতো ইউরোপেও কফিকে সন্দেহের চোখে দেখা হতো। যেহেতু কফি আবিষ্কারের সাথে মুসলমানদের নাম জড়িয়ে ছিল, তার ওপর এটি খ্রিস্টানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত পবিত্র পানীয় রেড ওয়াইনের জায়গা দখল করে নিচ্ছিল। তাই কট্টর ক্যাথলিকেরা একে ‘শয়তানের তিক্ত আবিষ্কার’ বলে ডাকতো। যে কোনো অনুষ্ঠানে এর ব্যবহারের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। ইউরোপিয়ান পর্যটকেরা কারো তোয়াক্কা না করেই এর গুণগান করতে থাকলেন। এই নিয়ে দুই পক্ষের বিবাদ লেগে গেলে এগিয়ে আসেন তৎকালীন পোপ অষ্টম ক্লিমেন্ট। তিনি কফির স্বাদ নিয়ে মুগ্ধ হয়ে যান। ঘোষণা দেন, কফি কেবল মুসলমানদের একার নয়, খ্রিস্টানদেরও পানীয়।

তারপর থেকে কফিকে অনেকটা প্রশংসাসূচকভাবেই ‘শয়তানের পানীয়’ কিংবা ‘শয়তানের পেয়ালা’ নামে ডাকা হয়।

এরপর দ্রুতই ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে এর জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। ডাচদের মাধ্যমে পশ্চিমে আমেরিকা ও লাতিন আমেরিকায় কফির প্রচলন ঘটে। ঔপনিবেশিক ডাচরাই ইন্দোনেশিয়ায় কফি উৎপাদন শুরু করে। ১৬৭০ সালে একজন ভারতীয় কফির বীজ নিয়ে আসেন। উপমহাদেশে কফির উৎপাদন শুরু হয় তখন থেকেই।

#InternationalCoffeeDay #MRKR

Wednesday, September 20, 2023

বিষাক্ত তেলাপিয়া

সংবাদমাধ্যমে বিগত কয়েকদিনে আমেরিকায় তেলাপিয়া 🐟 মাছ খাওয়ার কারনে এক নারীর হাত-পা কেটে ফেলার খবর প্রকাশ হয়েছে। হেডলাইন দেখে সাধারণ মানুষ তেলাপিয়াকে বিষাক্ত মাছ মনে করতে পারে। এই ভুল বার্তা নিম্নবিত্ত মানুষেরা দৈনন্দিন প্রোটিন গ্রহণে বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে। আসলে যে কোন মাছ বা সি-ফুড থেকেই এই ধরনের মারাত্মক খাদ্য বিষক্রিয়াজনিত জটিলতা হতে পারে।


ভিব্রিও ভালনিফিকস (Vibrio vulnificus) নামে একটি ব্যাকটেরিয়া পানিতে থাকে, যেটি মানুষের দেহে সংক্রমণের কারণে জীবনহানি ঘটতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর কমবেশি ৮০ হাজার মানুষ এই ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হয়ে থাকে। ঠান্ডা পানিতে এটি বংশবিস্তার করতে পারে না। যে পানিতে ভিব্রিও ভালনিফিকস থাকে সেখানে থাকা মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রানীর শরীরেও এটি থাকে। জলজ প্রানীর জন্য ক্ষতিকর বা জীবনহানির কারণ না হলেও এটি মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর।

কিভাবে ছড়ায়?

©কাঁচা বা অর্ধসিদ্ধ বা কম রান্না করা মাছ, সি-ফুড ইত্যাদি খাওয়ার মাধ্যমে। সাধারণত শেলফিস এবং ওয়েষ্টার থেকেই সংক্রমণ বেশি হয়ে থাকে।

©এছাড়া ত্বকের ক্ষত দিয়ে পানির মাধ্যমে সরাসরি শরীরে প্রবেশ করতে পারে এই ব্যাকটেরিয়া।

লক্ষণ কি

খাওয়ার পর বমি, পাতলা পায়খানা, তীব্র পেটব্যথা ও জ্বর হয়ে থাকে। খাদ্যে বিষক্রিয়ার লক্ষণ এগুলো। ত্বকে সংক্রমিত হলে আক্রান্ত স্থান লালচে হয়ে ব্যাথা, গরম অনুভুতি, ফুলে কালচে বর্ণ হয়ে যেতে পারে। ক্ষতস্থান দিয়ে জ্বলীয় নিঃসরণ হতে পারে।

সংক্রমণ রক্তে ছড়িয়ে পড়লে জীবনহানির শংকা সৃষ্টি হয়। সাধারণত যাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম বা লিভারের রোগ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি। রক্ত নালীতে রক্ত চলাচল কমে যাওয়ায় শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোস্কা ও গ্যাংরিন হতে পারে। সেপটিক শকে মৃত্যু ঘটে থাকে।

প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

©কাঁচা বা অর্ধসিদ্ধ মাছ বা সি-ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

©পানিতে নামার পর ত্বকের কোন স্থানে লালচে, ফুলে যাওয়া, ব্যাথা ইত্যাদি অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ্য করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

©ত্বকে ক্ষত থাকলে পুকুর, নদী বা সমুদ্রে নামা থেকে বিরত থাকুন।

©মাছ বা সি-ফুড খাওয়ার পর উল্লেখিত লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Tuesday, August 8, 2023

হাঁটাহাটি করি, উৎফুল্ল থাকি!


 সুস্থতার জন্য হাঁটাহাটির প্রয়োজনীয়তা বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত। ওজন নিয়ন্ত্রণ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, হাড়ের ক্ষয়রোধ ইত্যাদি নানা দৈহিক সমস্যায় হাঁটাহাটি অত্যাবশ্যক বলে চিকিৎসা সেবায় গ্রহণ করে নেয়া হয়েছে। কিন্তু হাঁটাহাঁটির সঙ্গে মানসিক চাপ কমানো বা বিষন্নতা থেকে মুক্ত থাকার বিষয়টি তেমনভাবে আলোচিত হয় না। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে মাত্র ১০ মিনিট হাঁটলেই মানসিক চাপ ও বিষণ্নতা অনেকাংশে কমে যায়।

হাঁটাহাঁটির সময় মানুষ সাধারণত পারিপার্শ্বিক বিষয় থেকে বিমুক্ত হয়ে নিজের মনের সঙ্গে একান্ত সময় কাটাতে পারে। মস্তিস্কে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। যে কারণে এন্ডোরফিন নামে #সুখী হরমোন বেশি নিঃসরণ হয়ে থাকে। এড্রেনালিন নামক আরেকটি হরমোনের নিঃসরণও বৃদ্ধি পায়, যেটি মনকে চাঙ্গা করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। ঘুমের সঙ্গে যে মানসিক অবস্থার সম্পর্ক রয়েছে, সেটি সবাই অবগত। হাঁটার সময় ঘুমের সঙ্গে সম্পর্কিত হরমোন নিঃসরণও বৃদ্ধি পায়। মাংসপেশীর কাঠিন্য কমে যায়। ফলে ভালো ঘুম হয়ে থাকে। তবে সেজন্য শোয়ার আগে হাঁটাহাটি করতে হবে।

ঘরের ভিতর হাঁটাহাটি বা ট্রেডমিল করে মানসিক চাপ বা বিষন্নতা কমাতে তেমন কার্যকরী ভূমিকা পালন করে না। মানসিক চাপ কমাতে বা বিষন্নতা দূর করতে বাইরে হাঁটার বিকল্প নেই।

Saturday, August 5, 2023

জন্মদিন


 মানুষের জীবনে বছরের একটি বিশেষ দিন হলো জন্মদিন। কারন এই দিনটি পঞ্জিকা বর্ষের সেই দিন যেদিন তার পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল। মানুষ এই দিনটি উদযাপন করার জন্য নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি অনুযায়ী রীতিনীতি তৈরি করেছে।

মানুষের জন্মদিন পালন শুরুর সঠিক ইতিহাস জানা নেই। তবে মিসরে ফেরাউনদের বার্ষিক উদযাপনের রীতি ছিল। সাধারণ মানুষের জন্মদিন পালনের রীতি চালু হয় প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যে। খৃষ্টধর্ম প্রবর্তনের পর এই দিনটি বিশেষ গুরুত্ব লাভ করে।

জন্মদিন উদযাপনের একটি শক্তিশালী মানসিক প্রভাব রয়েছে।  দিনটি মূল্যবান এবং প্রিয় বোধ করার একটি উপলক্ষ কারণ বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যরা এই দিনে শুভেচ্ছা এবং উপহার দিয়ে থাকে। দিনটি প্রিয়জনের সাথে সময় কাটানো এবং শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করার একটি সুযোগ তৈরি করে। শুধুমাত্র উদযাপন নয়, বরং

এই জীবনের প্রতিটি মুহুর্তের কৃতজ্ঞতা এবং প্রশংসার একটি উপলক্ষ হলো জন্মদিন।

যে কোন ঐতিহ্য বা সংস্কৃতিতে জন্মদিন মানব জীবনের একটি বিশেষ এবং অনন্য মুহূর্ত।


 

Saturday, July 8, 2023

দেশের স্বাস্থ্য সেবা রক্ষার্থে দৃষ্টি আকর্ষন

 স


রকারি দলের মহাসচিব, ক্ষমতাধর মন্ত্রী মহোদয় মধ্য রাতে বুকে ব্যাথা নিয়ে #বিএসএমএমইউ জরুরি বিভাগে হাজির হলেন। দায়িত্বরত চিকিৎসক পাঁজরের হাড়ের উপর শক্ত চাপ দিয়ে হৃদযন্ত্র সচল রেখেছেন। সিনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পৌঁছানো পর্যন্ত অপেক্ষা করলে তাঁর মৃত্যু ছিল অবধারিত। পরবর্তীতে তাঁকে চিকিৎসা দিতে প্রতিবেশী দেশের বিশ্বখ্যাত হার্ট সার্জন এসেছিলেন। অবস্থার উন্নতি হলে সেই ক্ষমতাধর রোগী উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে উড়ে যান।

বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্যিক নিউইয়র্কে গেলেন বৃহদান্ত্রের সার্জারি করতে। অপারেশন পরবর্তী জটিলতায় তাঁর পরিপাক নালী ফুটো হয়ে গিয়েছিল। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নামী মানুষ হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপুল অর্থ প্রাপ্তির সম্ভবনা ছিল।

বেসরকারি হাসপাতালের নামী বিশেষজ্ঞ নিজের একটি রোগের রোবটিক সার্জারির জন্য সিঙ্গাপুরের নামীদামী হাসপাতালে গেলেন। অথচ তার নিজের হাসপাতালেই রোবট ছাড়া এই চিকিৎসা অহরহ চলে। বড় রক্তনালী কেটে যাওয়ার কারণে অপারেশন টেবিলেই তার মৃত্যু ঘটে। যে সার্জন রোবট দিয়ে অপারেশন করছিলেন তিনি ও তাঁর দল এই বিষয়ে দক্ষ ছিলেন। তারপরও এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হয় নাই। কোন মামলা হয়নি বা পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। তবে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি মতামত দেন যে 'জটিলতা বা মৃত্যু চিকিৎসার অংশ। তাঁরা এই রোগীর চিকিৎসায় কোন গাফিলতি করেননি, নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন।'

ঘটনা তিনটি স্মরণ করলাম দেশের চিকিৎসাসেবায় বিরাজমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি নিয়ে দুয়েকটি কথা বলাই উদ্দেশ্য। কোন চিকিৎসক স্বেচ্ছায় রোগীর চিকিৎসায় জটিলতা সৃষ্টি করেন না। কোন কোন ক্ষেত্রে দায়িত্বে অবহেলা বা গাফিলতি হতে পারে। সেজন্য বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হয়ে থাকে সভ্য দেশগুলোতে। রোগী বা স্বজন অভিযোগ তুললেই চিকিৎসককে দায়ি করা যৌক্তিক হতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে পুলিশ, মামলা বা আদালত সমাধান দিতে পারে না। কারণ তারা এই বিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখেন না। তবে বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে চিকিৎসককে দায়ি করলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আদালত তার শাস্তির রায় দিতে পারেন।

শুধুমাত্র রোগী বা স্বজনের অভিযোগের ভিত্তিতে কোন চিকিৎসক বা হাসপাতালের মিডিয়া ট্রায়াল এবং পুলিশি হয়রানি এদেশের চিকিৎসক ও রোগী উভয়ের আস্থার সংকট সৃষ্টি করেছে ইতিমধ্যেই। জরুরি চিকিৎসার জন্য অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকি নিয়ে রোগীর জীবন বাঁচাতে হয়। এই অবস্থা চলতে থাকলে জরুরি চিকিৎসাসেবায় দায়িত্বরত চিকিৎসক রোগীর জীবন বাঁচাতে কোন ঝুঁকি নেয়ার উদ্যম হারিয়ে ফেলবেন, উপযুক্ত চিকিৎসা ছাড়াই রোগীর মৃত্যুর ঘটবে তখন। আবার দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আস্থা হারিয়ে সাধারণ চিকিৎসার জন্যও দেশের মানুষ বিদেশে পাড়ি জমাবে আরো বেশি বেশি। রোগীর নিজের অর্থের অপচয় এবং দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার খরচ হবে এজন্য।

এধরনের ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর/মন্ত্রণালয়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ করার বিকল্প নেই। চিকিৎসাসেবা প্রদানে সকল অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব তাদের। তদন্ত কমিটি গঠন করে চিকিৎসায় অবহেলা বা গাফিলতি সহ চিকিৎসা সেবায় বিরাজমান নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য দায়ী সকলের শাস্তি নিশ্চিত করতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর/মন্ত্রণালয়কেই।দেশের সংবাদমাধ্যম, পুলিশ ও আদালত এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগ উঠলেই সংবাদ প্রচার/গ্রেফতার করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সমাজের সকল স্তরের দায়িত্বশীল ভূমিকা বিরাজমান এই সংকট থেকে উত্তরণে সহায়তা করবে।

টাইটানিকের বিড়াল জেনি: যার কথা খুব কম মানুষই জানে

 টাইটানিক জাহাজের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কথা প্রায় সবাই জানে, কিন্তু জেনি নামের একটি বিড়ালের গল্প খুব কম মানুষই শুনেছে, যে ছিল জাহাজটির স্থা...