Thursday, May 22, 2025

মহাশোল

মহাশোল নামটি শুনে শোল মাছের বড় আকারের একটি মাছ বলে ভ্রম হতেই পারে। আসলে মহাশোল (Mahseer) পাহাড়ি স্বাদুপানির ততোধিক সুস্বাদু একটি মাছ। শক্তিশালী গড়নের এই মাছকে বলা হয় “নদীর বাঘ” বা “রাজা মাছ”, যা একসময় হিমালয়ের পাদদেশে দক্ষিণ এশিয়ার নদীনির্ভর প্রাকৃতিক পরিবেশের অংশ ছিল।  তবে পরিবেশগত পরিবর্তন, অতিরিক্ত শিকার এবং আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে এই মাছ এখন সংকটাপন্ন।

এই মাছের প্রধান বিস্তার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়—বিশেষ করে হিমালয় ঘেষা অঞ্চলগুলিতে। ভারতের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, আসাম, নাগাল্যান্ড, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক ও কেরাল, নেপালের গণ্ডক, কার্নালি ও কালী নদী, ভুটানের পাহাড়ি স্বচ্ছ নদী,পাকিস্তানে সিন্ধু নদীর পাহাড়ি উপনদী, শ্রীলঙ্কা ও বার্মার কিছু পাহাড়ি জলে এদের বিচরণভূমি।


বাংলাদেশে মহাশোল মাছের প্রধান বিচরণক্ষেত্র হলো উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি নদী ও ঝরনা। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো সোমেশ্বরী নদী, যা নেত্রকোণার দুর্গাপুর এলাকায় মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নেমে এসেছে। স্বচ্ছ জল, পাথুরে তলদেশ আর ঝরনাধারা মহাশোলের জন্য এক আদর্শ বিচরণ ক্ষেত্র। এছাড়াও এর আবাসস্থল ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের সাঙ্গু, মাতামুহুরি, সিলেটের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি নদী যেমন লোভা, সারি ইত্যাদি।

কার্প জাতীয় এই মাছের দেহ শক্ত ও লম্বাটে, মাথার আকার তুলনামূলক বড় এবং ঠোঁট মোটা, নিচের দিকে মুখ। আঁশ বড় ও চকচকে, সোনালি-বাদামি রঙের ঝিলিক। স্বভাবে শান্ত হলেও দ্রুতগামী স্রোতে এরা দক্ষ সাঁতারু। সাধারণত পাথরের শেওলা, পোকামাকড়, ছোট মাছ—এসবই এদের খাদ্য তালিকায় পড়ে। হিমালয় অঞ্চলের মহাশোল ওজনে ৩ কেজি থেকে ১২ কেজি হতে পারে।

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, মহাশোল এখন বাংলাদেশে প্রায় বিলুপ্ত। নদীর স্বাভাবিক স্রোতের ব্যাঘাত (ড্যাম ও বাঁধ নির্মাণ), অতিরিক্ত বালু উত্তোলনে নদীর তলদেশ পরিবর্তন,

অপরিকল্পিত মাছ শিকার, বিষ ও ডিনামাইটের ব্যবহার, প্রজনন মৌসুমে সুরক্ষা না থাকা এবং স্থানীয় মানুষজনের অজ্ঞতা ও সরকারি নজরদারির ঘাটতিতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

প্রাকৃতিক মহাশোল দুর্লভ হলেও বর্তমানে কৃত্রিমভাবে চাষ করা মহাশোল বাজারে পাওয়া যায়। দুর্লভতা, স্বাদ, এবং প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগ্রহের জটিলতার কারণে মহাশোল একটি দামী মাছ। চাষ করা মহাশোল প্রতি কেজি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়ে থাকে‌।

Monday, May 19, 2025

প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা: আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের নতুন মানদণ্ড

 🧬 চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক চিকিৎসা সেবা দেয়ার পদ্ধতিতেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। আগের অভিজ্ঞতানির্ভর, ধারণাভিত্তিক বা "যেমন চলেছে তেমন চলুক" ধরনের চিকিৎসার পরিবর্তে এখন চিকিৎসা সেবা গবেষণা ও প্রমাণের ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে। এই পদ্ধতির নামই হলো Evidence-Based Treatment বা প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা এমন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেয়া হয়, যা গবেষণা,পরিসংখ্যান এবং বাস্তব রুগী-পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে উন্নত বিশ্বে ৭০%-৮৫% চিকিৎসা সিদ্ধান্ত প্রমাণভিত্তিক গবেষণার ওপর ভিত্তি করে। উন্নয়নশীল দেশে এই পদ্ধতির প্রয়োগ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। বাংলাদেশে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা নির্দেশিকা মেনে চলে চিকিৎসা দেয়া ধীরে ধীরে বাড়ছে।

🧠 প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা মানে কী?

সংক্ষেপে বললে, EBT হল এমন এক চিকিৎসা পদ্ধতি যেখানে—

√ সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল,

√ চিকিৎসকের নিজের অভিজ্ঞতা,

√ এবং রোগীর নিজের মতামত ও জীবনধারা—এই তিনটি দিক মিলিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করা হয়।


🌍 কোথায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে EBT?

বর্তমানে পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে এই পদ্ধতি চিকিৎসার মূলধারায় পরিণত হয়েছে। এসব দেশে মেডিকেল শিক্ষায় EBT বাধ্যতামূলক। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে নিয়মিত ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন হালনাগাদ করা হয়।

√যুক্তরাজ্যে (UK): সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা NHS-এর অধীনে ৯০% চিকিৎসাএখন EBT গাইডলাইনের আওতায়। NICE (National Institute for Health and Care Excellence) প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসার একটি বিশ্বমানের দৃষ্টান্ত।

√যুক্তরাষ্ট্রে(USA): AMA ও NIH এর তত্ত্বাবধানে প্রায় ৮০% চিকিৎসা বর্তমানে EBM অনুযায়ী পরিচালিত হয়।

√কানাডা, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া ও সুইডেনে EBT অনুপাত প্রায় ৬০-৮০%।

📈 কেন গুরুত্বপূর্ণ EBT?

প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা শুধু নিখুঁত নয়, এটি নিরাপদও। এতে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা, ঔষধ ও চিকিৎসা কম হয়, চিকিৎসার খরচ কমে, রোগ নির্ণয় সঠিক হয়, রোগীর দ্রুত আরোগ্য সম্ভব হয় এবং চিকিৎসা পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা আসে। এককথায়, এই পদ্ধতিতে রোগীর আস্থা অর্জনের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পথ।

 🇧🇩 বাংলাদেশের অবস্থা কী?

বাংলাদেশে প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসার চর্চা এখনো সীমিত, তবে আশার আলো আছে।

√ BMU,  ঢাকা মেডিকেল, মিটফোর্ড হাসপাতালে এখন অনেক চিকিৎসক EBT গাইডলাইন অনুসরণ করছেন। কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালেও এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

√নতুন করে BMDC চিকিৎসা শিক্ষায় EBM (Evidence Based Medicine) অন্তর্ভুক্ত করছে।


বাংলাদেশে গ্রামীণ ও উপশহর পর্যায়ে ৭০% এর বেশি চিকিৎসা এখনো পুরাতন পদ্ধতি ও অনুমানের ওপর ভিত্তি করে চলে। এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কিন্তু ধাপে ধাপে উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের মতো দেশে EBT চালু করতে হলে চিকিৎসকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ, সরকারি গাইডলাইন তৈরি, রোগীর সচেতনতা বৃদ্ধি, এবং মেডিকেল রিসার্চকে গুরুত্ব দিতে হবে।

একটি ঔষধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি কেবল "আগে কাজ করেছিল” বলে ব্যবহার করা উচিত নয়। বরং জানতে হবে—এখনো কি সেটি কাজ করে? সেজন্য চাই বৈজ্ঞানিক তথ্য, গবেষণা ও সঠিক মূল্যায়ন। এটাই প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসার মূল ভিত্তি। রোগীর জন্য নিরাপদ, চিকিৎসকের জন্য নির্ভরযোগ্য—এমন একটি ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য EBT-কে গ্রহণ করার বিকল্প নেই।

Sunday, May 18, 2025

ল্যাবে তৈরি সন্তান: জীবনের পথে বিজ্ঞানের নতুন বাঁক

 🌱 কল্পবিজ্ঞান বই বা সিনেমায় দেখা ল্যাব থেকে সৃষ্ট মানবশিশুর জন্য বাবা-মা দরকার হয় না। শুধু গল্পে সিনেমায় নয়, সময় বদলানোর সাথে সাথে ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে, আমরা সেই গল্প সিনেমার অনেকটা কাছাকাছি এসে গেছি।

হ্যাঁ, ল্যাবে শুক্রাণু আর ডিম্বাণু তৈরি করে সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রযুক্তি এখন কল্পনা নয়—বাস্তবের অপেক্ষায়।

🔬 In Vitro Gametogenesis: বিজ্ঞানের এক মুগ্ধ করা নাম

নামটা একটু কঠিন In Vitro Gametogenesis  সংক্ষেপে IVG। সহজ করে বললে, বিজ্ঞানীরা এখন দেহের যেকোনো কোষ (যেমন ত্বকের কোষ) থেকে গ্যামেট, মানে শুক্রাণু বা ডিম্বাণু বানাতে পারছেন। আর সেই গ্যামেট মিলিয়ে বানানো যাবে ভ্রূণ। 

সমলিঙ্গের যুগল, সন্তান নিতে চাওয়া একক নারী বা পুরুষ, এমনকি বন্ধ্যাত্বে ভোগা অসংখ্য মানুষ—এই প্রযুক্তির মাধ্যমে হয়তো নিজের জিন দিয়েই বাবা-মা হতে পারবেন।



 ⚖️ নৈতিকতার চশমা দিয়ে তাকালে যা দেখি:

তবে এমন প্রযুক্তি সঠিক না ভুল সেই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে।

 "সন্তান কি তবে প্রকৃতির এক অভিজ্ঞান? নাকি মানুষের তৈরি প্রকল্প?"

যখন বিজ্ঞান জিন বাছাইয়ের ক্ষমতা দিয়েছে—তখনই শুরু হয়েছিল "ডিজাইনার বেবি"-র সম্ভবনা।

Gattaca সিনেমার গল্পের মতো যেখানে মানুষ জিনগত 'দক্ষতা' দিয়ে মূল্যায়িত হয়! এমন একটা সমাজ যদি তৈরি হয়, যেখানে শুধু "উন্নত বাচ্চা" চাওয়া হয়—তাহলে সাধারণ শিশুরা কি পিছিয়ে পড়বে না?

আরো একটি বড় প্রশ্ন, ভালোবাসা কি তখনও থাকবে, নাকি থাকবে শুধু বেছে নেওয়ার মানসিকতা?


 🧪 বিজ্ঞান আমাদের কোথায় নিয়ে যেতে চায়?

তবে শুধু ভয় দেখলে হবে না। বিজ্ঞান তো কেবল ভয় পেতে শেখায় না, সম্ভাবনাও দেখায়!

এই প্রযুক্তি যদি সত্যি নিরাপদ হয়, তবে—

√ সন্তান নিতে পারবে তারা, যাদের আজ কোনো উপায় নেই।

√দান করা শুক্রাণু বা ডিম্বাণু না নিয়েও নিজের জিনে গড়া সন্তান সম্ভব হবে।

√জিনগত রোগ প্রতিরোধে অগ্রিম ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

এইসব সম্ভাবনার মাঝেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তবে এজন্য দরকার সচেতনতা। কারণ মানব শরীরের অনেক কিছুই এখনও অনেকটা অজানা। কোনো ভুল হলে সেটার দায় তো সেই শিশুটিকেই বইতে হবে।


👪 পরিবার—নতুন সংজ্ঞায়

সবচেয়ে মজার বিষয়, এই প্রযুক্তি আমাদের "পরিবার" নিয়ে প্রচলিত সংজ্ঞাই বদলে দিচ্ছে। সমলিঙ্গের যুগল নিজের জিনে সন্তান নিতে পারবেন, এমনকি ভবিষ্যতে হয়তো তিন বা চারজন ব্যক্তির জিন মিলিয়েও সন্তান সম্ভব হবে।

তখন "মা" বা "বাবা" শব্দগুলো একেবারে নতুন অর্থ পাবে।

কিন্তু যা বদলাবে না—সেটা হলো দায়িত্ব, ভালোবাসা, আর মানুষ গড়ার পথচলা।

সন্তান তো শুধু দেহে নয়, গড়ে ওঠে সাহচর্যে।

✍️ এই প্রযুক্তি একদিকে যেমন নুতন দিগন্ত উন্মোচিত করছে তেমনি সমাজবিজ্ঞানীরা এটির প্রয়োগ নিয়ে আবার দ্বিধান্বিতও। কারণ এটা শুধু একটি বৈজ্ঞানিক বিষয় নয়, বরং ভবিষ্যৎ মানবসভ্যতার দিকনির্দেশনা সম্পর্কিত একটি সিদ্ধান্ত।

আর সেই ভবিষ্যৎ যেন ভালোবাসাহীন না হয়, বরং আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, আরও মানবিক হয়—সেই চেষ্টা দরকার।

যারা এখনও বলছেন, “এটা তো প্রকৃতির বিরুদ্ধে”—তাঁদের কথা ফেলনা নয়। কিন্তু প্রকৃতি তো সবসময় বদলায়। শুধু আমরা যেন বদলাতে গিয়ে ভুলে না যাই **আমরা মানুষ**!

---

Saturday, May 17, 2025

মা

মা মানে তো শুধু মা না—তিনি ভালোবাসার প্রাণ, জীবনের আসল রূপ।

তোমার জীবনে আর কেউ কখনও তাকে ছাপিয়ে যেতে পারবে না।

তাই তাকে বোঝার আগেই বিচার কোরো না। একটু বসো, একটু শোনো।


তুমি কি কখনও সময় নিয়ে মায়ের মুখোমুখি বসে ওর গল্প শুনেছো?

ওর ছোটবেলার কথা, ওর স্বপ্ন, তোমার আগের জীবনের টুকরো টুকরো স্মৃতি?


অনেক কিছুই সে বলতে পারেনি—বলতে চায়নি।

চুপচাপ থেকে সব যন্ত্রণা নিজের মধ্যে আটকে রেখেছে।

শুধু একটা কারণেই—তোমাকে সেগুলোর থেকে দূরে রাখার জন্য।

তোমার জীবনে যেন তার কষ্টের ছায়া না পড়ে।



হয়তো তার ছোটবেলাটা সুখের ছিল না।

হয়তো জীবনের শুরুর দিকটায় সে একা ছিল, কিংবা যাদের ভালোবাসা পাওয়ার কথা ছিল, তারাই ছিল সবচেয়ে দূর।

কিন্তু এসব তোমাকে বোঝাতে চায়নি, কারণ তোমার সামনে সে শুধু হাসতে চেয়েছে।


চুপ করে থাকা ছিল তার বাঁচার উপায়।

একটা নীরব ঢাল।


তাকে সম্মান করো।

তাকে সময় দাও।

তাকে ভালোবাসো—তোমার মতো করে, নিজের মতো করে।

কারণ সে শুধু মা না—সে তোমার জীবনের সেই আশীর্বাদ, যা হারিয়ে গেলে আর ফিরে পাওয়া যায় না।


তোমার প্রতিটা ব্যবহার, প্রতিটা আচরণ একদিন ঠিক তোমার কাছেই ফিরে আসবে।

তুমি যদি মাকে ভালোবাসো, পৃথিবীও তোমাকে ভালোবাসবে।


মা একজনই---

যদি এখন তাকে সময় না দাও, একদিন হয়তো আফসোসগুলো তোমার সঙ্গী হবে।

আর তখন, নিঃসঙ্গ রাতগুলোতে তোমার পাশে থাকবে না তার আশ্বাসের কণ্ঠস্বর—

থাকবে কেবল তীব্র অপরাধবোধ।

তুমি যা বলোনি,

যে সময়টা দিতে পারতে, তা না দেওয়া,

আর সেই কষ্ট—

যে এখন যা করার ছিল, তার সময়টাই আর নেই।


তাকে আজ, এখনই বুঝে ফেলো।

জীবন তোমার অপেক্ষা করবে না,

আর মা?

তিনি তো সারাজীবন অপেক্ষাই করে গেছেন—তোমার একটুখানি মনোযোগের জন্য।

ফলের রাজা আম

বিশ্বব্যাপী আম একটি জনপ্রিয় রসালো, সুগন্ধি ও পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল। আম কৃষিখাতে অর্থনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বজুড়ে আমপ্রেমীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে কোন জাত সবচেয়ে মিষ্টি বা টেকসই, আর কোন দেশের আম রপ্তানির বাজার দখল করেছে বেশি।

আমের (Mango) বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica, যা Anacardiaceae পরিবারের অন্তর্গত। ভারত উপমহাদেশ, বিশেষত উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম ও বার্মা অঞ্চলে, প্রায় ৪ হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে আমের ইতিহাস পাওয়া যায়। সেখান থেকেই এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা এবং পরবর্তীকালে দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে।

চীনের ঐতিহাসিক রচনাতেও খ্রিস্টপূর্ব ২০০ অব্দে আমের উল্লেখ পাওয়া যায়। মুঘল সম্রাট আকবর তাঁর দরবারে ১ লাখ আমগাছের বাগান স্থাপন করেছিলেন—যা আজকের ভারতের মালিহাবাদ অঞ্চলের 'আমের রাজধানী' নামে পরিচিত। বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৬১ মিলিয়ন টন আম উৎপাদিত হয়, যার প্রায় তিন-চতুর্থাংশই এশিয়ায় উৎপাদিত হয়। বিশ্বে আমের মোট বাজারমূল্য কমবেশি ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

আম উৎপাদনে ভারত শীর্ষস্থান দখল করে আছে। দেশটি বছরে প্রায় ২৬.৩ মিলিয়ন টন আম উৎপাদন করে থাকে, যা বৈশ্বিক উৎপাদনের প্রায় ৪০%। আলফানসো, কেসার, রসপুরি, বানগানাপল্লি ও পশ্চিমবঙ্গের হিমসাগর ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় আমের জাত। এসব আমের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মিষ্টতা, ঘন রস, মনোমুগ্ধকর সুগন্ধি ও আঁশহীন টেক্সচার।


দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া। এই দেশটি বছরে প্রায় ৪.১ মিলিয়ন টন আম উৎপাদন করে। ‘গেডং গিনচু’ ও ‘আরুমানিস’ জাতের আম দেশটির গর্ব। সুগন্ধি, রসালো ও তুলনামূলকভাবে ছোট আকৃতির এই জাতের আম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে ব্যাপকভাবে চাহিদাসম্পন্ন। 

আম উৎপাদনে চীনও পিছিয়ে নেই। প্রায় ৩.৮ মিলিয়ন টন উৎপাদন করে দেশটি তৃতীয় স্থানে রয়েছে। চীনের আমের জাত যেমন ‘তাইনং’ ও ‘সাননিয়ান’ বআধুনিক কৃষিব্যবস্থায় উৎপাদিত, টেকসই ও সহজে সংরক্ষণযোগ্য।

চতুর্থ স্থানে থাকা পাকিস্তান তাদের ‘চৌসা’, ‘সিন্ধরি’ ও ‘ল্যাংড়া’ জাতের জন্য বিখ্যাত। অতিমিষ্ট, নরম টেক্সচারের এই আম মধ্যপ্রাচ্যের রপ্তানি বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়।



আমেরিকা মহাদেশে মেক্সিকো ও ব্রাজিল যথাক্রমে পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে। মেক্সিকোর আতাউলফো ও টমি অ্যাটকিন্স জাতের আম ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তুলনামূলকভাবে লম্বাটে, কম আঁশযুক্ত ও সংরক্ষণে দীর্ঘস্থায়ী আমের জাতগুলো। 


আফ্রিকার দেশ মালাউইও আম উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য এক শক্তি। বছরে প্রায় ১.৯ মিলিয়ন টন আম উৎপাদন করে তারা সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। তারা ‘দোডো’, ‘আলফানসো’ এবং ‘টমি অ্যাটকিন্স’ জাতের আম চাষ করে। 

থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম যথাক্রমে অষ্টম, নবম ও দশম স্থানে অবস্থান করছে। বাংলাদেশের আমের কথা না বললেই নয়। দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিস্তৃতভাবে উৎপাদিত ‘হিমসাগর’, ‘গোপালভোগ’, ‘ল্যাংড়া’, ‘ফজলি’ ও ‘হাঁড়িভাঙ্গা’ জাতের আম শুধু স্বাদে নয়, সুগন্ধি ও ঐতিহ্যে অনন্য। হিমসাগর তুলনামূলক ছোট হলেও স্বাদে অত্যন্ত মিষ্টি ও রসালো। ফজলি আকারে বড়, দেরিতে পাকে এবং রপ্তানির জন্য উপযুক্ত। হাঁড়িভাঙ্গা জাতের আম বিগত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে দামি আমের নাম নিতে গেলে জাপানের Taiyo no Tamago, অর্থাৎ “সূর্যের ডিম”—সবার আগে উঠে আসে। এটি মূলত মিয়াজাকি প্রদেশে জন্মানো একটি বিশেষ জাতের আম, যা রং, স্বাদ ও উৎকৃষ্ট মানের কারণে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে বিলাসবহুল ফল হিসেবে।


ভারত উপমহাদেশ ফলের রাজা হিসেবে পরিচিত হলেও, আশ্চর্যের বিষয়, ইউরোপে আম তেমন জনপ্রিয় নয়। এটির পেছনে অবশ্য অনেক কারণ আছে। প্রথমত, আম একটি গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি ফল, ইউরোপে উৎপাদিত হয় না। স্বাদ, গন্ধ ও গঠন ঠিক রাখতে হলে আম নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অত্যন্ত সতর্কভাবে পরিবহন করতে হয়। পরিবহন ব্যয়ের কারণে আমের দাম বেড়ে যায় আবার পরিবহনে সময়ের কারণে স্বাদ ও গন্ধ পরিবর্তন ঘটে। সম্ভবত এসব কারণে ইউরোপের দেশগুলোতে আম ততোটা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে নাই।

তবে আমের জনপ্রিয়তা ও উৎপাদন বিশ্বজুড়ে বেড়ে চলছে। নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন, সংরক্ষণের আধুনিক পদ্ধতি এবং রপ্তানির সুযোগ বাড়ার ফলে এই ফলটি এখন শুধু ভারতীয় উপমহাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী ফলপ্রেমীদের মন জয় করে চলেছে। আম শুধুমাত্র একটি ফল নয়, বরং এটির সঙ্গে ইতিহাস, সংস্কৃতি, অর্থনীতি জড়িত।  বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন, উন্নত সংরক্ষণ ও পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত হলে আগামী দিনে এই ফলের বাজার আরও বিস্তৃত হবে। দক্ষিণ এশিয়ার মাটিতে জন্ম নেওয়া এই রসালো ফল বিশ্বের সকল দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে অচিরেই।

Tuesday, May 13, 2025

আরএসএস (RSS): প্রতিষ্ঠা, হিন্দুত্ববাদী উদ্দেশ্য ও ইতিহাস

ভূমিকা

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS – Rashtriya Swayamsevak Sangh) ভারতের একটি ডানপন্থী, হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। এটি ভারতের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে এক বিশাল প্রভাব বিস্তারকারী প্রতিষ্ঠান, যার আদর্শ ও কর্মকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক ও আলোচনা চলছে।

প্রতিষ্ঠা ও প্রাথমিক উদ্দেশ্য

আরএসএস প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, নাগপুরে। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার, যিনি কংগ্রেস দল ও হিন্দু মহাসভা–র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

সংগঠনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল:

•ভারতীয় হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করা,

•হিন্দুদের "আত্মরক্ষা" ও "শক্তি" অর্জনের পথে পরিচালিত করা,

•হিন্দু জাতীয়তাবাদের বিকাশ।


হিন্দুত্ববাদী দর্শন

আরএসএস "হিন্দুত্ব" (Hindutva) মতবাদে বিশ্বাসী, যার মূল ধারণা দেন **বিনায়ক দামোদর সাভারকর**। হিন্দুত্ববাদের মূল বক্তব্য হলো:

• ভারত হলো শুধু একটি ভূখণ্ড নয়, এটি হিন্দু সংস্কৃতির জন্মভূমি ও পূণ্যভূমি।

•যারা ভারতকে তাদের পিতৃভূমি ও ধর্মভূমি হিসেবে মানে না (বিশেষ করে মুসলমান ও খ্রিস্টানদের দিকে ইঙ্গিত), তারা হিন্দু জাতির মূল ধারার বাইরে।

এই মতবাদের মাধ্যমে আরএসএস একটি একধর্মীয়, সংস্কৃতিনির্ভর জাতি গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে, যেখানে হিন্দু সংস্কৃতিই রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে।


কর্মপদ্ধতি ও সাংগঠনিক কাঠামো

আরএসএস একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে শুরু হলেও, এর রাজনৈতিক শাখা হিসেবে গড়ে ওঠে ভারতীয় জনসংঘ ও পরে ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP)।

আরএসএস এর বিভিন্ন শাখা ও প্রশিক্ষণ শিবিরের মাধ্যমে:

•যুবকদের "শারীরিক ও মানসিক প্রশিক্ষণ

•দেশপ্রেম ও হিন্দু ঐতিহ্যের শিক্ষাদান,

•সামাজিক কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে।

বিতর্ক ও সমালোচনা

আরএসএস বারবার সমালোচনার মুখে পড়েছে:

•১৯৪৮ সালে মহাত্মা গান্ধী হত্যার পর সংগঠনটি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল (যদিও হত্যাকারী নাথুরাম গডসে সরাসরি সদস্য ছিলেন না বলে দাবি করা হয়)।

•ধর্মনিরপেক্ষতা, সংখ্যালঘু অধিকার ও বহুত্ববাদী ভারতের ধারণার বিরোধী বলেও অনেকেই মনে করেন।

•বিভিন্ন সময়ে সংগঠনটি মুসলমান ও খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতা ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

বর্তমান প্রভাব

আজ আরএসএস ভারতের সবচেয়ে বড় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যার হাজার হাজার শাখা ও কোটি সদস্য রয়েছে।এটি শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, শিক্ষা, সমাজসেবা, ইতিহাস চর্চা, ধর্মীয় সংস্কার ও অর্থনৈতিক চিন্তাধারায়ও প্রভাব বিস্তার করছে।বর্তমান ভারতের শাসক দল BJP ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও আরএসএস থেকে উঠে আসা একজন সদস্য।

উপসংহার

আরএসএস ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং একই সঙ্গে বিতর্কিত নাম।

একদিকে এটি হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থান ও ঐক্যের এক রূপক হয়ে উঠেছে, অন্যদিকে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র, সংখ্যালঘু অধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর প্রভাব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।


যার দৃষ্টিভঙ্গি যাই হোক না কেন, আরএসএস যে ভারতের সমাজ-রাজনীতি ও ভবিষ্যতের গতিপথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে, তা অস্বীকার করা যায় না।


Saturday, May 10, 2025

হিট স্ট্রোক (Heat stroke)

সারাদেশে তীব্র তাপদাহ চলছে। প্রচন্ডে গরমে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে হিট স্ট্রোকে আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। শিশু, বয়স্ক, নারী পুরুষ নির্বিশেষে যে কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন তবে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি।

👉হিট স্ট্রোক (heat stroke) কি

এটি এমন একটি শারীরিক অবস্থা, যেখানে শরীর অতিরিক্ত তাপে উত্তপ্ত হয়ে স্বাভাবিক তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং শরীর আর ঘাম দিয়ে তাপ ছাড়তে পারে না। শরীরের তাপমাত্রা ১০৪°F (৪০°C) বা তার বেশি উঠলে এটি ঘটে। এতে মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড, কিডনি এবং পেশিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।



👉কি কারণে হয়

•সূর্যের প্রচণ্ড তাপ বা গরম আবহাওয়ায় দীর্ঘক্ষণ থাকা

•ভারী কাজ বা ব্যায়ামের কারণে শরীরের অতিরিক্ত উত্তাপ

•গরম পরিবেশে পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন)


👉কিভাবে হয়

•ঘর্মগ্রন্থি (sweat gland) শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘাম তৈরি করে। ঘাম বেরিয়ে শরীর ঠান্ডা করে। গরমে ঘাম দিয়ে প্রচুর পানি হারায়। পানি ও ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি তৈরি হয়। এতে ঘর্মগ্রন্থি দ্রুত শুকিয়ে যেতে থাকে এবং ঘাম উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ঘাম না হওয়ায় তাপ বের হতে পারে না।

•মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। হিট স্ট্রোকে এটি নিজেই অকার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে শরীর ঘাম তৈরি করার সংকেত দিতে ব্যর্থ হয়।

•অতিরিক্ত গরমে রক্তচাপ ও রক্তসঞ্চালন ব্যাহত হওয়ায় ঘর্মগ্রন্থিতে পর্যাপ্ত রক্ত পৌঁছায় না। ফলে ঘাম তৈরি হয় না।


এসব কারণে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকে (১০৪°F বা তার বেশি)। ফলে মস্তিষ্ক, কিডনি, যকৃত ও হৃদপিণ্ড ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি ও এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।


👉 লক্ষণ কি

√শরীরের তাপমাত্রা ১০৪°F বা তার বেশি

√ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া

√ত্বক লাল, গরম ও শুকনো হয়ে যাওয়া

√বিভ্রান্তি, অসংলগ্ন কথা বলা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

√নাড়ি (pulse) দ্রুত চলেএবং দুর্বল হয়ে পড়ে

√শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির মতো উপসর্গ

√মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব বা বমি, খিঁচুনি


👉 করণীয় 

√তাৎক্ষণিকভাবে ছায়া বা শীতল স্থানে নিয়ে যেতে হবে

√জামাকাপড় ঢিলা করুন বা খুলে দিন

√ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর স্পঞ্জ করে দিন বা ঠান্ডা কাপড় পেঁচিয়ে দিন

√পাখা দিয়ে বাতাস দিন, প্রয়োজনে বরফের থলি ব্যবহার করুন

√জ্ঞান থাকলে ধীরে ধীরে পানি পান করান (অজ্ঞান হলে কিছু খাওয়াবেন না)

√দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান — সময় নষ্ট করা বিপজ্জনক হতে পারে।

👉প্রতিরোধ

√প্রচণ্ড রোদে বা গরমে দীর্ঘক্ষণ না থাকা

√ঢিলেঢালা, হালকা রঙের ও সুতি কাপড় পরা

√প্রচুর পানি পান করা ও ডিহাইড্রেশন এড়ানো

√গরম আবহাওয়ায় ব্যায়াম বা ভারী কাজ না করা

√রোদে ছাতা বা টুপি ব্যবহার করা

√পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ছায়াযুক্ত স্থানে থাকা

√শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থদের যত্ন নেয়া

√বাইরে গেলে সানস্ক্রিন ও সানগ্লাস ব্যবহার

বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ: জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক এক হুমকি!

 🧬অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের পর থেকে মানবসভ্যতা যেন এক নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। আগে যেসব সংক্রমণে মানুষ মৃত্যুবরণ করত, সেগুলো অ্যান্টিবায়ো...