Monday, December 30, 2024

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও উন্নয়ন

তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে পুরাতন স্থাপনা ভেঙে সেই স্থানে নুতন অবকাঠামো গড়ার জোয়ার চলছিল। সড়ক ও বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটায় সেটির প্রভাবে দুরপাল্লার রেল চলাচল তার গুরুত্ব হারিয়ে লোকসান দিতে থাকে। নিউইয়র্ক শহরের এখনকার ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেন এবং সেটির মাটির নীচের পেনসিলভ্যানিয়া ষ্টেশনের জায়গায় ছিল একটি ষ্টেশন। ১৯০৫ সালে নির্মাণ করা সেই রেলওয়ে ষ্টেশন ছিল নিউইয়র্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। কিন্তু পুঁজিবাদের লাভ-লোকসানের সমীকরণে ষ্টেশনটি গুরত্ব হারিয়ে ফেলেছিল।


রেল কর্তৃপক্ষ বিশাল এলাকা জুড়ে এই ষ্টেশন বিক্রির জন্য নিলামে তুলে। এক ব্যবসায়ী সেটি কিনে নিয়ে ভেঙ্গে নুতন স্থাপনা তৈরির ঘোষণা দিতেই প্রতিবাদের ঝড় উঠে। সেইসময় আমেরিকায় ঐতিহ্য বা ঐতিহাসিক স্থাপনা রক্ষা করার জন্য কোন আইন ছিল না। ১৯৬৩ সালে ষ্টেশনটি ভেঙে ফেলে নুতন স্থাপনা তৈরি শুরু হয়। তবে অব্যাহত প্রতিবাদের ফসল হিসেবে ১৯৬৫ সালে আমেরিকায় ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করা হয়। ততোদিনে বর্তমান মেডিসন স্কয়ার গার্ডেন নির্মাণ প্রায় শেষ😢! এখনো পুরাতন পেনসিলভ্যানিয়া রেলওয়ে ষ্টেশন ভেঙে ফেলার ঘটনাকে নিউইয়র্কের উন্নয়ন ইতিহাসে ক্ষত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বর্তমানে উন্নয়নশীল অনেক দেশে ষাটের দশকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো অবকাঠামো ও স্থাপনা উন্নয়ন চলছে। তবে স্থাপনা বা অবকাঠামো উন্নয়নে পরিবেশ, ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় নেয়া উচিত।

#MRKR

Friday, December 20, 2024

স্বাধীন আরাকান

বাংলাদেশের সঙ্গে বার্মার সীমান্তবর্তী রাজ্য আরাকান বা রাখাইন। বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী এই রাজ্যের দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি নামে একটি স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহী গোষ্ঠী। 

প্রায় ৩৭ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের আরাকানের জনসংখ্যা কমবেশি ৩৫ লক্ষ। জনসংখ্যার ৭৭% বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং ২২% মুসলমান, যারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নামে পরিচিত। এই রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ, ভারত ও চিনের স্বার্থ সরাসরি সংশ্লিষ্ট।


•রাখাইনে গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দরের বড় বড় প্রকল্প গড়ে তুলছে চীন। চকপিউ এলাকায় একটি সমুদ্রবন্দর গড়ে বিশেষ এক অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ করেছে চিন। এই বন্দর থেকে দুইটি পাইপলাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে চীন ভূখণ্ডে। একটা গ্যাসলাইন অপরটি তেলের। মধ্যপ্রাচ্য থেকে যে জ্বালানি চিন আমদানি করবে তা এই পথে কুনমিং পর্যন্ত নিয়ে যাবার ব্যবস্থা হয়েছে।

•রাখাইন প্রদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের অর্থায়নে কালাদান মাল্টিমোডাল প্রকল্পের কাজ চলমান। চট্টগ্রামকে বাইপাস করে কলকাতা থেকে সিতওয়ে অর্থাৎ আগের আকিয়াব বন্দর পর্যন্ত নৌপথকে জাহাজ চলাচলের উপযুক্ত করেছে ভারত। কলকাতা থেকে প্রথমে সমুদ্রপথে রাখাইনের সিতওয়ে, তারপর কালাদান নদীপথে পালেতোয়া, সেখান থেকে সড়কপথে ভারতের মিজোরাম তথা উত্তর-পূর্বাঞ্চল, কালাদান মাল্টিমোডাল প্রজেক্টের রুট। যা এখন আরাকান আর্মির দখলে।

•রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, জল ও স্থলে সীমান্ত থাকার কারণে আরাকান বাংলাদেশের কাছ বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ। আরাকান আর্মি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দিয়ে গঠিত। আবার রোহিঙ্গাদের সংগঠন রোহিঙ্গা আর্মি, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের সঙ্গে আরাকান আর্মির বিরোধ রয়েছে। বর্তমানে কমবেশি ১৫ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে রয়েছে। আরাকান আর্মি স্বাধীনতা ঘোষণা করলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের জন্য নুতন এই দেশটির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার বিকল্প নেই বাংলাদেশের।

#trend #Bangladesh #india #China #Myanmar

Tuesday, December 17, 2024

ত্বকের বলিরেখা দূর করতে বোটক্স চিকিৎসা

বয়স বাড়ার সাথে তাল মিলিয়ে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমতে থাকে, যার ফলে বলিরেখা বা ভাঁজের আবির্ভাব ঘটতে থাকে। ত্বকে অবস্থিত সূক্ষ্ম মাংসপেশির মাধ্যমে অভিব্যক্তি প্রকাশ এবং দৃশ্যমান ভাঁজ নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। অভিব্যক্তি প্রকাশ করার সময় সুক্ষ্ম মাংসপেশী স্নায়ুর নির্দেশনায় নানা মাত্রায় দৃঢ়তা লাভ করে থাকে। এই মাংসপেশি বয়োঃবৃদ্ধির সাথে ক্রমশ দৃঢ় হতে থাকে। একসময় শক্ত মাংসপেশির কারনে ত্বকে ভাঁজ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে, যা বলিরেখা নামে পরিচিত। সৌন্দর্য সচেতন মানুষ এই বলিরেখা থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকে। আজকাল স্থায়ী না হলেও সাময়িকভাবে বলিরেখা দূর করার নানা ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে দ্রুত এবং সহজভাবে বলিরেখা দূর করা যায় বটিউলিনিয়াম টক্সিন ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে।  এই পদ্ধতি বর্তমানে বলিরেখা দূর করার সবচেয়ে জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। 

বোটক্স কি?

বোটুইলিনিয়াম নামে একধরনের স্নায়ু বিষ পরিশোধিত করে বোটক্স তৈরি করা হয়ে থাকে। এটি ত্বকের চিকিৎসা ছাড়াও আরো অনেক রোগের চিকিৎসায় ব্যাবহার করা হয়ে থাকে।

কিভাবে কাজ করে?

নির্ধারিত মাংসপেশির গোঁড়ায় প্রয়োজনীয় মাত্রায় বোটক্স ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। ইনজেকশনের স্থান এবং মাত্রা নির্ধারণে চিকিৎসকের বিশেষজ্ঞ জ্ঞান এবং দক্ষতার প্রয়োজন হয়। বোটক্স নির্ধারিত মাংসপেশিকে অসাড় এবং নরম করে দেয়। ইনজেকশন দেয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বোটক্স কাজ করা শুরু করে, এবং ৫-১০ দিনের মধ্যে ফলাফল পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। একবার ইনজেকশন দেয়ার পর সাধারনত ৩-৬ মাস কার্যকারিতা থাকে। তারপর আবার চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন হয়। এই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে থাকার প্রয়োজনীয়তা নেই। 


পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

সাধারণত ইঞ্জেক্সনের কারণে সাময়িক জ্বালা, পোড়া এবং অসাড়তা অনুভূত হয়। তবে ইনজেকশনের স্থান নির্ধারণে ভুলের কারণে অভিব্যক্তি বা চেহারার বিকৃতি হতে পারে। 

খরচ

বোটক্স ইউনিট হিসেবে প্রদান করা হয়ে থাকে। চিকিৎসা দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ইউনিট এবং চিকিৎসকের ফি যোগ করে খরচ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। 

Monday, December 16, 2024

বাংলাদেশ ও ত্রিপুরা

ভৌগোলিকভাবে তিনদিক দিয়ে বাংলাদেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং আসামের সঙ্গে একটি মাত্র স্থলপথে সংযুক্ত ভারতের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরা।রাজ্যটিতে জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ বর্তমানে বাঙালি। অতীতের সংখ্যাগরিষ্ঠ আদিবাসী সম্প্রদায় এখন জনসংখ্যার মাত্র ৩০ শতাংশ।

ত্রিপুরার মাণিক্য রাজাদের শাসন ছিল এক বর্ণাঢ্য অধ্যায়। রাজারা প্রথমদিকে পূর্ণ স্বাধীন ছিলেন, তবে মোগল শাসক ও বাংলার নবাবদের কাছে একসময় তাদের বশ্যতা স্বীকার করতে হয়। রাজারা বারবার মোগল দরবারে কর দিতেন। পরবর্তীতে, ব্রিটিশ শাসকরাও ত্রিপুরার স্বাধীনতাকে সীমিত করে। পলিটিক্যাল এজেন্টের মাধ্যমে রাজ্য পরিচালনার উপর কড়া নজর রাখত তারা।

দেশভাগের সময় ত্রিপুরায় হিন্দু শরণার্থী এবং পূর্ববঙ্গে ত্রিপুরা থেকে মুসলিম শরনার্থীদের কারণে জনসংখ্যায় বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। বর্তমানে রাজ্যটির জনসংখ্যার ৮০% হিন্দু এবং মাত্র ৯% মুসলিম ধর্মালম্বী। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজনের সময় ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হওয়ার দাবিকে বাস্তবসম্মত করে তুলেছিল। তবে একাধিক রাজনৈতিক, সামাজিক এবং কৌশলগত কারণে তা শেষ পর্যন্ত ঘটেনি।

সে সময় এই ইস্যুতে ত্রিপুরার রাজপরিবার বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। পাকিস্তানে যোগ দেওয়ার পক্ষে ছিলেন ত্রিপুরার রাজপরিবারের সদস্য মহারাজকুমার দুর্জয়কিশোর দেববর্মন এবং রিজেন্সি কাউন্সিলের মন্ত্রী সত্যব্রত মুখার্জী। তাদের সমর্থনে ছিলেন আঞ্জুমান-এ- ইসলামিয়ার নেতা আবদুল বারিক। অন্যদিকে, রাজপরিবারের আরেক অংশ, ত্রিপুরার উপজাতি জনগোষ্ঠী এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পাকিস্তানভুক্তির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ভারতভুক্তির পক্ষে সোচ্চার হয়।



ঠিক এই সময় ১৯৪৭ সালের ১৭ মে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর দেববর্মনের মৃত্যুর পর তার নাবালক পুত্র কিরীট বিক্রম কিশোর দেববর্মন রাজ্যের উত্তরাধিকারী হন। প্রথা অনুযায়ী ব্রিটিশ সরকার রাজ্য পরিচালনার জন্য গঠন করে রিজেন্সি কাউন্সিল বা পরামর্শক পরিষদ। এই কাউন্সিলের নেতৃত্বে ছিলেন মহারানী কাঞ্চনপ্রভা দেবী। হিন্দু ধর্মাবলম্বী রাণী সেই রাজনৈতিক সংকটময় সময়ে ত্রিপুরাকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করার পথে অগ্রসর হন।

ব্রিটিশরা ভারত-ত্যাগের পরপরই গুজব রটে যায় যে পূর্ব পাকিস্তানের মুসলিম সৈন্যরা ত্রিপুরা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের নির্দেশে ভারত সরকার ত্রিপুরার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। আসাম থেকে সেনাবাহিনী প্রেরণ করে এবং জরুরী বার্তা পাঠিয়ে পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানকে বিষয়টি অবগত করা হয়।

ভিন্ন একটি সূত্র মতে ত্রিপুরার মহারাণীও পূর্ব পাকিস্তানের সাথে যোগদানে আগ্রহী ছিলেন। অবশ্য মহারাণী চাইলেও ত্রিপুরাকে পূর্ব পাকিস্তানের সাথে যুক্ত করতে পারতেন কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। কেননা সেই সময় বিহারে দাঙ্গার প্রতিক্রিয়ায় পূর্ববঙ্গের নোয়াখালী অঞ্চলে দাঙ্গা সৃষ্টি হলে বিপুল সংখ্যক বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বী ত্রিপুরা রাজ্যে শরণার্থী হিসেবে প্রবেশ করে। হিন্দু প্রধান রাজ্য ত্রিপুরা এবং মুসলিম প্রধান পূর্ববঙ্গের মধ্যে তখন একটা মনস্তাত্ত্বিক বিরোধ গড়ে উঠে। এই বিরোধ টপকিয়ে বাংলাভাষী এই দুই অঞ্চলকে এক করার মত যোগ্য কোনো নেতৃত্ব তখন ত্রিপুরায় ছিল না।


আরেকটি কারণ তখনকার পূর্ববঙ্গের উর্দুভাষী মুসলিম নেতৃত্ব বা পাকিস্তানের নেতৃত্ব পূর্ববঙ্গকে ভৌগলিকভাবে শক্তিশালী করার প্রতি মনোযোগী ছিলেন না। নেতৃত্বের অদূরদর্শিতা ও অবহেলার কারণেই আরাকান রাজার আবেদন সত্ত্বেও আরাকানকে পাকিস্তানের অংশ করা হয়নি, ত্রিপুরাও চলে যায় ভারতের করায়ত্তে।

১৯৪৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নাবালক রাজা কিরিটী বিক্রম মাণিক্যের পক্ষে মহারানী কাঞ্চনপ্রভা দেবী দিল্লিতে ত্রিপুরা রাজ্যকে ভারতভুক্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ১৫ অক্টোবর ত্রিপুরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অংশ হয়। ত্রিপুরার ভারতভুক্তি চুক্তি রাজ্যটির সাড়ে ৫০০ বছরের রাজতান্ত্রিক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটায়।

(সংগৃহিত ও সম্পাদিত)

#trend #India #Bangladesh #Pakistan #politics

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতে মাস হিস্টিরিয়া

মাস হিস্টিরিয়া (Mass hysteria) বা গণ-মানসিক অস্থিরতা এমন একটি পরিস্থিতি যেখানে একটি সমাজের মানুষ পরস্পরের কাছ থেকে মানসিক অস্থিরতা বা ভীতি ধারণ করে এবং তা দ্রুত ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এধরনের পরিস্থিতিতে ব্যক্তি তার স্বাভাবিক চিন্তা ও আচরণ হারিয়ে ফেলেন এবং অস্বাভাবিক বা অযৌক্তিক আচরণ করতে শুরু করেন। মাস হিস্টিরিয়া একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রক্রিয়া, যা মানুষের মানসিক অস্থিরতা এবং ভয়কে বাহিত করে। এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে, সঠিক সময়ে সচেতনতা এবং সহায়তা প্রয়োজন।

মাস হিষ্টেরিয়ার কারণ

সামাজিক চাপ, গুজব বা অবর্ণনীয় শঙ্কা বা অজ্ঞতা থেকে এটি শুরু হয় এবং সমাজের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। গণ-মানসিক অস্থিরতার কিছু কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে যেমন,

•অলৌকিক: কিছু ক্ষেত্রে কোনো অজ্ঞাত কারণ বা শব্দের কারণে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ওঠে, যেমন "অদৃশ্য রোগ" বা "ভূতপ্রেত" সংক্রান্ত গুজব।

•ভয় বা শঙ্কা: কোনো দুর্যোগ বা বিপর্যয় ঘটলে, যেমন •প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা রোগ সংক্রমণ, তখন ভয়ের অনুভূতি একজনের মধ্যে সঞ্চালিত হয়ে আরেকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

•সংবাদ বা সামাজিক মাধ্যমের গুজব: কোন ঘটনা যার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই কিন্তু ভাইরাল হওয়ার কারণে মানুষ সেটির প্রভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করে।

•অস্বাভাবিক আচরণ: এক বা একাধিক ব্যক্তি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করলে কখনো কখনো তা অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যেমন রাস্তায় কেউ অদ্ভুতভাবে হাঁটছে বা চিৎকার করছে।


মাস হিস্টিরিয়ার কিছু উদাহরণ:

•মিডিয়ায় গুজব: ১৯৯০-এর দশকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমে কিছু গুজব প্রচারিত হয়েছিল, যার ফলে মানুষের মধ্যে এক ধরনের হিস্টিরিয়া ছড়িয়ে পড়েছিল।

•সামাজিক অস্থিরতা: ১৯৫০-৬০-এর দশকে আমেরিকার কিছু এলাকায় গুজব বা ভয় ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে বলা হতো যে কিছু "অজানা রোগ" মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে, এবং এ কারণে হাজার হাজার মানুষ অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে।

মাস হিস্টিরিয়ার প্রভাব:

•মানসিক স্বাস্থ্য: এটি ব্যক্তি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যকে সরাসরি প্রভাবিত করে। উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা মানুষের জীবনে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

•সামাজিক বিভাজন: একটি গ্রুপের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া অস্থিরতা বা ভীতি অন্যদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে।

•স্বাস্থ্য সেবা বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা: যখন ভীতি অনেক বেশি হয়ে ওঠে, তখন চিকিৎসা ব্যবস্থা বা আইন-শৃঙ্খলাও চাপের মধ্যে পড়ে, যা সেবা প্রদানে বিঘ্ন ঘটায়।

প্রতিকার:

•যথাযথ তথ্য প্রদান: গুজব বা ভ্রান্ত ধারণা দূর করার জন্য সঠিক তথ্য সরবরাহ করা উচিত।

•মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা: আক্রান্তদের মানসিক কাউন্সেলিং প্রয়োজন।

•সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি: শিক্ষা ও সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে মাস হিস্টিরিয়ার মতো পরিস্থিতি ঠেকানো সম্ভব।


ভারতের সংবাদ ও সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে গুজব ও অপতথ্য ছড়িয়ে দেয়ায় সেদেশের মানুষের বড় একটি অংশ মাস হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে বলে ধরে নেয়া যায়।

#HOAX #masshysteria #trend #India #Bangladesh

Sunday, December 1, 2024

এইডস'কে জানুন

এইডস ভাইরাস জনিত যৌন বাহিত একটি রোগ। ১৯৮১ সালে প্রথম সনাক্তের পর এখন পর্যন্ত বিশ্বে প্রায় ৯ কোটি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৫ কোটি মৃত্যুবরণ করেছেন এবং কমবেশি ৪ কোটি মানুষ এই ভাইরাস বহন করে জীবনযাপন করছেন।

 এইডস কি

হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) আক্রান্ত মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেলে এইডস্ রোগ হয়। 

কিভাবে ছড়ায় 

এইচআইভি যৌনসম্পর্ক, রক্ত সঞ্চালন, আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ, আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত ইনজেকশন সিরিঞ্জের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির পোশাক পরিচ্ছদ বা তৈজসপত্রের মাধ্যমে এইডস ছড়ায় না। 


কি ঘটে

এইচআইভি সংক্রমণ হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে থাকে। আক্রান্ত অনেকের প্রাথমিকভাবে কোন‌ লক্ষন দেখা যায় যায় না। কয়েকটি ধাপে এইচআইভি সংক্রমিত মানুষ এইডস রোগীতে পরিনত হন।

প্রথম ধাপে কয়েক সপ্তাহ হালকা সর্দি, জ্বর ফ্লুর মতো উপসর্গ থাকে।

দ্বিতীয় ধাপ একমাস থেকে কয়েক বছর সময় নিতে পারে। এই পর্যায়ে আক্রান্ত ব্যক্তির কোন লক্ষণ থাকে না, সুস্থ মানুষের মতো জীবনযাপন চলতে থাকে।

তৃতীয় পর্যায়ে আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে।

লক্ষন কি 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হওয়ার কারণে এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তি যে কোন ধরনের সংক্রামক রোগের ঝুঁকিতে থাকেন। 

ফুসফুসের সংক্রমণের ফলে কাশি, জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট, পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণের কারণে ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, খাবার অরুচি, বমি এবং গিলতে অসুবিধা হয়। অন্যান্য লক্ষনের মধ্যে ওজন কমতে থাকা, রাতের ঘাম, ফুসকুড়ি এবং গ্রন্থি ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।

চিকিৎসা

এইডস ভাইরাস জনিত একটি প্রাণঘাতী রোগ, যার টিকা নেই এবং এই রোগ থেকে মুক্তি লাভ করা যায় না। তবে চিকিৎসার মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তি দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।

রোগের লক্ষন ও জটিলতা অনুযায়ী মুখে খাবার ঔষধ বা ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে।

অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (এআরটি) এইচআইভির জন্য আদর্শ চিকিৎসা। এটির মাধ্যমে ভাইরাসের শক্তি কমিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়, যা এইডসের অগ্রগতি রোধ করে।

এইডসের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি এবং সারাজীবন চালিয়ে যেতে হয়।

প্রতিরোধ

•যৌন সঙ্গী নির্বাচনে সতর্ক তথ্য থাকুন। বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে কনডম ব্যবহার করুন।

• যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশাসন মেনে চলার চেষ্টা করুন।

মনে রাখবেন এইডস প্রাণঘাতী রোগ হলেও সময়মতো সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায়। আক্রান্ত হলে চিকিৎসা অব্যাহত রাখুন এবং নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

#AIDS #HIV #Disease #STD #Virus

Friday, November 29, 2024

যৌন বাহিত রোগ

যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে যে সকল রোগ ছড়ায় সেগুলো একত্রে যৌনবাহিত রোগ বলা হয়। সাধারণত এসব রোগ সংক্রামক। শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই বছরে কমবেশি ২ কোটি মানুষ যৌন বাহিত সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। লিঙ্গ, বয়স, বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই আক্রান্ত হতে পারেন এধরনের রোগে, তবে তরুণ বয়সীরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। যৌন সম্পর্ক ছাড়াও রক্ত সঞ্চালন, আক্রান্ত ব্যক্তির ইনজেকশন নেয়ার সিরিঞ্জ ব্যবহার এবং আক্রান্ত নারীর গর্ভের শিশু এই রোগগুলো ছড়াতে পারে। প্রায় ২০ ধরনের রোগ এভাবে সংক্রমিত হতে পারে। এগুলোকে জীবাণুর ধরন অনুযায়ী কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।



ব্যাকটেরিয়াজনিত

•স্যাংক্রোয়েড (Chancroid)

•ক্ল্যামেডিয়া (Chlamydia)

•সিফলিস (syphilis)

•গনোরিয়া (gonorrhea)

•গ্রানুলোমা ইনগুইনালি (granuloma inguinale)


ভাইরাসজনিত:

•এইডস্ (HIV/AIDS)

•ভাইরাল হেপাটাইটিস (Hepatitis)

•হার্পিস সিমপ্লেক্স (herpes simplex)

•মোলাসকাম কন্টাজিওসাম (molluscum contagiosum)


পরজীবীজনিত:

•খোসপচড়া (scabies)

•উকুন


ছত্রাকজনিত : ক্যানডিডিয়াসিস (candidiasis)

প্রোটোজোয়াজনিত: ট্রাইকোমনিয়াসিস (trichomoniasis)


লক্ষন কি

সাধারণত ঠোঁট, মুখ গহবর, যৌনাঙ্গে লক্ষন প্রকাশ পেয়ে থাকে। তবে লক্ষন প্রকাশ ছাড়াও কোন কোনটি দীর্ঘদিন শরীরে থাকতে পারে, যেমন সিফিলিস, এইডস্, হেপাটাইটিস ইত্যাদি।

জটিলতা

রোগের ধরন অনুযায়ী নানা ধরনের জটিলতা হতে পারে। এইডস্, সিফিলিস, হেপাটাইটিস মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

প্রতিরোধ

•যৌন সঙ্গী নির্বাচনে সতর্ক তথ্য থাকুন। বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে কনডম ব্যবহার করুন।

• যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশাসন মেনে চলার চেষ্টা করুন।

•কিছু রোগের টিকা রয়েছে যেমন হেপাটাইটিস। টিকা নিন।

•যৌনাঙ্গে যে কোন ধরনের পরিবর্তন বা আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকুন।

সর্বোপরি সচেতনতা এবং দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে যৌন বাহিত রোগ থেকে সহজে নিরাময় হতে পারে।

#STD #Sex #Disease #Health

Wednesday, November 27, 2024

জিকা কি, কেন এবং চিকিৎসা

বাংলাদেশে আবার জিকা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলছে। দেশে প্রথম জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয় ২০১৪ সালে। জিকার কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, এর চিকিৎসা উপসর্গভিত্তিক। জিকার পাশাপাশি এখন চিকুনগুনিয়ায়ও অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। সেইসঙ্গে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে মৃত্যু। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা দরকার ডেঙ্গু, জিকা, চিকুনগুনিয়া এই তিনটি রোগই ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে।


কিভাবে ছড়ায়?

জিকা এডিস প্রজাতির মশার (Ae. aegypti এবং Ae. albopictus) মাধ্যমে ছড়ায়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড়ালে জিকা ভাইরাস মশাতে প্রবেশ করে। সংক্রামিত মশা অন্য একজন সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে ভাইরাসটি সেই ব্যক্তির রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে। যে কেউ জিকা ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হতে পারে, তবে গর্ভবতী মহিলারা গর্ভপাত এবং জন্মগত অস্বাভাবিকতা যেমন ভ্রূণের মাইক্রোসেফালি এবং অন্যান্য স্নায়বিক অস্বাভাবিকতার ফলে জিকা ভাইরাস শিশুর সম্ভাবনার জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। গর্ভবতী মহিলার  জিকা হলে প্লাসেন্টায় প্রবেশ করে ভ্রূণকে প্রভাবিত করতে পারে।

অরক্ষিত যৌনতা, যেখানে জিকা প্রাদুর্ভাব রয়েছে সেসব এলাকায় ভ্রমণ বা অবস্থান করা, রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে জিকা আক্রান্তের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

লক্ষণ কি?

•চ্যাপ্টা বা উত্থিত চুলকানি চামড়া ফুসকুড়ি,

•জ্বর

•লাল চোখ

•শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া

•ঘাম

•সন্ধিস্থলে ব্যাথা

• মাংশপেশী ও মাথা ব্যাথা

•অবসাদগ্রস্ততা

•ক্ষুধামন্দা ও বমিবমি ভাব 


জটিলতা

•মারাত্মক পানিশূন্যতা

•শিশুর জন্মগত ত্রুটি, বিশেষ করে মাইক্রোসেফালি

•গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে গর্ভপাত এবং মৃতপ্রসব, সময়ের পূর্বে জন্ম

•জিকা-সম্পর্কিত মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত শিশুর চোখের সমস্যা, যেমন রেটিনা বা অপটিক নার্ভের ত্রুটি যা পরবর্তী জীবনে অন্ধত্বের কারণ হতে পারে।

•শ্রবণ বৈকল্য

•তীব্র ছড়িয়ে পড়া এনসেফালোমাইলাইটিস (ADEM)

•Guillain-Barre সিন্ড্রোম

চিকিৎসা

জিকার নির্দিষ্ট ওষুধ বা টিকা নেই। সাধারণত লক্ষণ অনুযায়ী জিকার চিকিৎসা দেয়া হয়। বেশিরভাগ মানুষ সাধারণত পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং সহায়ক চিকিৎসার সাহায্যে সুস্থতা ফিরে পান। জিকা ভাইরাসের চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে:

•ডিহাইড্রেশন এড়াতে পর্যাপ্ত পানীয় যেমন জল, ফলের রস, বাটারমিল্ক এবং নারকেল জল পান করুন।

•পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন কারণ সংক্রমণের কারণে ক্লান্তি এবং জ্বর হতে পারে।

•জ্বর ও ব্যাথা নাশক ঔষধ 

প্রতিরোধ 

• মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা

• অনিরাপদ যৌন মিলন থেকে বিরত থাকা

•জিকা প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে এমন এলাকায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকা।

•নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

Sunday, November 24, 2024

বেঙ্গল ক্যাট 🐈😺

বঙ্গদেশের জংলি বিড়াল ও মিশরের গৃহপালিত বিড়ালের মধ্যে প্রজনন ঘটিয়ে নুতন জাতের একটি বিড়াল প্রজাতির উদ্ভাবন করা হয়, যা বর্তমানে বেঙ্গল ক্যাট নামে পরিচিত। এটি বিশ্বে গৃহপালিত বিড়ালের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি জাত।

১৮৮৯ সাল থেকে বেঙ্গল ক্যাটের ইতিহাস পাওয়া গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের জিন মিল ১৯৬৩ সালে প্রথম এই ক্রস জাতের বিড়ালের উদ্ভাবন করেন। তাঁকেই বেঙ্গল ক্যাটের জননী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ১৯৮০ সালে তিনি সফলভাবে বেঙ্গল ক্যাট জাতটি পুর্ণাঙ্গরূপে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। ১৯৮৬ সালে এটিকে নুতন জাতের বিড়াল হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হয়।




‌চিতা বা জাগুয়ারের মতো ডোরাকাটা চামড়ার একমাত্র বিড়াল বেঙ্গল ক্যাট নানা রঙের হয়ে থাকে। গায়ের লোম সাধারণত ছোট হয়ে থাকে। তবে পার্সিয়ান ক্যাটের সঙ্গে প্রজননের ফলে লম্বা লোমের বেঙ্গল ক্যাটও দেখা যায়। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের বেঙ্গল ক্যাট পৃথিবীর বহু দেশে গৃহপালিত পশু হিসেবে নিষিদ্ধ ছিল। চতুর্থ প্রজন্মের পর থেকে বেঙ্গল ক্যাট পৃথিবীর সকল দেশেই আইনগত ভাবে পোষা প্রাণী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বেঙ্গল ক্যাট এখন পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় পোষা বিড়াল হিসেবে বিড়াল প্রেমীদের কাছে খুবই চাহিদাসম্পন্ন।

#cat #pet #petlovers #petcare #animallover

Thursday, November 21, 2024

রানি ভিক্টোরিয়া ও তাঁর মুনশী আব্দুল করিম


বিলেতের রাজ-পরিবারের ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী এবং সুদীর্ঘ ৬৩ বছর সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন রানি ভিক্টোরিয়া। ভিক্টোরিয়ার সুবর্ণ জয়ন্তীর উপহার হিসেবে ভারত থেকে পরিচারক হিসেবে দুই জনকে বিলেতের রাজপ্রাসাদে পাঠানো  হয়েছিল। তাদের একজন ছিলেন আগ্রা থেকে পাঠানো ২৪ বছর বয়সী আব্দুল করিম। ১৮৮৭ সালে উইন্ডসর ক্যাসেলে পরিচারক হিসেবে যোগ দেয়ার পর মাত্র এক বছরের মাথায় প্রাসাদের এক ক্ষমতাশীল ব্যক্তিত্বে পরিণত হন করিম।

কাজ পছন্দ না হওয়ায় চাকরি ছাড়ার কথা ভেবেছিলেন করিম। কিন্তু রানির অনুরোধে শেষ পর্যন্ত তিনি থেকে যান। সাধারণ পরিচারক থেকে ব্রির্টিশ রানি ভিক্টোরিয়াকে উর্দু শেখানোর দায়িত্বে নিয়োজিত হন লম্বা ও সুদর্শন তরুণ আবদুল করিম। রানি তাকে মুনশী বা শিক্ষক হিসেবে পদায়ন করেন। রানির শিক্ষক বা মুন্সি হয়ে উর্দু শেখানোর পাশাপাশি ভারত সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় তাকে শেখাতে শুরু করেন করিম। আস্তে আস্তে করিম রানির ঘনিষ্ঠতম এক মানুষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। 

১৮৬১ সালে স্বামী প্রিন্স আলবার্টের মৃত্যুর পর স্কটিশ ভৃত্য জন ব্রাউনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় রানির। তবে শেষ জীবনে ১৪ বছর আব্দুল করিম জন ব্রাউনের চেয়েও রানির কাছের মানুষ ছিলেন। জন ব্রাউন তার আস্থাভাজন ছিলেন বটে, তবে করিমকে তিনি পরিচারকের চেয়ে অনেক উঁচু মর্যাদায় রেখেছিলেন। 

করিমের যুক্তরাজ্যে আসার পর থেকে শুরু করে ১৯০১ সালে রানির মৃত্যুর মধ্যবর্তী কয়েক বছরে করিমকে লেখা চিঠিতে 'তোমার স্নেহময়ী মা' কিংবা 'তোমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু'  লিখে স্বাক্ষর করতেন রানি। কিছুক্ষেত্রে লেখা শেষে তিনি চিঠিতে চুমু দিতেন, যা সেই সময়ে অত্যন্ত অস্বাভাবিক একটি বিষয় ছিল।

করিম ও রানির মধ্যে নিঃসন্দেহে আবেগপূর্ণ একটি সম্পর্ক ছিল। ধারণা করা হয়  মা-ছেলের সম্পর্ক ছাড়াও তাদের সম্পর্কের বহু স্তর ছিল যা এক ভারতীয় তরুণকে ৬০ বছরের বেশি বয়সী এক নারীর আপন করে তুলেছিল।তাদের সম্পর্ক প্লাটোনিক ভালবাসার উদাহরণ বলা যেতে পারে। করিমের স্ত্রীকে রানি বিলেতে থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন। তাঁকে আগ্রায় জমি বরাদ্দ দিয়েছিলেন। ভিক্টোরিয়া করিমের পরিবারকেও নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। 

রানি ভিক্টোরিয়ার সাথে একান্তে গল্প করতেন আবদুল করিম। তাঁরা একসাথে ভ্রমন করতেন। হাইল্যান্ড কটেজে নিরিবিলি রাত কাটাতেন। তাঁরা দুজন রাতভর প্রচুর গল্প করে কাটালেও তাদের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল না বলেই ধারণা করা হয়। চিত্রকর দিয়ে করিমের কয়েকটি প্রতিকৃতি আঁকিয়েছিলেন রানি। স্বামী প্রিন্স অ্যালবার্ট যখন মারা যান তখন ভিক্টোরিয়া বলেছিলেন-আমি আমার স্বামী, সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধু, বাবা ও মাকে হারালাম। করিমও তাঁর জীবনে হয়তো একই ধরনের ভূমিকা পালন করেছিল। 

রানির ওপর করিমের প্রভাব এতোটাই বেশি ছিল যে তিনি করিমকে উইন্ডসর ক্যাসেলে নিজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রধান শোকপালনকারীদের একজন হিসেবে নির্ধারণ করেন। যদিও রানি জানতেন যে পরিবারের কাছ থেকে এরজন্য তীব্র বিরোধিতার সম্মুখীন হবেন।

রানি ও করিমের সম্পর্ক নিয়ে রাজপরিবারের সদস্য ও কর্মচারীদের মধ্যে নানা রকম গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছিল। অন্য পরিচারকরা তাঁকে হিংসা করতো। করিম রাজপরিবারে এতটাই অস্বস্তি সৃষ্টি করেছিলেন যে রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তার পুত্র সপ্তম এডওয়ার্ড কোন রকম  কারণ দর্শানো ছাড়াই করিমকে বরখাস্ত করেন এবং ভারতে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে রানি ও করিমের সম্পর্কের যাবতীয় প্রমাণাদি করিমের বিলেত ও ভারত বাড়ি গিয়ে যেন ধ্বংস করে ফেলা  হয়, সেই নির্দেশও দেন তিনি। রানির মেয়ে রাজকন্যা বিয়েত্রিচ সকল প্রাসাদে চিঠি এবং অন্যান্য দলিল খুঁজে খুঁজে বের করে সেগুলো মুছে ফেলেন। 

রাজ পরিবার রানি ও করিমের সম্পর্কের সকল নিদর্শন নিখুঁতভাবে মুছে ফেলার চেষ্টা করলেও ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর একশো বছর পর একজন সাংবাদিকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে সেই সম্পর্ক উন্মোচিত হয়। তাঁদের এই ঐতিহাসিক সম্পর্ক নিয়ে গ্রন্থ রচিত হয়েছে, ২০১৮ সালে 'Victoria and Abdul' নামে একটি সিনেমা নির্মাণ করা হয়।

#victorian #trend #photography #royalfamily

(https://www.vanityfair.com/hollywood/2017/09/queen-victoria-and-abdul-real-story?)

Istanbul: Capital of cats!

Istanbul is known  worldwide as the 'city of cats'. And it’s true; there are hundreds of thousands of stray cats in Istanbul, and many of them live better, are better fed, and even receive healthcare at times compared to their counterparts in other cities around the world. There are over 250,000 cats roaming free in Istanbul. Sometimes the city is referred to as Catstanbul! The city even has museum for cats.

The city earned this title because of the residents extended love & hospitality to the roaming street cats. The city's streets are lined with food and water bowls and small cat houses placed by residents in a communal effort to look after street cats. Many places claim to be pet-friendly, but Istanbul is exceptional. The city values its cats and dogs through the abundance of pet-friendly restaurants and hotels.

In Istanbul cats were able to freely wander into shops to nap in the window displays or occupy the seats in a café. Many of the locals will also place temporary shelters outside in the form of cat houses, carriers, or boxes and it’s not unusual to see cat treats strewn along the sidewalks where cat traffic is particularly high. Generally, every street in Istanbul has cats that are familiar to locals.

On rainy days, local people share dry spots with cats or offering up an umbrella as they waited for the bus. There are road signs warning drivers to be cautious of wandering cats. The Municipality of Istanbul has placed vending machines for cats and dogs in many parts of the city, and there are many cats use to roam around these vending machines. Citizens passing by put coins into these machines, ensuring that cats and dogs are fed.

Cats can be seen anywhere in Istanbul, whether in university classrooms, on the ferry, bus,  subway, shopping center, or even in the stadium. Turkish citizens view street animals as communally owned pets rather than traditional strays, and the country has a blanket no-kill, no-capture policy.

#cat #photography #trend #animals #petlovers

Tuesday, November 19, 2024

History of Fish & Chips in UK!


Most people think that Fish and Chips originated in England, this is not actually true. The real history of Fish and Chips is traced back to 15th Century Portugal where the dish really was invented. Like so many other famous dishes, fish and chips was created out of necessity, not culinary genius. There are about 10,500 fish & chips shop in UK. 

Most food writers, cooks, and chefs regard fish and chips as a culinary symbol of Britishness. First Friday in June every year is National Fish & Chips Day in UK.

Many food historians say that a Jewish cook, a young Ashkenezi immigrant from Portugal, named Joseph Malin, opened the first chippy in 1860 in London. The shop was so successful that it remained in business until the 1970s. At present Rock & Sole Plaice is London's oldest fish and chip restaurant and has been serving the British classic since establishment in 1871. To this day the fish is still prepared using their 154 year-old traditional recipe.

#foodie #trend #London #foodlover #photography #MRKR

Monday, November 4, 2024

কলকাতার সংস্কৃতিতে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন যে অবাঙালি নবাব

সময়টা উনিশ শতক। ব্রিটিশ শাসন পুরোপুরি কায়েম হয়ে গেলেও কিছু কিছু দেশীয় রাজ্য তখনও স্বমহিমায় বিরাজ করছে। তেমনই এক রাজ্য অযোধ্যা। বসন্ত এসেছে, রঙ লেগেছে নবাবের মনেও। কবে যে আবির মেখে উদযাপন করবেন! কিন্তু হঠাৎ নবাবের কানে এল, হিন্দুরা নাকি এবছর হোলি খেলবে না। কিন্তু কেন? রাজদরবারে ডাক পড়ল কয়েকজন ব্রাহ্মণের। তাঁরা নবাবকে জানালেন, যেহেতু একই দিনে মহরম এবং হোলির দিন পড়েছে, তাই সেবছরের জন্য রং মাখার অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইসলাম ধর্মে রংকে হারাম মনে করা হয়। শরীরের কোথাও রঙ লেগে থাকলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদে প্রবেশ করেন না। কিন্তু হোলির দিনে তো গোটা শহর রঙে ভরে উঠবেই। অওধে হিন্দুদের এই কথা শুনে মৌলভিদেরও ডেকে পাঠালেন নবাব। আর জানিয়ে দিলেন, দুই ধর্মের অনুষ্ঠানই একইরকম মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হবে। নিজে মুসলমান পরিবারে জন্মালেও প্রজাদের ধর্মই যে নবাব ওয়াজেদ আলি শাহের ধর্ম। সেখানে হিন্দু মুসলমান ভেদ নেই। সেবারের হোলির অনুষ্ঠানে যথারীতি রং মেখে হাজির হয়েছিলেন নবাব নিজেও। 

ভারতবর্ষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ইতিহাসে নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ এক কিংবদন্তি। ১৮৫৫ সালে প্রবল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মধ্যেও তিনি অযোধ্যার হনুমান গঢ়ী মন্দির রক্ষা করেছিলেন। তবে ব্রিটিশ সরকারকে চিনেছিলেন শত্রু বলেই। চরম এক প্রতিকূল পরিবেশে অনেক বাধা বিপত্তি এড়িয়ে রাজ্য চালাতে হয়েছে তাঁকে। 

সময়টা ১৮৫৬ সাল। কোম্পানির কাছে অযোধ্যার নবাবী হারালেন ওয়াজেদ আলী শাহ। পেনশন নিয়ে লখনউয়ের কোনও প্রাসাদে নিশ্চিন্তে থাকতেই পারতেন। তবে লখনৌ থেকে বেনারস হয়ে তাঁর বজরা নিয়ে পৌঁছলেন কলকাতার বিচালিঘাটে। তার ইচ্ছে ছিল কোম্পানির কাছে সওয়াল করবেন সিংহাসন উদ্ধারের জন্য। সফল না হলে যাবেন লন্ডনে, রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে। ইংরেজের ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে তাঁর মোহ তখনও কাটেনি। 

বছর না ঘুরতেই ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহে যোগ দিল অযোধ্যা। কলকাতায় গ্রেফতার করে ওয়াজিদ আলী শাহকে রাখা হলো ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে। মহাবিদ্রোহের পরাজয় দিয়েই লক্ষ্ণৌ শহরে নবাবি শাসনের ইতি ঘটল।‌ দুই বছর বন্দি জীবন শেষে তিনি কলকাতাতেই পেনশন নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।

মেটিয়াবুরুজ অঞ্চলে গড়ে উঠল নির্বাসিত নবাবের নতুন নবাবিয়ানা। যতই নির্বাসন হোক, নবাবিয়ানায় সহজে ছেদ পড়া মুশকিল। নবাব ওয়াজেদ আলি তাই সঙ্গে করে আনলেন ফেলে আসা স্মৃতি। জাঁকজমক বজায় রাখতে কলকাতা শহরের মধ্যেই গড়ে তুলেছিলেন তাঁর পরিচিত দ্বিতীয় এক টুকরো লক্ষ্মৌ। নবাবি সংস্কৃতি, আমোদ আহ্লাদ, এমনকি নবাবি খাবারও তাঁর হাত ধরে কলকাতায় পাড়ি দিল। একদিকে চিড়িয়াখানা, বাইজি সংস্কৃতি আর অন্যদিকে বিরিয়ানি কিংবা পাখির লড়াই অথবা ঘুড়ি ওড়ানো কলকাতার অন্দরমহলে দিব্যি জায়গা করে নিল তাঁর আমলে। 

তবে জৌলুশ জাঁকজমকপূর্ণ নবাবি সংস্কৃতির সঙ্গে সঙ্গে ওয়াজিদ আলী শাহ ছিলেন সাহিত্য, সঙ্গীত, নৃত্যশিল্পের অনুরাগী ও পৃষ্ঠপোষক। মেটিয়াবুরুজে নবাবের বাসগৃহ রীতিমতো শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পীদের আড্ডায় পরিণত হয়েছিল। লখনউয়ে ওয়াজিদ আলির দরবারেই ঠুমরি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছায়। আর মেটিয়াবুরুজ থেকে তা ছড়িয়ে পড়ে কলকাতার বুকে।

অনেক গান রচনা করেছেন তিনি। মাতৃভূমি লখনউ থেকে তাঁর বিচ্ছিন্নতা প্রকাশ করতে গিয়ে 'বাবুল মোরা নাইয়াহার ছুটো হি যায়ে (বাবা, আমার বাড়ি এখন আমার কাছে হারিয়ে গেছে)' রচনা করেছিলেন। এই ঠুমরির মধ্যে আছে তাঁর বিলাপ, 'আংরেজ বাহাদুর আয়ে, মুলক লেঁই লিহোঁ (সাহসী ইংরেজরা এসে দেশ কেড়ে নিয়েছে)।'

তাঁর দরবার যন্ত্রসংগীতেও ছিল তুলনাহীন। সরোদ, সানাই, তবলাকেও কলকাতায় জনপ্রিয় করে তোলেন তিনি। কত্থক নৃত্যশৈলীকে তিনি এতটাই আত্মস্থ করেছিলেন যে অনেক নৃত্যনাটিকাও তৈরি করেছিলেন। তিনি কত্থকের নতুন এক লখনউ ঘরানা তৈরি করে ফেলেছিলেন। কত্থক সর্বভারতীয় নৃত্যকলায় জনপ্রিয় করার কৃতিত্ব তাঁর।

লেখনী ও মঞ্চেও পারদর্শী ছিলেন এই নবাব। ১৮৪৩ সালে লেখা নাটক ‘রাধা কানহাইয়া কা কিস্সা’ মঞ্চস্থ করেন। এই কিস্সাকেই বলা যায় প্রথম আধুনিক উর্দু নাটক। হিন্দুস্তানি থিয়েটারের প্রথম নাট্যকার হিসেবে তাঁকে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। 

বাংলায় যখন নবজাগরণের ঢেউ চলছে ঠিক তখন লক্ষ্ণৌ ঘরানার সাংস্কৃতিক চর্চা চলছিল নবাবের মেটিয়াবুরুজের দরবারে। ঘুড়ি উৎসব, আলু বিরিয়ানি, চিড়িয়াখানা ইত্যাদি আরো অনেক কিছুই কলকাতার সংস্কৃতির অংশ হিসেবে পরিনত করার কৃতিত্ব নবাব ওয়াজিদ আলী শাহকে দেয়া হয়ে থাকে।

(সংগৃহিত ও সম্পাদিত)

Friday, November 1, 2024

মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা


 মিষ্টি কুমড়া বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয় একটি সবজি। এটির রয়েছে নানা রকম উপকারিতা এবং পুষ্টিকর গুনাগুণ, যার জন্য প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদানের 'পাওয়ার হাউস' বলা হয়ে থাকে। বিটাক্যারোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাসের মতো খনিজ উপাদানেও সমৃদ্ধ এই সবজি। তাই মিষ্টি কুমড়া মানবদেহে নানা উপকারী ভূমিকা পালন করে।

ত্বক

মিষ্টি কুমড়ায় থাকে ভিটামিন এ, সি এবং ই- যা ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়তা করে। ভিটামিন সি কোলাজেন বাড়ায়,  আর ভিটামিন ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে ‘ফ্রি র‌্যাডিকেল’ থেকে সৃষ্টি ক্ষতি পূরণ করতে ভূমিকা পালন করে। কুমড়ায় থাকা বেটা ক্যারোটিন ভিটামিন এ যে পরিনত হয়, যা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে প্রতিরোধ করে।

চোখ

ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী। মিষ্টি কুমড়ায় লুটেইন এবং জিয়াক্সানথিন থাকে। বয়সের কারণে হওয়া দৃষ্টিশক্তি কমার হাত থেকে বাঁচাতে পারে এই দুইটি উপাদান।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা 

উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন এ এবং সি থাকার কারণে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে মিষ্টি কুমড়া।অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ মিষ্টি কুমড়া ক্যানসার প্রতিরোধেঝ সাহায্য করে।

হৃৎপিন্ড ও রক্তচাপ 

পটাসিয়াম, ভিটামিন সি, আঁশ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস হিসেবে কুমড়া হৃৎপিন্ড সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে পটাসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আঁশ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। ফলে নানা ধরনের হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

 পটাসিয়ামের উৎস

মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। স্বাভাবিক রক্তচাপ, হৃৎস্পন্দন ও মাংসপেশীর কার্যকারিতার জন্য পটাশিয়াম অপরিহার্য। এছাড়াও পটাসিয়ামের অভাবে কিডনিতে পাথর হওয়া ও হাড় ভঙ্গুর রোগের সম্ভাবনা বাড়ে।

পরিপাকতন্ত্র

মিষ্টি কুমড়ায় থাকা আঁশ পাকস্থলীর জন্য উপকারী। কুমড়া প্রোবায়োটিকসের উৎস, যা পরিপাকতন্ত্রের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়ার জন্য দরকারি। আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। রক্তে কোলেস্টেরল ও কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা ঠিক রাখতেও ভূমিকা রাখে আঁশ।

মিষ্টি কুমড়ার আয়রন রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

মিষ্টি কুমড়ার বীজেও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, আঁশ ও স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে। এছাড়াও জিঙ্ক থাকে, যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

Friday, October 18, 2024

হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ


২০২২ সালে বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকাতেই হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (এইচএফএমডি) ছড়িয়ে পড়েছিল। শিশুরা বেশি আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন অভিভাবকরা। ভাইরাসজনিত এই রোগটি আগে আমাদের দেশে বেশি দেখা যেত না। তবে এটি খুবই ছোঁয়াচে ও সংক্রামক।মূলত শিশুদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা গেলেও, যেকোনো বয়সীরা এতে আক্রান্ত হতে পারেন।

কক্সাকি নামক এক ধরনের ভাইরাস এই রোগের জন্য দায়ী। এটি মারাত্মক জটিল কোনো রোগ নয়, জীবনহানির ঝুঁকিও নেই।

✓কিভাবে ছড়ায় 

আক্রান্ত ব্যক্তির ফোস্কা থেকে নির্গত রস, হাঁচি কাশি, ব্যবহৃত পোশাক এবং স্পর্শ করা যেকোনো জিনিস, এমনকি মলের মাধ্যমেও এটি ছড়ায়।

জনসমাগম যেসব জায়গায় বেশি, সেখান থেকেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি।

✓লক্ষণ কি

এ রোগ হলে হালকা জ্বরের সঙ্গে গলাব্যথা, শরীরে নানা জায়গায় পানিভর্তি ফুসকুড়ি, মুখের ভেতরে ক্ষত, মুখ দিয়ে ক্রমাগত লালা নিঃসরণ, খাবারে অরুচি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। 

হাত, পা ও জিহ্বাতে সাধারণত ফুসকুড়ি দেখা দেয় তবে উরু অথবা নিতম্বেও হতে পারে।

ত্বকের ফোস্কা বা ফুসকুড়ি অনেকটা জলবসন্তের মতো। 'ফুট অ্যান্ড মাউথ' নামে গবাদি পশুর একটি অসুখ রয়েছে যার সঙ্গে এটির কোনো সম্পর্ক নেই।

✓চিকিৎসা

ভাইরাসজনিত এই রোগের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। ৭-১০ দিনের মধ্যে সাধারণত আপনাআপনি ভালো হয়ে যায়। 

অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিভাইরাল বা অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের কোনো ভূমিকা নেই এই রোগের চিকিৎসায়।

সাধারণত লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরিচর্যা, পর্যাপ্ত পানীয় দিতে হবে। তবে ফলের জুস মুখ ও গলাব্যথা বাড়াতে পারে বলে এগুলো থেকে দূরে থাকাই ভালো। রোগীকে নরম ও কম মশলাযুক্ত খাবার দেওয়া উচিত।

✓প্রতিরোধ

শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এবং হাঁচি-কাশি থেকে দূরে থাকতে হবে।

এছাড়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা রাখতে হবে। আক্রান্ত শিশুকে স্কুলে পাঠানো যাবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অবশ্যই।

Tuesday, October 8, 2024

দুর্গাপূজার ইতিহাস



বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। যে দেবীকে উৎসর্গ করে এই উৎসব তার নাম দুর্গা। দেবী দূর্গার উৎপত্তি হয় বেদ পরবর্তী যুগে।‌ বেদের কোথাও দূর্গার নাম নেই। 
আর্য সভ্যতার আগে সমাজে কৃষিজ উৎপাদনের উৎস রূপে অম্বিকারূপী দূর্গাতে পরিণত হয়েছেন। বৈদিকযুগের পর যখন এশিয়া মাইনর এলাকা থেকে যাযাবর মেষপালক গোষ্ঠী পাঞ্জাবে স্থায়ী বসতি গড়ে তোলে, তখন থেকেই অনার্যদের সাথে সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্ব ও মিথষ্ক্রিয়া তৈরি হয়। যার ফলে অনার্যদের লোকায়ত স্তরের কিছু দেব- দেবীর আর্যীকরণ ঘটে। অসুরবধের উদ্দেশ্যে উৎপত্তির গল্প ছাড়া‌ দেবী দুর্গার কোন জন্ম ইতিহাস পাওয়া যায় না‌। আনুমানিক খ‌ষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক থেকে তৃতীয় শতকের মধ্যভাগে পারস্যের সাথে ব্যবসা আর যোগাযোগের সুত্রে সিংহবাহিনী দুর্গার জন্ম।
উপমহাদেশে দুর্গাপূজার ইতিহাস পাওয়া যায় সুলতানি যুগে। এখন যে পূজার প্রচলন তা শুরু হয় ইসলামী শাসনের সময়ে। হিন্দু নবজাগরণের জন্য ষোড়শ শতকের পন্ডিত রঘুনন্দনের পুস্তকে দুর্গাপূজার উল্লেখ রয়েছে। 
বাংলাদেশে প্রথম দুর্গাপূজার প্রচলন হয় মোগল সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে, ষোড়শ শতাব্দীতে। মোগল সম্রাট বিদূষক কুল্লুকভট্টের পিতা উদয়নারায়ণের পৌত্র অর্থাৎ কুল্লুকভট্টের পুত্র তাহিরপুরের রাজা (বর্তমান রাজশাহী) কংসনারায়ণ রায় প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকা ব্যয় করে প্রথম শারদীয় দুর্গোৎসবে আয়োজন করেন। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাদুরিয়ার (রাজশাহী) রাজা জয় জগৎ নারায়ণ প্রায় ৯ লাখ টাকা ব্যয় করে বাসন্তী দুর্গোৎসব করেন। তারপর থেকে রাজা ভুঁইয়ারা নিয়মিতভাবে দুর্গাপূজা আরম্ভ করেন। 
অবিভক্ত বাংলায় দুর্গাপূজা বলতে ১৬১০ সালের লক্ষীকান্ত মজুমদারের পূজাকেই বোঝায়। কলকাতার এই পূজায় ভক্তির চেয়ে বেশি ছিল বিত্ত বৈভবের প্রদর্শনী। এ সময়ে প্রভাবশালী জমিদার, সামন্তরাজরা ইংরেজদের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখার জন্য এই পূজার চল করেন। আঠারো উনিশ শতকের পূজা মূলত জমিদারদের মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল।

দেবী দুর্গা ঢাকায় ঠিক কবে এসেছিলেন তা বলা বেশ শক্ত।ঢাকার দুর্গাপূজা উদযাপনে সবচেয়ে আগের তথ্য পাওয়া যায় অর্থনীতিবিদ ভবতোষ দত্তের আত্মজীবনী থেকে। ১৮৩০ সালের সূত্রাপুরের একটি পূজার উল্লেখ করেছেন তিনি। ঢাকা শহরে সর্বপ্রথম দুর্গাপূজার প্রচলন ঘটে নবাব সলিমুল্লাহর আমলে। সে সময় সিদ্ধেশ্বরী জমিদার বাড়ি ও বিক্রমপুর হাউসে জাঁকজমকপূর্ণ পূজা হতো। ১৯২২-২৩ সালে আরমানিটোলার জমিদার ছিলেন বিক্রমপুরের রাজা ব্রাদার্সের বাবা শ্রীনাথ রায়, তার বাড়ির পূজাও সে সময় বিখ্যাত ছিল।
বিংশ শতকের শুরুতেও বাংলায় অভিজাতদের পারিবারিক উদযাপন ছিল দুর্গাপূজা। যেহেতু কেবল বাবুগিরি আর ইংরেজদের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখার জন্যই পালিত হত এ উৎসব, সে কারণেই ধর্মীয়ভাবের চেয়ে সেখানে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেত আমোদ-প্রমোদ। কিন্তু বিত্তবান বাবুরা দুর্গোৎসবের যে জোয়ার আনতে চেষ্টা করেছিলেন তাতে পঙ্কিলতাই ছিল বেশি । বাবুদের অর্থকৌলিন্য প্রকাশের পাশাপাশি সামাজিক মর্যাদা লাভের উপায়ও ছিল এই উৎসব।
অভিজাতদের বাইরে এখন যে সার্বজনীন পূজা প্রচলিত, তা শুরু হয় গত শতকের তিরিশের দশকে । বাংলাদেশে সার্বজনীন পূজা ব্যাপক আকারে শুরু হয় ১৯৪৭ এর দেশ বিভাগের পর। দেশ ভাগের পর এককভাবে পূজা করাটা বেশ ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে ওঠে, যার কারণে ব্রাক্ষ্মণ-অব্রাক্ষ্মণ নির্বিশেষে মিলেমিশে পূজা করার চল শুরু হয়। তবে পুরান ঢাকাসহ দেশের অনেক স্থানে এখনো পারিবারিক পূজার চল রয়ে গেছে। সনাতন ধর্মী সকলকে দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা। (সংগৃহিত ও সম্পাদিত)
#BMW #durgapuja #trend #Photography #MRKR

Wednesday, October 2, 2024

ইন্দোনেশিয়ার সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা



স্বাস্থ্য সেবার মান এবং গুনগত বিচারে পার্শ্ববর্তী সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ডের তুলনায় বেশ পিছিয়ে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটির বিপুল সংখ্যক নাগরিক চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং হংকং ভ্রমণ করে থাকে। তবে সকল নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় এগিয়ে আছে দেশটি। 

জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে সার্বজনীন স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প চালু করে ইন্দোনেশিয়া, যা পৃথিবীতে সর্ববৃহৎ বীমা প্রকল্প হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। চাকরিজীবীদের মাসিক বেতন এবং অন্যদের মাসিক আয় অনুযায়ী প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। আর গরিব ৯-১০% (মাসিক আয় ৩০০ ডলারের নিচে) জনগণের প্রিমিয়াম সমাজকল্যাণ দপ্তর থেকে প্রদান করা হয়ে থাকে। 

২০২৩ সালের হিসেব অনুযায়ী জনসংখ্যার প্রায় ৯৯% এই স্বাস্থ্য বীমার আওতায় এসেছে। বিত্তবান শ্রেণীর অনেকে  অপছন্দ করলেও এই সার্বজনীন স্বাস্থ্য বীমা বঞ্চিত গরীব জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেছে অবশ্যই। প্রথম ৫ বছর এই স্বাস্থ্য বীমা বাধ্যতামূলক ছিল না, তবে এখন সেবা গ্রহণ না করলেও সকল নাগরিককে এই বীমার প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে হবে। দেশটির ২৩২৯৫টি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে শুরু করে সকল স্তরের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এটির সঙ্গে যুক্ত। বেসরকারি চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যেই এই স্বাস্থ্য বীমা কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১৬ লক্ষ মানুষ এই সেবা গ্রহণ করে থাকে। প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা থেকে নিবিড় পরিচর্যা পর্যন্ত সেবার খরচ এই বীমার মাধ্যমে পরিশোধের ব্যবস্থা রয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশটির সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার সাফল্য বিশ্বে নজর কেড়েছে। জাপান সহ উন্নত বিশ্বের অনেক দেশ এই জনকল্যাণমূলক সেবা নিয়ে গবেষণা করছে।

২০২৩ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য খাতের বার্ষিক আর্থিক মূল্য কমবেশি ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২৪ সালে স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ কমবেশি ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিবছর সমাজ কল্যাণ দপ্তরের মাধ্যমে ১.৫ থেকে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয়িত হয়ে থাকে।

বাংলাদেশে সকল নাগরিকের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সার্বজনীন স্বাস্থ্য বীমা চালু করার বিকল্প নেই। বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তুলতে স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।

Saturday, September 28, 2024

চৌর্য পুঁজিবাদ


যেসব দেশে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলি দুর্বল, সুশাসন ও ন্যায় বিচার অনুপস্থিত সেখানে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা সম্পুর্ন ভাবে বিকশিত হওয়ার আগের ধাপে ক্রনি ক্যাপিটালিজম বা চৌর্য পুঁজিবাদ গড়ে উঠে। সরকারের সঙ্গে যোগসাজশে এই ব্যবস্থায় দেশের কিছু পুঁজিপতি চৌর্যবৃত্তির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ পুঁজি সংগ্রহ করে থাকে।

তারা চুরি করা অর্থের একটি অংশ শিল্প কারখানা তৈরিতে বিনিয়োগ করেন। ফলে দেশের মানুষের বড় একটি অংশের কর্মসংস্থানও ঘটে। বাংলাদেশে পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকারের সময় বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, সামিট, এস আলম, ইউনাইটেড, ওরিয়ন ইত্যাদি গোষ্ঠী এই চৌর্য পুঁজিপতিদের উদাহরণ। এই চৌর্য পুঁজিপতিরা তাদের চুরি করা অর্থ শিল্পে বিনিয়োগ করে বিপুল স্থাবর সম্পত্তির মালিকানা অর্জন করেন। চুরি করা অর্থের বড় একটি অংশ বিদেশে পাচার করলেও দেশে থাকা স্থাবর সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পরবর্তী পর্যায়ে তারা নিজেদের স্বার্থে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য উদ্যোগী হন। এই পর্যায়ে তাদের চুরির সুযোগ সংকুচিত হয় বটে, তবে ইতিমধ্যেই অর্জিত বিপুল ধন সম্পদের সুরক্ষা করা নিশ্চিত হয়। থাইল্যান্ড বা দক্ষিণ কোরিয়া এই পুঁজিবাদী রূপান্তরের উদাহরণ।

বাংলাদেশের চৌর্য পুঁজিপতিরা দেশে থাকা তাদের স্থাবর সম্পত্তির সুরক্ষা নিয়ে মোটেও চিন্তিত ছিলেন বলে মনে হয় না। স্বৈরাচারী ফ্যাসিষ্ট মাফিয়া  সরকার কাঠামোতে নির্বাহী বিভাগ নিয়ন্ত্রণে তাদের অসীম ক্ষমতা এবং দাম্ভিকতায় তারা নিজেদের ফেরাউন মনে করা শুরু করেছিলেন। চৌর্যবৃত্তির মাধ্যমে নিজেদের অর্জিত সম্পদের সুরক্ষায় দেশে মোটামুটি ধরনের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি তাদের চিন্তাভাবনায় ছিল না। যার ফলে যে স্বৈরাচারী ফ্যাসিষ্ট মাফিয়া সরকারের যোগসাজশে তারা অর্থ সম্পদ অর্জন করেছিলেন সেটি পতনের সঙ্গে সঙ্গেই চৌর্য পুঁজিপতি অনেকের স্থাবর সম্পত্তিতে হামলা বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা হয়েছে।

গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এসব চৌর্যপুজিদের উচিত দেশে সুশাসন ও ন্যায় ভিত্তিক সমাজ গঠনে সহায়তা করা। তাতে তাদের চুরির সুযোগ হয়তো কমে যাবে তবে ইতিমধ্যে চৌর্যবৃত্তির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে অবশ্যই। একইসঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রূপান্তরের প্রক্রিয়াও সহজভাবে সম্পন্ন হবে।

#BMW #Photography #Trend #TrendingPost #CronyCapitalism

Thursday, September 26, 2024

Exfoliation



Do you experience dull, dry or rough skin? Do you get congestion or breakouts? Exfoliation can help you achieve healthy, smooth and clear skin.

Dermatologists recommend regular exfoliation to support healthy skin function as an effective way to tackle a variety of skin concerns. 

Human skin typically goes through a 28-day cycle, from new cells being born at the bottom of the epidermis to shedding off at the surface. This process called desquamation, gets slower with aging. Skin gets more dull, drier or an increase in texture over the years.

Exfoliation can help to speed up this decline by increasing cell renewal to give you brighter and smoother skin. It also sloughs off surface, dull dead skin cells, this delivers a smoother surface. Exfoliation can make aging skin appear instantly brighter, as it is increasingly smooth and can reflect the light more effectively. Exfoliation helps to putting the best face forward. 

Traditionally exfoliants were commonly physical. Physical exfoliants are granular scrubs that simply buff off dead skin cells from the surface of the skin.

Chemical exfoliants are also known as Hydroxy Acids. Salicylic Acid or Lactic Acid, two popular examples of chemical exfoliants to effectively resurface and smooth the skin. They are available in different brands and formulations. Exfoliation boosts cell renewal, deliver fresh, plump skin cells.

It is recommended to consult with #dermatologist before selecting any chemical exfoliants.

#Skin #beauty #Aesthetic #BMW #healthylifestyle

Tuesday, September 24, 2024

সিনসিনাটি বেঙ্গল

আমেরিকায় সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে আমেরিকান 🏈। রাগবি 🏉 আর ফুটবলের ⚽ সমন্বয়ে এই খেলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছিল ১৮৬৯ সালে। আমেরিকান ফুটবল লীগের একটি জনপ্রিয় দল হচ্ছে Cincinnati Bengals, বাংলাদেশের নাম জড়িয়ে রয়েছে এই দলটির সঙ্গে।

ফ্লয়েড-ওয়েলস নামে একটি কোম্পানি ১৮৭০ সাল থেকে গ্যাস ষ্টোভ তৈরি করতো। এটির শক্তিমত্তা প্রচারে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের 🐅 ছবি হিসেবে ব্যবহার করা হতো এবং বেঙ্গল নাম দেয়া হয়েছিল।

আমেরিকান ফুটবলে সিনসিনাটি দলটি ১৯৩৭ সালে যাত্রা শুরু করে। এটির প্রতিষ্ঠাতা #হল_পেনিংটন দলটির জন্য যুৎসই একটি নাম খুঁজছিলেন। একদিন রান্নাঘরে কফি খাওয়ার সময় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের লোগো সম্বলিত তার মায়ের গ্যাস ষ্টোভটির দিকে নজর পড়ে যায়। মুহুর্তেই তিনি ক্ষিপ্রতার প্রতীক এই বাঘের নামটি সিনসিনাটির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে দলের নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।

#BMW #AmericanFootball #RoyalBengalTiger #Photography #Trends

 

Wednesday, August 28, 2024

বন্যায় ত্বকের রোগ

 বন্যা চলাকালীন ও বন্যা পরবর্তী সয়য় অন্যান্য রোগের পাশাপাশি ত্বকের নানা সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন বন্যা কবলিত এলাকায় বসবাস করা মানুষ। বন্যা পরবর্তী সময়ে সাধারণত সংক্রামক নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়। তবে ত্বকেও নানা রোগ দেখা দিতে পারে। শিশুর ত্বক বেশি সংবেদনশীল হওয়ার কারনে তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে যে কোন বয়সীরাই আক্রান্ত হতে পারেন। বন্যায় ত্বকের যে সব সমস্যা বেশি দেখা দেয় সেগুলো হলো,

√ ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণ হয়ে ছত্রাক জনিত ত্বকের রোগ যেমন দাদ হতে পারে।

বন্যার নোংরা দুষিত পানিতে নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ও ব্যাকটেরিয়া ভেসে বেড়ায়, সেজন্য 

√ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে খোসপাঁচড়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে বন্যার সময়।  

✓ রাসায়নিক পদার্থে অ্যালার্জির কারণে চুলকানি বা লালচে ভাব হতে পারে।

প্রতিরোধ 

বন্যার পানির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে পারলে এসব সমস্যা হবে না। তবে বাস্তবতা হলো বন্যায় পানির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা অসম্ভব। বন্যার পানির সংস্পর্শ থেকে সরে যাওয়ার পর সাবান বা পরিস্কার পানিতে ত্বক পরিষ্কার করা উচিত। ত্বক যাতে স্যাঁতস্যাঁতে না থাকে সেজন্য শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। ত্বকের ভাঁজ যেমন কুঁচকি, বগল, হাটূ এসব স্থানে নজর বেশি দিতে হবে। ছত্রাক, খোসপচরা বা চুলকানি দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।



Tuesday, July 30, 2024

জেনারেশন জি (Generation Z)


বাংলাদেশে স্বৈরাচারী ফ্যাসিষ্ট মাফিয়া সরকার বিরোধী জনযুদ্ধের সূচনা করেছে জেনারেশন জি (#GenZ) প্রজন্ম, যারা ১৯৯৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে। এই প্রজন্মের চারিত্রিক গুণাবলী সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:


√প্রযুক্তিগত অভ্যাস 

 **ডিজিটাল নেটিভস**: তারা ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে বেড়ে উঠেছে। ফলে তারা প্রযুক্তি-নির্ভর।

 **সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার**: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, এবং টিকটকের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। 


√মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি

 **বৈচিত্র্য গ্রহণ**: জাতিগত এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করে। তাদের চিন্তাভাবনা ভৌগলিক সীমারেখা দিয়ে সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্ব নাগরিক এই প্রজন্ম সাধারণত সত্য ও সাম্যের পক্ষে।

 **পরিবেশ সচেতন**: জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসইতার দিকে মনোযোগ দেয় এবং পরিবেশ রক্ষায় আগ্রহী।


√শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে প্রভাব

**টেক-সাভি**: অনলাইন শিক্ষা ও কোর্সের প্রতি আগ্রহী এবং নতুন টেকনোলজি দ্রুত শেখে।

 **উদ্ভাবনী**: নতুন আইডিয়া ও প্রযুক্তিকে সহজেই গ্রহণ করে এবং সৃজনশীল সমাধানে দক্ষ।


√মানসিক স্বাস্থ্য

 **সংবেদনশীল**: মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়গুলির প্রতি সংবেদনশীল এবং এই বিষয়ে আলোচনা করতে স্বস্তি বোধ করে।

 **চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে বেড়ে উঠা**: মহামারী, অর্থনৈতিক মন্দা প্রভৃতি চ্যালেঞ্জের মধ্যে তাদের বেড়ে উঠা, যা মানসিক স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিত্বে প্রভাব ফেলেছে।


√যোগাযোগের ধরন

 **সরাসরি এবং দ্রুত যোগাযোগ**: সোশ্যাল মিডিয়া ও মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে দ্রুত এবং সরাসরি যোগাযোগ পছন্দ করে।

-**ব্যক্তিগত গোপনীয়তা**: প্রাইভেসি সম্পর্কে সচেতন এবং তাদের তথ্য সুরক্ষা বিষয়ে যত্নবান।


জেনারেশন জি'র বৈশিষ্ট্যগুলো বোঝার সক্ষমতা না থাকলে তাদের মনযোগ আকর্ষণ করা সম্ভব নয়।

(সংগৃহিত ও সম্পাদিত)

Wednesday, June 26, 2024

গরমে ঘামাচি


গ্রীষ্মকালে ঘামাচি আক্রান্ত হয়ে থাকেন অনেকেই। বিশেষ করে শিশুদের ঘামাচি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। অপেক্ষাকৃত শীতল আবহাওয়ার স্থান থেকে গরম আবহাওয়ার কোন স্থানে ভ্রমণ বা স্থানান্তরিত হলেও ঘামাচি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ঘামাচি কি?

ত্বকে ক্ষুদ্র দানা আকৃতির লালচে ফুস্কুড়ির মতো ঘামাচির আবির্ভাব হয়। সাধারণত শরীরে ঘামাচির ক্ষতিকর কোন প্রভাব নেই। তবে অস্বস্তিকর চুলকানি অনুভূত হয়।

কি কারণে হয়?

গরমে ত্বকে থাকা ধর্মগ্রন্থী অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করে। গরমের কারণে সৃষ্ট প্রদাহে ধর্মগ্রন্থীর নালী বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে ঘামাচির সৃষ্টি হয়।

কোন স্থান আক্রান্ত হয়?

বগল, কুঁচকি, পিঠ, কোমড়, স্তনের নিচে, কনুই ও হাঁটুর ভাঁজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শিশুদের ক্ষেত্রে মুখ আক্রান্ত হতে পারে।

চিকিৎসা 

ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘাম উৎপাদন বন্ধ হলে সাধারণত ঘামাচি আপনাআপনিই চলে যায়। তবে সাময়িক স্বস্তির জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। ঠান্ডা পানিতে গোসল করলেও স্বস্তিদায়ক হয়। প্রদাহ বেশি হলে জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে, সেক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

প্রতিরোধ 

√ঠান্ডা, বাতাসের প্রবাহ যুক্ত পরিবেশে ঘাম তৈরি হয় না, ঘামাচি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

√ঢিলেঢালা, হালকা, প্রাকৃতিক তন্তু দিয়ে তৈরি পোশাক পরিধান করতে হবে।‌

মনে রাখবেন ঘন ঘন ঘামাচি আক্রান্ত হলে গরমে হিটস্ট্রোক আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। হিটস্ট্রোক জীবনহানির কারণ হতে পারে।

Sunday, June 23, 2024

একজন শামসুল হক: বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের ট্র্যাজিক হিরো

১৯৩৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করটিয়া সা’দত কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। তাঁর সময়কালে অন্যান্য বাঙালি মুসলিম যুবকের মতো তিনিও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৪৫ সালে আবুল হাশিম এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ঢাকায় মুসলিম লীগের আঞ্চলিক অফিস তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেন তাঁকে। তাঁর নেতৃত্বে পুর্ব বাংলায় মুসলিম লীগ সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠনে পরিণত হয় এবং ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলার নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর মুসলিম লীগের রাজনীতি পশ্চাদমুখী যাত্রা শুরু করলে সমমনা প্রগতিশীল তরুণদের নিয়ে তিনি ১৯৪৭ সালের শেষ দিকে গণতান্ত্রিক যুবলীগ নামক সংগঠন গড়ে তোলেন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।

রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে গড়ে আন্দোলনে তিনি সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দেন।১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ধর্মঘটে পিকেটিং করার সময় গ্রেফতার হন। পূর্ববঙ্গের রাজনীতির ইতিহাসে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি ১৯৪৯ সালের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলের উপনির্বাচনে বিজয়ের কারণে। এই নির্বাচনে তিনি মুসলিম লীগ নেতা করটিয়ার জমিদার খুররম খান পন্নীর বিরুদ্ধে বিপুল ভোটে জয়ী হন। বলা হয় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দুই বছরের মাথায় মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসনের জবাব দিয়েছিল টাঙ্গাইলের জনগণ।


ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কারণে তিনি ১৯৫২ সালের ১৯ মার্চ গ্রেফতার হন। কারাজীবন দুর্বিষহ  নির্যাতনে তার শরীর ও মন উভয়ই খারাপ হতে থাকে এবং তিনি মানসিক রোগীতে পরিণত হন। ১৯৫৩ সালের ১৩ মার্চ তিনি মুক্ত হন। কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করে তিনি বাসায় ফিরে স্ত্রী ও সন্তানদের দেখতে না পেয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে জানতে পারেন উচ্চ শিক্ষার জন্য সন্তানদের শ্বশুরবাড়িতে রেখে তাঁর স্ত্রী নিউজিল্যান্ড চলে গিয়েছেন। শ্বশুরবাড়িতে তিনি নিগৃহীত হয়ে মানসিকভাবে আরো ভেঙে পড়েন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণে অসম্মতি জানিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে আওয়ামী মুসলিম লীগের সম্পাদক হিসেবে প্রস্তাব করেন এবং তাঁকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেয়া হয়।

১৯৫৪ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যোগদানের এক সপ্তাহ পর তার উন্নত চিকিৎসার জন্যে করাচি মানসিক হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। একসময় তাঁর মানসিক অসুস্থতা নিরাময় যোগ্য নয় বলে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়। মূলত ভাষা আন্দোলন ও সরকার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে নিষ্ঠুর নির্যাতন ও সঠিক সময়ে চিকিৎসার অভাবে তিনি কারামুক্তির পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন নাই। আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে ছিটকে গিয়ে তিনি আধ্যাত্মিকতায় ঝুঁকে পড়েন এবং খেলাফত পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন বলে জানা যায়।

১৯৫৭ সালে তাঁর স্ত্রী দেশে ফিরে অসুস্থ স্বামীকে দেখতে যান এবং তাঁর রোগ অনিরাময়যোগ্য যোগ্য জানতে পেরে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৫৯ সালে আফিয়া খাতুন পিএইচডি করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পাঞ্জাবের বাসিন্দা আনোয়ার দিলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সেখানে, যাকে ১৯৬০ সালে বিয়ে করে অধ্যাপনা ও গবেষণা করে জীবন কাটান।

রাজনৈতিক ও ব্যক্তিজীবন বিপর্যয়ের শেষ সীমায় পৌঁছে তিনি ছন্নছাড়া, দুর্বিষহ, নিঃসঙ্গ জীবনে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পথে পথে ঘুরতে থাকেন।  একসময় লোকচক্ষুর  অন্তরালে চলে যান তিনি। রোগাক্রান্ত শরীরে বিনা চিকিৎসা ও সেবাযত্নহীন অবস্থায় তিনি ১৯৬৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।

এভাবেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের নির্মাতা শামসুল হকের জীবনের সমাপ্তি ঘটে।

Sunday, May 19, 2024

টিপুর বাঘ


শৌর্যবীর্যের প্রতীক বাঘ খুব পছন্দ করতেন মহীশুরের শের টিপু সুলতান। তার ব্রাঘ্যপ্রীতির সবচেয়ে বড় নিদর্শন কাঠের তৈরি করা একটি বাঘের মূর্তি, তাতে দেখা যায় ডোরাকাটা একটি বাঘট এক ইংরেজের টুঁটি চেপে ধরে রেখেছে। টিপু সুলতানকে হত্যার পর বাঘটিকে বিলেত পাঠিয়ে দিয়েছিল ইংরেজরা। এটি এখন লন্ডনের ভিক্টোরিয়া ও আ্যালবার্ট জাদুঘরে সংরক্ষিত ও প্রদর্শিত হচ্ছে।

আঠারো শতকের শেষ দিকে ব্রিটিশদের কাছে মূর্তিমান বিভীষিকা হয়ে উঠেছিলেন সুলতান ফতেহ আলি সাহেব টিপু। বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন টিপু সুলতান। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় উপমহাদেশের প্রথম দিকের শাসক হিসেবে যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। কথিত আছে, টিপুর মৃত্যুসংবাদ শুনে ভারতের গভর্নর জেনারেল রিচার্ড ওয়েলেসলি বলেছিলেন, 'ভদ্রমহোদয় ও ভদ্রমহিলাগণ, ভারতবর্ষের মৃত আত্মার স্মরণে আমি পান করছি।' টিপুর মৃত্যুর খবর বিলেতে পৌঁছালে সেখানেও উৎসবের ঢেউ লাগে। এই ঘটনা থেকেই বোঝা যায় ইংরেজ শাসকদের কাছে কত বড় আতঙ্কের নাম ছিলেন টিপু সুলতান। 

কন্নড় ভাষায় টিপু অর্থ বাঘ। তিনি বিখ্যাতও হয়ে আছেন মহীশুরের বাঘ নামেই। টিপুর এই 'মহীশুরের বাঘ' নামটির উৎপত্তি কীভাবে, তা নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, যৌবনে একবার বন্ধুর সঙ্গে শিকারে গিয়েছিলেন টিপু সুলতান। সে সময় এক বাঘের সামনে পড়ে যান তারা। জনশ্রুতি অনুসারে, বাঘটি টিপুর বন্ধুকে হত্যা করে। জন্তুটিকে হত্যা করতে উদ্যত হন টিপু, কিন্তু তার বন্দুক থেকে গুলি বের হলো না। হাতের ছোরাও পড়ে গেল মাটিতে। বাঘটি টিপুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তেই তিনি ছোরাটি মাটি থেকে উঠিয়ে ওটাকে হত্যা করেন। এর পর থেকেই সবাই তাকে মহীশুরের বাঘ নামে ডাকতে থাকে।

অন্য আরেকটি মতে, টিপু সুলতানের সিলমোহরে ছিল বাঘের ছবি। তাঁর ব্যক্তিগত প্রতীক, রাজপ্রাসাদ, অস্ত্র, বর্ম, সিংহাসন, সেনাবাহিনী—সর্বত্র ছিল বাঘের আধিপত্য। তাঁর  সকল পোশাক, এমনকি রুমালেও ছিল ডোরাকাটা বাঘের উপস্থিতি। এই ব্যাঘ্রপ্রীতির জন্যই তাকে মহীশুরের বাঘ নামে ডাকতে থাকে লোকে।

তার শাসনামলে মহীশুরে বাঘ শিকার ছিল নিষিদ্ধ। যৌবন থেকেই বাঘ পুষতে শুরু করেছিলেন টিপু। তার ঘরের সামনে শেকল দিয়ে বাঁধা থাকত কয়েকটি বাঘ। তবে তার বাঘপ্রীতির সবচেয়ে বড় নিদর্শন হয়ে টিকে আছে কাঠের তৈরি রং করা একটি খেলনা। খেলনাটি আর কিছু নয়, চার ফুট লম্বা একটি বাঘের মূর্তি।

এই মূর্তিতে দেখা যায়, ডোরাকাটা বাঘটি এক ইংরেজের টুঁটি চেপে ধরে রেখেছে। ইংরেজ লোকটির পরনে সাদা মোজা, ফৌজি টুপি, নীল ব্রিচেস, লাল কুর্তা ও কালো জুতা। ভয়ালদর্শন বাঘটি হাঁটু গেঁড়ে বসে রয়েছে শিকারের ওপর। জানোয়ারটির দাঁত বিঁধে আছে শিকারের গলায়। বাঘের শরীরের বাঁ পাশের ভেতরে লুকানো একটা ছোট পাইপ অরগান। জন্তুটির পেছন দিকের একটি হাতল ঘোরালেই সেই অরগান বেজে ওঠে। সে আওয়াজ শুনলে মনে হয়, মুমূর্ষু মানুষের আর্তনাদ আর বাঘের গর্জন ভেসে আসছে যেন। শিকার যে তখনও বেঁচে আছে, তা বোঝানোর জন্য ইংরেজ লোকটার বাঁ হাত কনুই থেকে একটু ওপরে ওঠানামা করে।

জনশ্রুতি আছে, ইংরেজ সেনাপতি হেক্টর মানরোর সঙ্গে যুদ্ধে হেরে ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন টিপু সুলতান। এরকম মানসিক অবস্থায় একদিন শুনলেন, সুন্দরবনের বাঘ শিকার করতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে মানরোর একমাত্র ছেলে। খবরটি শুনেই ওই চার ফুট লম্বা বাঘের মূর্তি তৈরি করান টিপু। প্রকৃতপক্ষে খেলনাটি একের পর এক যুদ্ধে হেরে কোণঠাসা হয়ে পড়া মহীশুরের বাঘ টিপু সুলতানের শত্রুর প্রতি ঘৃণা এবং প্রতিশোধের ব্যগ্র স্পৃহার প্রতীক।

১৭৯৯ সালে ইংরেজবিরোধী যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন টিপু সুলতান। টিপুর দুর্গ শ্রীরঙ্গপত্তমের পতনের পর সেখানে তাণ্ডব চালায় ইংরেজ কমান্ডার ও তাদের সৈনিকরা। লুটপাট চালায় টিপুর গ্রন্থাগার, সমৃদ্ধ অস্ত্রাগার, তোষাখানা, ধনভান্ডারে। মূল্যবান সমস্ত জিনিসপত্র লুট করে চালান করে দেওয়া হয় লন্ডনে। লুটপাটের সময় টিপু সুলতানের বিখ্যাত খেলনা বাঘটির কথা বিশেষভাবে মনে রেখেছিল ইংরেজরা। গভর্নর জেনারেল লর্ড মর্নিংটন টাওয়ার অভ লন্ডনে প্রদর্শনের জন্য ব্রিটেনে পাঠিয়ে দেন বাঘটিকে। তবে লন্ডনে পৌঁছে বেশ কয়েক বছর গুদামেই পড়ে থাকে খেলনা বাঘটি। পরে ১৮০৮ সালে লন্ডনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জাদুঘরে প্রথম প্রদর্শিত হয় এটি। অল্প সময়ের মধ্যেই দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে মহীশুরের শের টিপু সুলতানের বাঘ। মনোযোগ কেড়ে নেয় তৎকালীন বহু পর্যটক, কবি, নাট্যকার ও চিত্রশিল্পীর। নানা স্থান ঘুরে সেই বাঘটি এখন লন্ডনের ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট জাদুঘরে স্থায়ী আবাস গেড়েছে। এই দীর্ঘ যাত্রায় বাঘটির শরীরে লুকানো অরগানটিকে বেশ কয়েকবার সংস্কার করতে হয়েছে। শিল্পকলা প্রেমীদের কাছে এটি #TipusTiger নামে পরিচিত।

 টিপু সুলতানের বাঘ হয়ে উঠেছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে উপমহাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের প্রতীক। টিপু সুলতানের বাঘ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ও ক্রিকেট বোর্ডে স্থান করে নিয়েছে ডোরাকাটা বাঘ। 

#TipuSultan #LondonLife, #Museum,

Friday, May 17, 2024

জিন্নাহর বংশোধর

ওয়াদিয়া গ্রুপ ভারতের সবচেয়ে পুরনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ইরান থেকে আসা পার্সি লোভজি নুসারওয়াঞ্জি ওয়াদিয়া ১৭৩৬ সালে বোম্বে ড্রাইডক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি এশিয়ার প্রথম জাহাজ নির্মাণ কোম্পানি। 

পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর একমাত্র কণ্যা দিনা জিন্নাহ। ওয়াদিয়া পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের নেভিল ওয়াদিয়াকে বিয়ে করেন দিনা। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তিনি বোম্বেতেই স্বামী-সন্তানের সঙ্গে থেকে যান। তিনি নিউইয়র্কে বসবাসরত অবস্থায় ২০১৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার পুত্র জিন্নাহর একমাত্র পৌত্র নেসলি ওয়াদিয়া বর্তমানে ওয়াদিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান। জিন্নাহর একমাত্র নাতনি অবিবাহিত ছিলেন। 


মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর  জীবিত সরাসরি বংশধর এখন পৌত্র নুসলি ওয়াদিয়া ও তার দুই পুত্র নেস ওয়াদিয়া ও জেহাঙ্গির ওয়াদিয়া। তারা ভারতের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ওয়াদিয়া গ্রুপ পরিচালনা করছেন। উড়োজাহাজ, বস্ত্র, কেমিক্যাল, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি নানা ব্যবসা রয়েছে এই গ্রুপে। আইপিএল দল পাঞ্জাব কিংসের মালিকানাও রয়েছে এই গ্রুপের।

#MRKR #Jinnah #PunjabKings

Thursday, May 16, 2024

Wembley Stadium


The original Wembley Stadium was demolished in 2002 to build the new stadium which stands today. It's a historical as well as modern landmark of #London. Brazilian footballer Pelé once said of the stadium: "Wembley is the cathedral of football. It is the capital of football and it is the heart of football", in recognition of its status as the world's most famous football stadium.The stadium is England's national football stadium, and thus hosts the majority of the England national football team home matches.

The stadium's first turf was cut by King George V and it was first opened to the public on 28 April 1923. It was known as British Empire Exhibition Stadium. The ground had been used for football as early as the 1880s & named as Wembley Stadium.

Wembley hosted the FA Cup final annually since 1923, which was the stadium's inaugural event. It also hosted League Cup final annually, five European Cup finals, the 1966 World Cup final, and the final of Euro 1996. The stadium also hosted many other sports events, including the 1948 Summer Olympics, rugby league's Challenge Cup final, and the 1992 and 1995 Rugby League World Cup finals. It was also the venue for numerous music events, including the 1985 Live Aid charity concert.

The new Wembley Stadium was inaugurated in 2007. With 90,000 seats, it is the largest stadium in the UK and the second-largest stadium in Europe. A UEFA category four stadium, the new Wembley hosted the 2011 and 2013 UEFA Champions League finals, final of UEFA Euro 2020 and hosted the final of the UEFA Women's Euro 2022. It will also stage the 2024 UEFA Champions League final.

#London #LondonWalk #LondonLife, #LondonCity #WembleyStadium #MRKR

Wednesday, May 15, 2024

নিউইয়র্কের জন্মবৃত্তান্ত

বর্তমানে পৃথিবীর বানিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত নিউইয়র্ক, আসুন জেনে নেই সেই নগরীর গোড়াপত্তনের ইতিহাস। 

১৬২৪ সালে ডাচ ঔপনিবেশিক শক্তির ছোট্ট একটি বন্দর হিসেবে নিউ আ্যমষ্টারডাম নামে নিউইয়র্কের গোড়াপত্তন ঘটেছিল। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র নামে পরিচিত ভূখণ্ডটি তখন বৃটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির শাসনাধীন থাকলেও এখনকার ম্যানহাটন ডাচ ঔপনিবেশিক শক্তির দখলে ছিল।

অপরদিকে ডাচ ইষ্ট ইন্ডিজ নামে পরিচিত আজকের ইন্দোনেশিয়ার ভূখণ্ড ডাচ ঔপনিবেশিক শক্তির শাসনাধীন থাকলেও প্রশান্ত মহাসাগরের ছোট্ট একটি দ্বীপ বৃটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির দখলে ছিল। কমবেশি ৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের রান নামের এই দ্বীপ তখনকার দিনে #মসলা ব্যবসার জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থান দখল করে ছিল।

দ্বিতীয় বৃটিশ-ডাচ যুদ্ধের পর ব্রেডা চুক্তি অনুযায়ী ১৬৬৪ সালে এই দুইটি ভুখন্ড অদলবদল করা হয়। মসলার বানিজ্যিক গুরুত্ব কমে যাওয়ায় সাথে সাথে রান দ্বীপ এখন ইন্দোনেশিয়ার ছোট্ট একটি জনবসতি। আর ম্যানহাটন হয়ে উঠেছে মহাশক্তিধর  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথা পৃথিবীর বানিজ্যিক রাজধানী।


Tuesday, May 14, 2024

The Palace of Westminster

Palace of Westminster and Westminster Abbey including Saint Margaret’s Church is one of the most famous landmark & tourist destination in London. 


Palace of Westminster is the meeting place of the Parliament of the United Kingdom. It is commonly called the Houses of Parliament after the House of Commons and the House of Lords, the two legislative chambers which occupy the building. #Westminster has become a metonym for the UK Parliament and the British Government, and the Westminster system of government commemorates the name of the palace. The clock bell in the Elizabeth Tower of the palace, known by it's nickname #BigBen, is also a landmark of London.

The building was originally constructed in the eleventh century as a royal palace, and was the primary residence of the kings of England until 1512, when it was destroyed by a fire. The royals were relocated in neighboring Whitehall Palace, but remains of the building was continued to serve as the home for Parliament of England. In 1834 another large fire it was destroyed. It was rebuilt in 1840 on the remains of medival site, which also comprises medieval Church of Saint Margaret, and Westminster Abbey.

Westminster Abbey is the place where monarchs are crowned, married and buried. It is also a focus for national memorials of those who have served their country, whether prominent individuals or representatives, such as the tomb of the Unknown Warrior. It is a place of worship for over 1000 years, maintains the daily cycle of worship as well as being the church where major national celebrations and cultural events are held. The Palace of Westminster continues to be the seat of Parliament.

The Palace of Westminster, Westminster Abbey and St Margaret’s Church lie next to the River Thames in the heart of London. They are symbols of religion and power since Edward the Confessor built his palace and church in 11th century AD. Changing through the centuries together, they represent the journey from a feudal society to a modern democracy and show the intertwined history of church, monarchy and state. Together they encapsulate the history of one of the most ancient parliamentary monarchies of present times and the growth of parliamentary and constitutional institutions.

#London #LondonWalk #LondonLife #londoncity #MRKR

Sunday, May 12, 2024

লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজ


পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য নান্দনিক, ব্যতিক্রমী ও বিচিত্র সেতু রয়েছে, কিন্তু লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজের মতো খ্যাতি আর কোনো ব্রিজের নেই সম্ভবত। টেমস নদীর দুই পাড় সংযুক্ত করতে লন্ডনে বেশ কয়েকটি সেতু রয়েছে। এগুলোর মধ্যে টাওয়ার ব্রিজ সবচেয়ে পুরনো এবং জনপ্রিয় একটি দর্শনীয় স্থান। বলা যায়  কালের বিবর্তনে এই ব্রিজটি লন্ডনের প্রতীকে পরিনত হয়েছে। দেশী বিদেশী অসংখ্য পর্যটক এটি দেখতে আসেন, ছবি তোলেন। টাওয়ার ব্রিজকে ভুল করে অনেকে লন্ডন ব্রিজ বলে থাকে, যেটি অদুরেই অবস্থিত। টাওয়ার অফ লন্ডনের পাশে অবস্থিত এই টাওয়ার ব্রিজ লন্ডনে টেমস নদীর পুর্ব ও পশ্চিম অংশকে সংযুক্ত করার জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল।

ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৮৮৬ সালে এবং পুরো কাজটি শেষ হয় ১৮৯৪ সালে। টেমস নদীর ওপর নির্মিত এ ব্রিজের দৈর্ঘ্য ২৪৪ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ মিটার। ৬৫ মিটার উঁচু দুটি টাওয়ার দিয়ে যুক্ত। বড় আকারের নৌযান চলাচল করার সময় ব্রিজটির মাঝ বরাবর আলাদা হয়ে উপরের দিকে উঠানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ভিক্টোরিয়ান গথিক স্থাপত্য শৈলীর এই ব্রিজটিকে প্রথম দিকে অনেকেই তেমন পছন্দ করেননি।

টাওয়ার ব্রিজের ভেতরের অংশে ব্রিজ প্রদর্শনী নামে একটি প্রদর্শনী আছে, যাতে ছবি, ভিডিও, ফিল্ম ইত্যাদির মাধ্যমে ব্রিজটির ইতিহাস তুলে ধরা হয়। প্রতি বছর ব্রিজের পাশে মেলা বা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এই মেলায় বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী আগমন করে থাকে।

#London #LondonWalk #LondonLife, #londoncity  #TowerBridge

Friday, May 10, 2024

লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদ



লন্ডনের রিজেন্টস পার্কের পশ্চিম পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে  লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদ
। 

হায়দরাবাদের শেষ নিজাম ওসমান আলী খাঁন সর্বপ্রথম ১৯৩৭ সালে লন্ডনে একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। নিজামিয়া মসজিদ নামে যেটির যাত্রা শুরু হয়। ১৯৪০ সালে বিলেত সরকার মসজিদ ও ইসলামিক কালচারাল সেন্টার নির্মাণের অনুমোদন এবং এক লাখ পাউন্ড অনুদান দেয়।

 ১৯৪৪ সালে মিসর ও সুদানে চার্চ নির্মানের জায়গার সঙ্গে বিনিময় করে বিলেতের রাজা  ষষ্ঠ জর্জ ২.৩ একর জায়গা নিয়ে একটি ভিলা বরাদ্দ করেন। এখানেই বৃটিশ ইসলামিক কালচারাল সেন্টার নামে দাতব্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। এই  প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে তহবিল সংগ্রহের পর ১৯৭৪ সালে মসজিদ নির্মাণ শুরু হয়। বর্তমান মসজিদ কমপ্লেক্স ১৯৭৭ সালে উদ্বোধন করা হয়।

পুর্ব লন্ডন মসজিদ সবচেয়ে বড় হলেও লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার বিলেতে সুন্নী মুসলমানদের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে থাকে। মুসলিম দেশগুলোর দুতাবাসের সমন্বয়ে একটি ট্রাষ্ট মসজিদ ও কালচারাল সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এই মসজিদে প্রধান হলেএকসঙ্গে ৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। এছাড়াও মহিলাদের নামাজের জন্য পৃথক হল রয়েছে। মসজিদ কমপ্লেক্সে প্রায় ২৫ হাজার বই সম্বলিত একটি গ্রন্থাগার, ইসলামী শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য স্কুল এবং খাবারের কেন্টিন রয়েছে!

#London #LondonCentralMosque

Wednesday, May 1, 2024

Boudica

She is considered a national heroine of England. Her husband, Prasutagus, was king of the Iceni (now Norfolk) as a client under Roman suzerainty. 


When Prasutagus died in 60CE with no male heir, he left his private wealth to his two daughters and to the Roman emperor Nero, trusting thereby to win imperial protection for his family.bHowever, the Romans ignored Prasutagus’s will and seized his lands, flogged his widow, Boudica, and raped their two daughters. 

While the Roman governor, Suetonius, was campaigning in Anglesey, Boudica led the Iceni and an allied tribe, the Trinovantes, in rebellion. She attacked Camulodunum (Colchester), where her troops slaughtered thousands and set fire to the temple of Claudius, killing those who sheltered inside. She then turned her attention on London, burning the Roman city and killing anyone who could not escape. According to the Roman historian Tacitus, Boudicca’s rebels massacred 70,000 Romans and pro-Roman Britons and cut to pieces the Roman 9th Legion. 

In the final decisive battle of Boudicca’s revolt against Roman rule in Britain, a large British force was routed by the heavily outnumbered Romans under the command of Gaius Suetonius Paulinus.

Paulinus met the Britons at a point thought to be near present-day Fenny Stratford on Watling Street and regained the province in a desperate battle. The battle fought  in 61 CE about 25 miles west of modern metropolitan Birmingham. Boudica's large  force was routed by relatively small numbers of Roman force,  who were superior in discipline, armor, and weaponry. 

Boudica committed suicide after the battle, and with her death the revolt of the Iceni came to a prompt end. The battle marked the end of resistance to Roman rule in southern Britain, which was to last until 410.

Saturday, April 27, 2024

Mandatory routine facial skincare for men

Not only for women, skincare routine should be maintained for men to have a healthy, bright and glowing skin. Daily mandatory facial skincare for men has an orderly pattern, as follows.

Cleanser/face wash:  It removes dirt, oil, and dead skin on the face. It should be selected depending on skin type, whether oily or dry. Cleanser/face wash is recommended to use in the morning and before bed.

Moisturizer: It helps skin to stay moist, protect from drying. Those working in AC room must use a suitable moisturizer every time after cleaning facial skin.

Sunscreen: As lotion, gel or cream, it should be above SPF30 for those working outdoor.  Though it is recommended to use sunscreen every two hours, it should be used at least twice, in the morning and when it feels lost after sweating or face wash.

Remember in addition to undertake this series of daily mandatory facial skincare, it is also essential to adopt a healthy lifestyle such as eating fruits and vegetables, exercising regularly, to drinking enough water for healthy bright skin. Avoiding cigarettes and alcohol also helps to glow your facial skin.

#MRKR #skincare #facial #facialskincare

Sunday, April 21, 2024

পারস্যের আকামেনিদ সাম্রাজ্য - পৃথিবীর প্রথম পরাশক্তি

খৃষ্টপূর্ব ১০০০ সালের আরো আগে থেকে সুবিস্তৃত ইরানি মালভূমিতে বিভিন্ন অর্ধ-যাযাবর গোষ্ঠী বসবাস করত। এই গোষ্ঠীগুলোর একটির প্রধান ছিলেন দ্বিতীয় সাইরাস, যিনি ইতিহাসে সাইরাস দ্য গ্রেট নামে পরিচিত। তিনি সকল গোত্রকে একত্র করতে সক্ষম হন। তারপর মেদাস, লিডিয়া, ও ব্যবিলন রাজ্য জয় করে আকামেনিদ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন, যা ইতিহাসে প্রথম পারস্য সাম্রাজ্য নামে পরিচিত। খৃষ্টপূর্ব ৫৫০ থেকে ৩৩০ সাল পর্যন্ত এই সাম্রাজ্য টিকে ছিল। মানব সভ্যতার ইতিহাসে প্রথম পরাক্রমশালী রাষ্ট্রীয় শক্তি ছিল পারস্যের এই আকামেনিদ সাম্রাজ্য। গ্রীকদের হাতে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের নেতৃত্বে এই সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছিল‌।

সেই সময়ের পারস্য অঞ্চলে নানা ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষ বসবাস করতো, দুরদৃষ্টিসম্পন্ন ও বিচক্ষণ সাইরাস তাদের সকলকে স্বাধীনভাবে সেগুলো পালন করার অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। আকমেনিদ সাম্রাজ্যের শাসকরা ছিলেন একেশ্বরবাদী জরথুস্ত্রবাদী ধর্মের অনুসারী। কিন্তু সকল ধর্ম পালনের স্বাধীনতা ছিল সাম্রাজ্যে। জেরুজালেম জয় করার পর সাইরাস ইহুদিদের সেখানে ফিরে আসার ব্যবস্থা করেন এবং বিধ্বস্থ আল আকসা পুনঃনির্মাণ করে দেন। 

তৃতীয় আকামেনিদ সম্রাট দারিয়ুস দ্য গ্রেটের শাসনামলে ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সভ্যতা মেসোপটেমিয়া সভ্যতা, নীলনদকে ঘিরে মিশরীয় সভ্যতা এবং সিন্ধু নদ অববাহিকায় সিন্ধু সভ্যতা পারস্য সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকার মধ্যে সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। পৃথিবীতে সর্বপ্রথম ডাক যোগাযোগ চালু হয়। রাষ্ট্রের অধীনে কর, আইনশৃঙ্খলা ও বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়, যেগুলো প্রাদেশিক পর্যায়ে সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। ধাতব শিল্প, বস্ত্র, শৈলস্থাপত্য ইত্যাদি শিল্পে বিকাশ ঘটেছিল সেই সাম্রাজ্যে। ধর্ম, শিল্প-সংস্কৃতি, স্থাপত্য, কলা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ইত্যাদি প্রায় সবকিছুর বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে এই সাম্রাজ্য প্রথম বিশ্বে পরাশক্তি আত্মপ্রকাশ করে। 


উন্নত শাসনব্যবস্থা, শিল্প-সংস্কৃতি, স্থাপত্য, নির্মাণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সক্ষমতার কারণে প্রথম পরাশক্তি হিসেবে গড়ে উঠেছিল আকমেনিদ প্রথম পারস্য সাম্রাজ্য।

Friday, April 19, 2024

বয়কট

 


বয়কট
শব্দটি এখন বাংলাদেশে বেশ আলোচিত। পণ্য, সিনেমা, প্রতিষ্ঠান, দেশ বা ব্যক্তি কোন কিছু অপছন্দ হলেই সামাজিক মাধ্যমে ‘বয়কট’-এর (Boycott) আহ্বান উঠে আসে। ইতিহাসে অনেক শক্তিশালী আন্দোলনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয়েছে ‘বয়কট’। বৃটিশ শাসনামলে বিলেতি পণ্যের বিরুদ্ধে ‘বয়কট’-এর ডাক দেয়া হয়েছিল। শুধু এদেশে নয়, বিদেশেও যথেষ্ট জনপ্রিয় শব্দটি। কিন্তু এই শব্দটি অভিধানে সংযুক্ত হওয়ার পেছনে একটি ইতিহাস রয়েছে।

১৮৮০ সালের ঘটনা। চার্লস কানিংহাম বয়কট নামে ব্রিটিশ আর্মির এক অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আয়ারল্যান্ডের মায়ো কাউন্টির জোতদার লর্ড আর্নের খাজনা আদায়ের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। ফসলের ফলন কম হওয়ায় জমি বর্গা নেয়া চাষীরা ২৫ শতাংশ খাজনা মওকুফের দাবি তোলে। দাবি আমলে নিয়ে লর্ড আর্নে ১০ শতাংশ খাজনা মওকুফের ঘোষণা দেন।কিন্তু চাষীরা লর্ড আর্নের ঘোষণা না মানলে এজেন্ট বয়কট কয়েকজন বর্গা চাষীকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করেন‌। 

সেই সময় আয়ারল্যান্ডে ভূমি সংস্কারের পক্ষে আন্দোলন করছিলেন রাজনীতিবিদ চার্লস স্টুয়ার্ট পার্নেল। তিনি  এক ভাষণে বলেছিলেন, কোনো জমি থেকে বর্গাচাষিকে উচ্ছেদ করা হলে, সে জমি যেন অন্য চাষিরা বর্গা না নেন। জমির  মালিক উচ্ছেদের হুমকি দিলে অহিংসভাবে তাঁকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

বয়কটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্থানীয় বর্গাচাষিরা চার্লস ষ্টুয়ার্ট পার্নেলের বাতলে দেয়া কৌশল বেছে নিয়েছিলেন। গৃহকর্মী থেকে দিনমজুর সবাই তার কাজ বর্জন করেন। ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করতে থাকেন। এমনকি স্থানীয় ডাকঘরের পিয়নও চিঠি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। বয়কট চেষ্টা অন্য এলাকা থেকে লোকজন কাজ লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে তার এই উদ্যোগও সফল হয়নি। সামাজিকভাবে একঘরে এবং অর্থনৈতিক ব্যাপক ক্ষতি হয় বয়কটের। এই ঘটনা অন্যান্য অবিবেচক ভূমি মালিকের বিরুদ্ধেও প্রয়োগ হতে থাকে।

এখনকার #ভাইরাল কাহিনীর মতো এই ঘটনা গণমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছিল। আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে আমেরিকার পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল এই সফল অহিংস প্রতিবাদের ঘটনা। একসময় বয়কট শব্দটি এই ধরনের ঘটনার সমার্থক হয়ে ইংরেজি অভিধানে স্থান করে নেয়।

দ্য গ্রেট লন্ডন ফায়ার

১৬৬৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ সেপ্টেম্বর এক বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে সিটি অফ লন্ডন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল, যা ইতিহাসে 'দ্য গ্রেট লন্ডন ...