Friday, May 31, 2019

প্রসাধন সামগ্রী (কসমেটিক) কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?



ধারনা করা হয় মানুষ প্রায় ৬ হাজার বছর ধরে রূপচর্চার জন্য প্রসাধনী ব্যাবহার করে আসছে। দিনে দিনে প্রসাধন সামগ্রীর ব্যাবহার যেমন বেড়ে চলেছে তেমনি এগুলো ব্যাবহারে সৃষ্ট পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝুঁকিও বাড়ছে। অনেক গবেষক ইতিমধ্যেই বাছ বিচার না করে প্রসাধন সামগ্রী ব্যাবহার করার প্রবণতাকে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছেন। বর্তমানে সারাবিশ্বে অসংখ্য কোম্পানি নানা ধরনের প্রসাধন সামগ্রী প্রস্তুত করছে। এসব প্রসাধন সামগ্রী তৈরি করতে কমবেশি ১৩ হাজার ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। মুলত এই রাসায়নিক দ্রব্যগুলোই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতা তৈরির জন্য দায়ী। দৈনন্দিন ব্যাবহার করা প্রসাধন সামগ্রী তৈরি করতে সাধারণত যেসব রাসায়নিক ব্যাবহার করা হয় এবং সেগুলো থেকে কি ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে, আসুন একটু ধারনা নেই। ইউরিয়াঃ বেবি কেয়ার থেকে শুরু করে সবধরনের প্রসাধন সামগ্রিতেই এটির উপস্থিতি রয়েছে। এর কারণে ত্বকের অ্যালার্জি, ক্যান্সার, এমনকি বিকলাঙ্গ শিশুও জন্ম নিতে পারে। ডাই-অক্সেনঃ সাবান, শ্যাম্পু, টুথপেস্ট, মাউথওয়াসে থাকে। ত্বক, স্তন এবং লিভার ক্যান্সারের ঝুকি রয়েছে। ফরমালডিহাইডঃ নষ্ট হওয়া রোধ করতে সব ধরনের প্রসাধনিতেই ফরমালিন ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। এটি অ্যালার্জি এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি করে থাকে। ভারী ধাতুঃ লেড, আর্সেনিক, কেডমিমাম, নিকেল, মারকারি ইত্যাদি ভারি ধাতু রঙ্গিন প্রসাধন সামগ্রিতে ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। স্বল্পমেয়াদে এগুলো ত্বকের অ্যালার্জির কারন হতে পারে। তবে দীর্ঘদিন ব্যাবহার করলে এগুলো ত্বকের নিচে জমার পর শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে শ্বাসকষ্ট, বুকে বাথা, বমি, মাথ বাথা, ডাইরিয়া, ক্যান্সার, হাড় ক্ষয়, স্নায়ু, লিভার এবং কিডনি রোগের কারন হতে পারে। প্যারাবেনঃ এটি জীবানুনাশক গুনের কারনে পচন রোধে প্রসাধনীর উপাদান হিসেবে থাকে। সাধারনত ডিওডরেন্ট, লোশন, এবং চুলের প্রসাধন সামগ্রিতে থাকে। ক্যান্সার এবং ত্বকের অ্যালার্জির কারন হতে পারে। থেলেটঃ নেল পলিশ, লোশন, পারফিউম, চুলের প্রসাধন সামগ্রিতে থাকে। স্তনের ক্যান্সার এবং বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম দেয়ার কারন হতে পারে ট্রাইক্লোসানঃ সাবান এবং শ্যাম্পুতে জীবাণুনাশক হিসেবে থাকে। হরমোনজনিত সমস্যা, লিভার এবং কিডনি রোগের কারন হতে পারে। রঙ্গ এবং সুগন্ধিঃ প্রসাধনী তৈরিতে নানা ধরনের কৃত্রিমম রঙ্গ এবং সুগন্ধি যোগ করা হয়, যেগুলো ত্বকের অ্যালার্জি থেকে শুরু করে ক্যান্সারের কারন হতে পারে। ঊল্লেখিত রাসায়নিক উপাদানগুলো ছাড়াও আরও অনেক রাসায়নিক দ্রব্য দৈনন্দিন ব্যাবহার করা প্রসাধনিতে থাকে। ঔষধের রাসায়নিক নিয়ে যতোটা পরিক্ষা নিরীক্ষা এবং গবেষণার পর অনুমোদন দেয়া হয় প্রসাধনীর ক্ষেত্রে ঠিক ততোটা নিয়মকানুন মানা বা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয় না। #বাংলাদেশে ভেজাল প্রসাধন সামগ্রীর কথা বাদ দিলেও, স্বয়ং ইউরোপ আমেরিকার উন্নত দেশগুলোতেও প্রসাধনিতে ব্যাবহার করা রাসায়নিক দ্রব্যের মাত্র ১০% নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা বা গবেষণা হয়েছে। এসব গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা কোন প্রসাধনী বাজারজাত করার অনুমোদন দিয়ে থাকে। কাজেই প্রসাধনী ব্যাবহারে ব্যক্তিগত সচেতন‌‌তা বড় ভুমিকা পালন করে থাকে। প্রতিরোধে করণীয় • ত্বকে চুলকানি, জ্বালাপোড়া, লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি অ্যালার্জির লক্ষন। এগুলো কোন প্রসাধন সামগ্রি ব্যাবহার করার সাথে সাথে বা কিছু দিনের মধ্যেই আচ করা যায়। আঁচ করার সাথে সাথে বন্ধ করে দিন। • তবে দীর্ঘ মেয়াদে যেসব শারিরিক সমস্যার তৈরি করে তা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন না হলে মেকআপ নেয়া থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজন শেষে যত দ্রুত সম্ভব মেকআপ পরিস্কার করুন। • নতুন প্রসাধন সামগ্রী কেনার সময় গায়ে লিখিত উপাদান দেখে নিতে পারেন। ব্যাবহার করার আগে ত্বকের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। • সাবান এবং সুগন্ধি কম ব্যাবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। দৈনন্দিন ব্যবহারে শুষ্ক ত্বক মসৃণ করার জন্য প্রসাধনী কোম্পানির তৈরি সামগ্রী ব্যাবহার না করে, প্রাকৃতিক তেল যেমন অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল ইত্যাদি ব্যাবহার করতে পারেন। লেখকঃ এম আর করিম রেজা জাকার্তা প্রবাসী ত্বক এবং সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ

জিন্নাহর বংশোধর

ওয়াদিয়া গ্রুপ ভারতের সবচেয়ে পুরনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ইরান থেকে আসা পার্সি লোভজি নুসারওয়াঞ্জি ওয়াদিয়া ১৭৩৬ সালে বোম্বে ড্রাইডক কোম্পান...