Saturday, July 8, 2023

দেশের স্বাস্থ্য সেবা রক্ষা করতে দৃষ্টি আকর্ষন

 স


রকারি দলের মহাসচিব, ক্ষমতাধর মন্ত্রী মহোদয় মধ্য রাতে বুকে ব্যাথা নিয়ে #বিএসএমএমইউ জরুরি বিভাগে হাজির হলেন। দায়িত্বরত চিকিৎসক পাঁজরের হাড়ের উপর শক্ত চাপ দিয়ে হৃদযন্ত্র সচল রেখেছেন। সিনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পৌঁছানো পর্যন্ত অপেক্ষা করলে তাঁর মৃত্যু ছিল অবধারিত। পরবর্তীতে তাঁকে চিকিৎসা দিতে প্রতিবেশী দেশের বিশ্বখ্যাত হার্ট সার্জন এসেছিলেন। অবস্থার উন্নতি হলে সেই ক্ষমতাধর রোগী উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে উড়ে যান।

বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্যিক নিউইয়র্কে গেলেন বৃহদান্ত্রের সার্জারি করতে। অপারেশন পরবর্তী জটিলতায় তাঁর পরিপাক নালী ফুটো হয়ে গিয়েছিল। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নামী মানুষ হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপুল অর্থ প্রাপ্তির সম্ভবনা ছিল।

বেসরকারি হাসপাতালের নামী বিশেষজ্ঞ নিজের একটি রোগের রোবটিক সার্জারির জন্য সিঙ্গাপুরের নামীদামী হাসপাতালে গেলেন। অথচ তার নিজের হাসপাতালেই রোবট ছাড়া এই চিকিৎসা অহরহ চলে। বড় রক্তনালী কেটে যাওয়ার কারণে অপারেশন টেবিলেই তার মৃত্যু ঘটে। যে সার্জন রোবট দিয়ে অপারেশন করছিলেন তিনি ও তাঁর দল এই বিষয়ে দক্ষ ছিলেন। তারপরও এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হয় নাই। কোন মামলা হয়নি বা পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। তবে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি মতামত দেন যে 'জটিলতা বা মৃত্যু চিকিৎসার অংশ। তাঁরা এই রোগীর চিকিৎসায় কোন গাফিলতি করেননি, নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন।'

ঘটনা তিনটি স্মরণ করলাম দেশের চিকিৎসাসেবায় বিরাজমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি নিয়ে দুয়েকটি কথা বলাই উদ্দেশ্য। কোন চিকিৎসক স্বেচ্ছায় রোগীর চিকিৎসায় জটিলতা সৃষ্টি করেন না। কোন কোন ক্ষেত্রে দায়িত্বে অবহেলা বা গাফিলতি হতে পারে। সেজন্য বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হয়ে থাকে সভ্য দেশগুলোতে। রোগী বা স্বজন অভিযোগ তুললেই চিকিৎসককে দায়ি করা যৌক্তিক হতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে পুলিশ, মামলা বা আদালত সমাধান দিতে পারে না। কারণ তারা এই বিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখেন না। তবে বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে চিকিৎসককে দায়ি করলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আদালত তার শাস্তির রায় দিতে পারেন।

শুধুমাত্র রোগী বা স্বজনের অভিযোগের ভিত্তিতে কোন চিকিৎসক বা হাসপাতালের মিডিয়া ট্রায়াল এবং পুলিশি হয়রানি এদেশের চিকিৎসক ও রোগী উভয়ের আস্থার সংকট সৃষ্টি করেছে ইতিমধ্যেই। জরুরি চিকিৎসার জন্য অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকি নিয়ে রোগীর জীবন বাঁচাতে হয়। এই অবস্থা চলতে থাকলে জরুরি চিকিৎসাসেবায় দায়িত্বরত চিকিৎসক রোগীর জীবন বাঁচাতে কোন ঝুঁকি নেয়ার উদ্যম হারিয়ে ফেলবেন, উপযুক্ত চিকিৎসা ছাড়াই রোগীর মৃত্যুর ঘটবে তখন। আবার দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আস্থা হারিয়ে সাধারণ চিকিৎসার জন্যও দেশের মানুষ বিদেশে পাড়ি জমাবে আরো বেশি বেশি। রোগীর নিজের অর্থের অপচয় এবং দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার খরচ হবে এজন্য।

এধরনের ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর/মন্ত্রণালয়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ করার বিকল্প নেই। চিকিৎসাসেবা প্রদানে সকল অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব তাদের। তদন্ত কমিটি গঠন করে চিকিৎসায় অবহেলা বা গাফিলতি সহ চিকিৎসা সেবায় বিরাজমান নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য দায়ী সকলের শাস্তি নিশ্চিত করতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর/মন্ত্রণালয়কেই।দেশের সংবাদমাধ্যম, পুলিশ ও আদালত এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগ উঠলেই সংবাদ প্রচার/গ্রেফতার করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সমাজের সকল স্তরের দায়িত্বশীল ভূমিকা বিরাজমান এই সংকট থেকে উত্তরণে সহায়তা করবে।

জিন্নাহর বংশোধর

ওয়াদিয়া গ্রুপ ভারতের সবচেয়ে পুরনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ইরান থেকে আসা পার্সি লোভজি নুসারওয়াঞ্জি ওয়াদিয়া ১৭৩৬ সালে বোম্বে ড্রাইডক কোম্পান...