Wednesday, February 17, 2021

সাইরাস দি গ্রেট

 পার্সিদের কাছে তিনি পিতা এবং ব্যাবিলনীয়দের কাছে মুক্তিদাতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। মানব সভ্যতার ইতিহাসে শাসনব্যবস্থা, সমাজ সংস্কার, মানবাধিকার, রাজনীতি ও বিশ্বাসের ক্ষেত্রে তিনি যে প্রভাব রেখে গিয়েছেন তা পৃথিবীর অন্য কেউ পারেনি। বর্তমান ইরানের জাতিসত্তার ভিত্তি তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

তিনি একমাত্র অ-ইহুদি ব্যক্তিত্ব, যাকে বাইবেলে মেসিয়াহ বা স্রষ্টার প্রতিশ্রুত প্রতিনিধি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মুসলিম ধর্মালম্বীদের কেউ কেউ তাঁকে কোরআন শরীফে বর্ণিত যুল কারনাইন বলে দাবি করে থাকে। তার গুণে মুগ্ধ ছিলেন স্বয়ং #আলেকজান্ডার দি গ্রেট, যিনি নিজের উপরে তাঁকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে স্থান দিয়েছেন। তিনি পারস্যের আকিমেনিড সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন (যেটি ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া হয়ে ভারত উপমহাদেশের সিন্ধু উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল এবং পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য ছিল)। তিনি শুধু একজন যুদ্ধজয়ী বীর ছিলেন না, বরং একজন দক্ষ মহান শাসক হিসেবে স্বীকৃত। কোন রাজ্য বিজয়ের পর সেখানকার প্রজাদের তিনি তাদের নিজেদের ধর্ম ও সংস্কৃতি অনুসরণে পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। প্রজাদের তিনি সন্তানের মতো স্নেহপূর্ণ আচরণ করতেন, যার কারণে তাদের কাছে তিনি পিতা হিসেবে সম্মানিত ছিলেন। ব্যবিলন জয় করে সেখানে আটক ইহুদিদের মুক্ত করে দিয়েছিলেন তিনি। তিনি প্রজাদের প্রতি যে আচরণ করতেন সেটিই ইতিহাসে মানবাধিকারের প্রথম পাঠ হিসেবে United Nations কর্তৃক স্বীকৃত। 

বিশাল সাম্রাজ্য কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ না করে তিনি রাজ্য বিভক্তির মাধ্যমে স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণা পত্র প্রণয়ন সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। তিনিই সর্বপ্রথম পোষ্টাল সার্ভিস প্রবর্তন করেছিলেন। বিজ্ঞান ও স্থাপত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তিনি। #পাসারগেদে নামে পরিকল্পিত রাজধানী গড়ে তুলেছেন, যেটি এখন ইরানে মানবসভ্যতার ঐতিহ্য হিসেবে UNESCO কর্তৃক সংরক্ষিত।

#সাইরাস দি গ্রেট এর জন্মতারিখ ও ধর্ম পরিচয় জানা যায় নি। তিনি পার্সীয়ান সাম্রাজ্যের আনসানে খৃষ্টপূর্ব  ৬০০ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন বলে ধারণা করা হয়। খৃষ্টপূর্ব ৫৫৯ থেকে ৫৩০ সাল পর্যন্ত তিনি আকিমেনিড সম্রাট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


Wednesday, February 10, 2021

ইকথায়োসিস: জানুন এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করুন

ইকথায়োসিস ত্বকের একটি রোগ। এ রোগে ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ, ফাটা আঁশের মতো হয়ে থাকে। গ্রীক শব্দ ‘ইকথাইস’ মানে মাছ। যদিও সবক্ষেত্রে আক্রান্ত ত্বক মাছের আঁশের মতো নাও হতে পারে।

প্রায় ২৫ ধরনের ‘ইকথায়োসিস’  থাকলেও, ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ‘ইকথায়ওসিস ভালগারিস’ নামে জন্মগত রোগ হিসেবে এটি প্রকাশ পায়। জন্মের পর প্রথম বছরেই এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। জন্মগত ত্রুটি ছাড়াও পরবর্তীতে অনেকে এ আক্রান্ত হতে পারেন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বর্ণের ও সব বয়সীরাই এতে আক্রান্ত হতে পারেন।

সাধারণত প্রতি ৩০০ জনে একজন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। ত্বক ছাড়াও  এ রোগের লক্ষণ চোখেও দেখা দিতে পারে। শীত ও শুষ্ক মৌসুমে এই রোগের তীব্রতা বেড়ে যায়। ইকথায়োসিস কোনো মারাত্মক জীবনহানিকর জটিল রোগ নয়। সংক্রামক নয় বলে এই রোগ সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় না।

কিভাবে হয়?

আমাদের ত্বকের কোষগুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়ে থাকে। পুরাতন কোষ ঝরে গিয়ে সেখানে নতুন কোষ জায়গা করে নেয়। কোনো কারণে পুরাতন কোষ ঝরে পড়ার প্রক্রিয়ায় সমস্যা হলে কিংবা খুব দ্রুত নতুন কোষ তৈরি হতে থাকলে এ রোগ দেখা দিয়ে থাকে।

লক্ষণ কি?

এই রোগে সামান্য শুষ্কতা থেকে ত্বক ফেটে যাওয়া, ফোস্কা পরার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। সাধারণত আক্রান্ত ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ, আঁশের মতো হয়ে থাকে। প্রায় সমস্ত শরীরের ত্বকে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেয়ে থাকে। আঁশের রঙ সাদা থেকে গাড় বাদামি হতে পারে। চুলকানি অনুভূত হতে পারে।

চিকিৎসা

এ রোগ থেকে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করা যায় না। তবে নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায়।

* যাদের ক্ষেত্রে লক্ষণ শুধু শুষ্ক ত্বক তারা বিভিন্ন ধরনের ময়েশ্চারাইজারিং লোশান ক্রিম বা গোসলে মেডিকেটেড ওয়েল ব্যবহার করে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। গোসলে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষারীয় মেডিকেটেড সাবান ব্যবহার করতে হবে।

* কী ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হবে তা সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির লক্ষণের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে।ত্বকে ব্যবহারের বিভিন্ন ওষুধের পাশাপাশি অনেক সময় মুখে খাবার ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে।

* আক্রাক্ত রোগীকে সচেতন ও রোগটি সম্পর্কে জানানো দেওয়া এই রোগের চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে থাকে।

জটিলতা

* ত্বকের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে বিধায় এ রোগে আক্রান্তদের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

* ত্বক ফেটে যাওয়ার কারণে দৈনন্দিন জীবনযাপনে চলাফেরায় অসুবিধা হতে পারে।

* ত্বকে সংক্রমণ বা ইনফেকশন হতে পারে।


* চোখ আক্তান্ত হলে দৃষ্টি সমস্যা হতে পারে।


মনে রাখবেন অন্যান্য জন্মগত জটিল রোগের লক্ষণ  হিসেবে বা একই সঙ্গে এ রোগ দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া সোরাইয়াসিস, একজিমা ইত্যাদি রোগেও একই ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এ রোগে আক্রান্তদের নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা জরুরি, যা রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রেখে দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাপনে সাহায্য করবে।


জিন্নাহর বংশোধর

ওয়াদিয়া গ্রুপ ভারতের সবচেয়ে পুরনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ইরান থেকে আসা পার্সি লোভজি নুসারওয়াঞ্জি ওয়াদিয়া ১৭৩৬ সালে বোম্বে ড্রাইডক কোম্পান...