Tuesday, August 20, 2019

ত্বক ফর্সা করার আগে একটু ভাবুন!


প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই অপেক্ষাকৃত গাঁড় বর্ণ বা কালো ত্বকের মানুষের মধ্যে ফর্সা হওয়ার প্রবণতা লক্ষণীয়। আধুনিক যুগের বিশ্বখ্যাত সঙ্গীত তারকা মাইকেল জ্যাকসন ফর্সা এবং সুন্দর হওয়ার প্রচেষ্টায় ধারণাতীত অর্থ এবং সময় নষ্ট করেছেন, যা তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বাহ্যিক সৌন্দর্য বিচারে সাধারণ মানুষের মধ্যে ত্বকের রঙ্গ নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত। গবেষণায় প্রমাণিত যে সৌন্দর্য নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতে থাকা সুস্থ মানুষ ফর্সা হওয়ার চেষ্টা করে থাকে। মজার বিষয় কালো বর্ণের মানুষের চেয়ে মিশ্র বর্ণ বা শ্যামলা বর্ণের মানুষের মধ্যে এই প্রবনতা সবচেয়ে বেশি। উপমহাদেশ এবং দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার মানুষ রঙ্গ ফর্সা করার চেষ্টা করে থাকে সবচেয়ে বেশি। মানুষের এই দুর্বলতাকে পুঁজি করে বিশ্বব্যাপী বিপুল বাণিজ্য চলছে, যার আর্থিক মূল্য ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। বাজারে ত্বক ফর্সা করার প্রসাধনী ক্রিম বা সাবান যেমন রয়েছে, তেমনি বিউটি পার্লার এবং প্রশিক্ষিত চিকিৎসকরাও ত্বক ফর্সা করার জন্য সেবা দিয়ে থাকেন।
কিভাবে কাজ করে
ত্বকে মেলানিন নামে এক ধরনের রঞ্জক থাকে যা ত্বকের বর্ণ নির্ধারণ করে থাকে। মেলানিনের ঘনত্ব যতো বেশি ত্বক ততটাই গাঁড় বর্ণের হয়ে থাকে। প্রসাধনী বা ঔষধ এই মেলানিনের ঘনত্ব এবং উৎপাদন কমিয়ে দেয়, ক্ষেত্র বিশেষে ধ্বংস করে থাকে।
*প্রসাধনী
ক্রিম বা সাবান হিসেবে ত্বক ফর্সা করার অগুনিত প্রসাধনী বাজারে পাওয়া যায়। বিশ্বের নামিদামি কোম্পানি থেকে স্থানীয় অখ্যাত ভেষজ কোম্পানি নানা ধরণের ত্বক ফর্সাকারি প্রসাধনী প্রস্তত করে থাকে। এসব প্রসাধনীতে কজোয়িক এসিড, আলফা হাইড্রোক্সি এসিড, গ্লুটাথিয়ন, মারকারি, হাইড্রোকুইনন, ইত্যাদি রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন এসব প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহারে ত্বক অপেক্ষাকৃত ফর্শা করতে সাহায্য করে থাকে।
*বিউটি পার্লার
প্রশিক্ষিত বিউটিসিয়ানদের ফেসিয়াল ক্লিন্সিং করার জন্য ৫% এর নীচে গ্লাইকোলিক বা স্যালেসাইলিক এসিড ব্যবহার করার অনুমতি দেয়া হয়ে থাকে। এরচেয়ে বেশি ঘনত্বে শুধুমাত্র চিকিৎসকরাই প্রয়োগ করতে পারেন।
*চিকিৎসক
ত্বকের দাগ বা রোগের কারনে সৃষ্ট গাঁড় রঙ্গ দূর করতে সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞরা রোগীর অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন ঘনত্বের গ্লাইকোলিক বা স্যিলেসাইলিক এসিড পিলিং এবং লেসার চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। আধুনিক সময়ে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধির নামে উল্লেখিত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করেই ত্বক ফর্সা করা হয়ে থাকে। নিয়মিত ব্যবহার করার জন্য ক্রিম বা জেলও চিকিৎসক প্রেসক্রিপশন করে থাকেন।
জটিলতা
নানাবিধ অনাকাঙ্ক্ষিত জতিলতার কারনে বিভিন্ন দেশে এসব ত্বক ফর্সাকারি প্রসাধন সামগ্রীর উপর নিয়ন্ত্রন আরোপ করা হয়েছে। প্রসাধনীর গায়ে সম্ভাব্য ঝুঁকি উল্লেখ করে সাবধান বানী দেয়া থাকে। প্রসাধনিতে থাকা মারকারি ত্বকের অসাড়তা থেকে উচ্চ রক্তচাপ, স্নায়ু রোগ বা কিডনি নষ্ট করার মতো নানাবিধ স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারন হতে পারে। ত্বকের প্রদাহ বা ডারমাটাইটিস সৃষ্টি করতে পারে। আক্রান্তদের ব্রন বাড়িয়ে দেয়, বা নতুন ব্রন তৈরি করে থাকে। ত্বকের রঙ্গের ভিন্নতার কারনে ছোপ ছোপ গাঁড় দাগের উদ্ভব হতে পারে।
সাবধানতা
ত্বকের বর্ণ নিয়ে হীনমন্যতা দূর করুন, নিজের ত্বকের রঙ্গ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে সাইকোথেরাপি নিন। ত্বক ফর্সাকারি প্রসাধনী ব্যাবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সম্ভাব্য ঝুঁকি সমন্ধে জানুন। প্রসাধনী কেনার আগে গায়ে লেখা উপাদান এবং সতর্কতা ভালো করে দেখে নিন।
ডাঃ এম আর করিম রেজা
জাকার্তা প্রবাসী ত্বক ও সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ

জিন্নাহর বংশোধর

ওয়াদিয়া গ্রুপ ভারতের সবচেয়ে পুরনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ইরান থেকে আসা পার্সি লোভজি নুসারওয়াঞ্জি ওয়াদিয়া ১৭৩৬ সালে বোম্বে ড্রাইডক কোম্পান...