🩺আস্ত্রোপচারের পর ক্ষত সারানোর জন্য চিকিৎসকরা এখন পর্যন্ত সেলাই ও স্ট্যাপলারই প্রধান পদ্ধতি হিসেবে প্রয়োগ করছেন। কিন্তু এই পদ্ধতিগুলোতে অনেক সময় জটিলতা দেখা দেয়, বিশেষ করে ভেজা বা রক্তাক্ত টিস্যুর ক্ষেত্রে। এমআইটির গবেষণায় উদ্ভাবিত শরীরবান্ধব গ্লু (আঠা) এই সমস্যা দূর করতে পারে এবং দ্রুত ও নিরাপদে ক্ষত সারাতে সুযোগ করে দিয়েছে।
🔬 গবেষণার শুরু: MIT-এর ভূমিকা
এই প্রযুক্তির কাজ শুরু হয়েছিল MIT-র একটি পিএইচডি গবেষণা প্রকল্প হিসেবে। শূকর ও ইঁদুরের হৃদযন্ত্রে ছোট ছিদ্র বন্ধ করার পরীক্ষামূলক কাজ সফল হওয়ার পর, এই গবেষণাটি দ্রুত আগ্রসর হয়।
২০১৩ সালে MIT থেকে আলাদা হয়ে ‘টিসিয়াম’ নামে একটি কোম্পানি গড়ে ওঠে, যা প্রযুক্তিকে বাণিজ্যিকভাবে উন্নত করছে।
💡 গ্লুর বিশেষত্ব: দ্রুত সংযোগ ও জলের মধ্যেও কার্যকরী
এই গ্লুর অন্যতম বড় বৈশিষ্ট্য হলো—মাত্র ৩০ সেকেন্ডের জন্য নীল আলো দেওয়ার মাধ্যমে এটি ভেজা টিস্যুর সঙ্গে শক্তভাবে আটকে যায়। ফলে জটিল ও রক্তাক্ত পরিবেশেও সহজে ক্ষত বন্ধ করা সম্ভব হয়। গ্লুটি শরীরের সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় এলার্জি বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা কম।
🧩 ‘কপটিয়াম কানেক্ট’: স্নায়ু সারানোর এক যুগান্তকারী পণ্য
টিসিয়াম কোম্পানি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ‘কপটিয়াম কানেক্ট’ নামে একটি পণ্য তৈরি করেছে, যা আঙুল ও পায়ের পাতার স্নায়ু সারাতে ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে থ্রিডি প্রিন্টেড একটি আবরণ এবং আলো সক্রিয় পলিমার ব্যবহার করা হয়। গ্লু নীল আলোতে সক্রিয় হয়ে দ্রুত স্নায়ুর দুই প্রান্তের মধ্যে শক্তিশালী সংযোগ তৈরি করে, যা পরে ধীরে ধীরে গলে যায়।
🏥 সফল ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও FDA অনুমোদন
১২ জন রোগীর ওপর ‘কপটিয়াম কানেক্ট’ প্রয়োগ করে সফল ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে সবাই স্বাভাবিক গতিশীলতা ফিরে পেয়েছেন। তুলনায় সাধারণ সেলাই পদ্ধতিতে মাত্র ৫৪% রোগী এই সুফল পেয়েছেন। এর ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের FDA কপটিয়াম কানেক্টকে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।
🚀 ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সম্ভাবনা
টিসিয়াম এই গ্লুর ওপর ভিত্তি করে আরও ছয়টি নতুন পণ্য তৈরি করছে, যার মধ্যে হার্নিয়া রিপেয়ার সিস্টেম ও হৃদযন্ত্রের ভাসকুলার সিল্যান্ট অন্যতম।
🌟 প্রাকৃতিক অনুপ্রেরণা ও আধুনিক প্রযুক্তির মেলবন্ধনে তৈরি এই শরীরবান্ধব গ্লু চিকিৎসাক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। এটি রোগীদের আরোগ্য দ্রুততর করবে, চিকিৎসকদের কাজ সহজ করবে এবং ভবিষ্যতে আরও নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির পথ সুগম করবে।
#MRKR
No comments:
Post a Comment