🌡️বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় প্রতিবছরই অ্যানথ্রাক্স রোগ দেখা দেয় । এবছর ইতিমধ্যেই কয়েকটি এলাকায় এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে সৃষ্ট একটি গুরুতর এবং সংক্রামক রোগ হলো অ্যানথ্রাক্স। মূলত গবাদিপশু ও অন্যান্য তৃণভোজী প্রাণীদের আক্রান্ত করে এটি। এসব প্রাণী থেকে মানবদেহেও অ্যানথ্রাক্স সংক্রমিত হতে পারে। বিশেষভাবে শ্বাসযন্ত্রের অ্যানথ্রাক্স হলে, চিকিৎসা সত্ত্বেও মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
🦠🔬 কেন হয়?
অ্যানথ্রাক্সের কারণ হলো ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস নামে একটি ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়ার বিশেষত্ব হলো এটি স্পোর বা রেণু তৈরি করতে পারে, যা পরিবেশে বহু বছর ধরে টিকে থাকতে পারে। রোগটি প্রধানত গৃহপালিত এবং বন্য তৃণভোজী প্রাণী যেমন গরু, ছাগল, ভেড়া এবং ঘোড়ার মধ্যে ঘটে। মানুষের মধ্যে সংক্রমণ সাধারণত প্রাণী থেকে আসে; মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ খুবই বিরল। তবে সংক্রমিত পোশাক বা শরীর জীবাণু বহন করতে পারে।
🌾🐄 সংক্রমণের কারণ-
👉সংক্রমিত প্রাণীর সংস্পর্শে: মানুষ অসুস্থ প্রাণীর সরাসরি সংস্পর্শে এলে বা তাদের থেকে তৈরি পণ্য যেমন চামড়া ব্যবহার করলে সংক্রমিত হতে পারে।
👉সংক্রমিত প্রাণীর রক্ত, মাংস, শ্লেষ্মা বা নাড়িভুঁড়ির সংস্পর্শে আসা: এই সংস্পর্শও মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের কারণ হতে পারে।
👉শ্বাস বা খাদ্যনালীর মাধ্যমে: মানুষের শরীরে ব্যাকটেরিয়ার স্পোর শ্বাস-প্রশ্বাস বা খাদ্যনালীর মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারে।
🤒🩺 রোগের লক্ষণ 🩺🤒
ত্বকে প্রথমে পোকার কামড়ের মতো একটি চুলকানিযুক্ত লালচে ফোলা দেখা দেয়, যা পরবর্তীতে একটি ব্যথাহীন, কালো কেন্দ্রের ফোঁড়ায় পরিণত হয়। এই কালো ফোঁড়াটিকে এসচার বলা হয় এবং এটিই অ্যানথ্রাক্সের সবচেয়ে পরিচিত বৈশিষ্ট্য। ত্বকের এই ক্ষত বা ফোড়া সাধারণত লিম্ফ নোড ফোলা (lump) সাথে থাকতে পারে।
এছাড়াও জ্বর, ক্লান্তি ও দুর্বলতা, মাথাব্যথা অনূভুত হয়।সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে শরীরের বিভিন্ন টিস্যুর ক্ষতি, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে শ্বাসকষ্ট ও শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা এবং গুরুতর ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে
💉🛡️ প্রতিরোধ🛡️💉
🔸ভ্যাকসিন: অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যকর।
🔸সংক্রমণের উৎস এড়িয়ে চলা: সংক্রমণের সম্ভাব্য উৎস থেকে দূরে থাকা জরুরি।
🔸পরিচ্ছন্নতা: সংক্রমিত পশুর সংস্পর্শে এলে সাবান এবং জীবাণুনাশক দিয়ে ত্বক ও পোশাক ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
💊🏥 চিকিৎসা🏥💊
অ্যানথ্রাক্স চিকিৎসায় মুখে খাবার অ্যান্টিবায়োটিক যেমন সিপ্রোফ্লক্সাসিন বা ডক্সিসাইক্লিন ব্যবহৃত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা শুরু করলে রোগের ক্ষতিকারক প্রভাব অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
🛡️🌿অ্যানথ্রাক্স একটি প্রতিরোধযোগ্য ও চিকিৎসাযোগ্য রোগ, তবে সংক্রমণ রোধে সচেতনতা, নিরাপদ পরিচর্যা এবং দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
#MRKR
No comments:
Post a Comment