Saturday, May 10, 2025

হিট স্ট্রোক (Heat stroke)

সারাদেশে তীব্র তাপদাহ চলছে। প্রচন্ডে গরমে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে হিট স্ট্রোকে আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। শিশু, বয়স্ক, নারী পুরুষ নির্বিশেষে যে কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন তবে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি।

👉হিট স্ট্রোক (heat stroke) কি

এটি এমন একটি শারীরিক অবস্থা, যেখানে শরীর অতিরিক্ত তাপে উত্তপ্ত হয়ে স্বাভাবিক তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং শরীর আর ঘাম দিয়ে তাপ ছাড়তে পারে না। শরীরের তাপমাত্রা ১০৪°F (৪০°C) বা তার বেশি উঠলে এটি ঘটে। এতে মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড, কিডনি এবং পেশিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।



👉কি কারণে হয়

•সূর্যের প্রচণ্ড তাপ বা গরম আবহাওয়ায় দীর্ঘক্ষণ থাকা

•ভারী কাজ বা ব্যায়ামের কারণে শরীরের অতিরিক্ত উত্তাপ

•গরম পরিবেশে পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন)


👉কিভাবে হয়

•ঘর্মগ্রন্থি (sweat gland) শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘাম তৈরি করে। ঘাম বেরিয়ে শরীর ঠান্ডা করে। গরমে ঘাম দিয়ে প্রচুর পানি হারায়। পানি ও ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি তৈরি হয়। এতে ঘর্মগ্রন্থি দ্রুত শুকিয়ে যেতে থাকে এবং ঘাম উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ঘাম না হওয়ায় তাপ বের হতে পারে না।

•মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। হিট স্ট্রোকে এটি নিজেই অকার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে শরীর ঘাম তৈরি করার সংকেত দিতে ব্যর্থ হয়।

•অতিরিক্ত গরমে রক্তচাপ ও রক্তসঞ্চালন ব্যাহত হওয়ায় ঘর্মগ্রন্থিতে পর্যাপ্ত রক্ত পৌঁছায় না। ফলে ঘাম তৈরি হয় না।


এসব কারণে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকে (১০৪°F বা তার বেশি)। ফলে মস্তিষ্ক, কিডনি, যকৃত ও হৃদপিণ্ড ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি ও এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।


👉 লক্ষণ কি

√শরীরের তাপমাত্রা ১০৪°F বা তার বেশি

√ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া

√ত্বক লাল, গরম ও শুকনো হয়ে যাওয়া

√বিভ্রান্তি, অসংলগ্ন কথা বলা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

√নাড়ি (pulse) দ্রুত চলেএবং দুর্বল হয়ে পড়ে

√শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির মতো উপসর্গ

√মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব বা বমি, খিঁচুনি


👉 করণীয় 

√তাৎক্ষণিকভাবে ছায়া বা শীতল স্থানে নিয়ে যেতে হবে

√জামাকাপড় ঢিলা করুন বা খুলে দিন

√ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর স্পঞ্জ করে দিন বা ঠান্ডা কাপড় পেঁচিয়ে দিন

√পাখা দিয়ে বাতাস দিন, প্রয়োজনে বরফের থলি ব্যবহার করুন

√জ্ঞান থাকলে ধীরে ধীরে পানি পান করান (অজ্ঞান হলে কিছু খাওয়াবেন না)

√দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান — সময় নষ্ট করা বিপজ্জনক হতে পারে।

👉প্রতিরোধ

√প্রচণ্ড রোদে বা গরমে দীর্ঘক্ষণ না থাকা

√ঢিলেঢালা, হালকা রঙের ও সুতি কাপড় পরা

√প্রচুর পানি পান করা ও ডিহাইড্রেশন এড়ানো

√গরম আবহাওয়ায় ব্যায়াম বা ভারী কাজ না করা

√রোদে ছাতা বা টুপি ব্যবহার করা

√পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ছায়াযুক্ত স্থানে থাকা

√শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থদের যত্ন নেয়া

√বাইরে গেলে সানস্ক্রিন ও সানগ্লাস ব্যবহার

No comments:

সৌন্দর্য ধরে রাখার ইঞ্জেকশন—প্রভাব, অপব্যবহার ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশ্ন!

 ✅ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের ত্বকে বয়সের ছাপ খুঁজে পেয়ে আতঙ্কে ভোগেন। আবার অনেকে নিজের বাহ্যিক অবয়বে সন্তুষ্ট না হয়ে সৌন্দর্য  খুঁজে ব...